বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
জিতেনই ভরসা সিপিএমের * তিনবছরে দলে নতুন মুখ এক!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- ত্রিপুরা সিপিএমের দ্বিতীয়বার রাজ্য সম্পাদক হলেন জিতেন চৌধুরী। শুক্রবার সিপিএম রাজ্য কমিটির ২৪ তম রাজ্য সম্মেলন সমাপ্ত হল আগরতলার টাউন হলে। ৪১৪ জন প্রতিনিধির সর্বসম্মতিতে রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হলেন জিতেনবাবু। ৬১ জনের রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখ একটি, বাদ গেলেন ১৪ জন।২৪তম রাজ্য সম্মেলনে রাজ্য কমিটির গড়ার ক্ষেত্রে পার্টি কংগ্রেসের ৭৫ বছর ঊর্ধ্বসীমা নিয়মের মান্যতা প্রদান হয়। ফলে রাজ্য কমিটি থেকে স্থায়ী এবং আমন্ত্রিত সদস্য মিলিয়ে ১৪ জন ছিটকে যান। অন্যতম পবিত্র কর, নারায়ণ কর, বাদল চৌধুরী, সুব্রত চক্রবর্তী প্রমুখ। রাজ্য কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে পবিত্র কর এবং নারায়ণ কর থাকছেন। ১৪ জন প্রতিনিধি নিয়ে রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলী গঠন করেছে সিপিএম। রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীতে নতুন এলেন শংকর প্রসাদ দত্ত এবং রতন সাহা। রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখ দিলীপ দত্ত। রাজ্য কমিটিতে স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে ৮
জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজাতি যুব সংগঠনের যুবকদেরও কমিটিতে আনা হয়।৭৫ বছরের বয়সসীমা নীতি পার্টি কংগ্রেস ও সিপিএম পলিটব্যুরো নীতিমালা মোতাবেক মানিক সরকারের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়নি। যেহেতু তিনি ত্রিপুরা থেকে পলিটব্যুরোর একমাত্র সদস্য। আবার রাজ্য সম্পাদক জিতেনবাবু সহ রাজ্য কমিটির সকল স্তরের সদস্যরা মানিক বাবুকে রাজ্য কমিটিতে রাখার দাবিও জানিয়েছিলেন পলিটব্যুরোতে। শেষ পর্যন্ত মানিক বাবুকে রাজ্য কমিটিতে রাখার অনুমতি দেয় পলিটব্যুরো। যদিও মানিকবাবু রাজ্য কমিটি থেকেও অব্যাহতি চেয়েছিলেন। সম্মেলনশেষে রাজ্য দপ্তরের মানিক দে, শংকর প্রসাদ দত্ত, রতন ভৌমিককে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই বললেন জিতেন চৌধুরী।এদিনও জিতেনবাবু বিজেপি জোট সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তার অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। একজন স্কুল শিক্ষক বিজেপির রাজ্য দপ্তরে বসে মিথ্যাচারে ব্যস্ত। স্কুলে পাঠদানের জন্য তার কাছে সময় নেই। আবার রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বেতন নিচ্ছেন। এর জন্যই রাজ্যের শিক্ষা লাটে উঠেছে। এর আগে বামফ্রন্ট সরকার এবং বিজেপি সরকারেরও তো মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তাদের সময়ে কখনও দলের রাজ্য দপ্তরে স্কুল ফাঁকি দিয়ে একজন স্নকারী শিক্ষককে সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যাচার করতে দেখা যায়নি। এতেই প্রমাণিত রাজ্যে সরকারটা কীভাবে চলছে।জিতেন চৌধুরীর অভিযোগ, অর্থ কমিশনে কী চাইতে হবে, রাজ্য সরকারের ভূমিকা কী হবে, কীসে রাজ্যবাসীর সর্বক্ষেত্রে সমস্যার নিরসন হয়। জেলা পরিষদে কিভাবে উন্নয়ন হবে, বিষয়গুলির মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য সরকারের উপলব্ধি ও ভূমিকা কী-এ নিয়ে সন্দিহান রাজ্যের মানুষ। অভিজ্ঞতা না থাকলে যা হয়।
তাঁর দাবি, বিজেপি সরকার আগরতলা বিমান বন্দর নিয়ে যে মিথ্যাচার করছে – তা দেখে রাজ্যবাসী হাসছেন। এই বিমানবন্দরের জন্য ৭৮ একর জায়গা প্রদান সহ ২০১৭ সালেই বিমানবন্দরের কাজ শুরু হয়। এমনকী এই জমিতে যারা ছিলেন তাদের পুনর্বাসন বাবদও ৩৬ কোটি টাকা দিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার। রাজ্যের সবগুলি জাতীয় সড়কের অনুমোদনও বামফ্রন্ট সরকারের সময় প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিজেপি সরকারের নতুন প্রকল্প কোথায়? তার অভিযোগ, রাজ্যে একটি কমিশনের সরকার ক্ষমতায় বসে রয়েছে।জিতেনবাবু বলেন, বিজেপি দাবি ব্যর্থ হলেও ষোড়শ অর্থ কমিশনের সঙ্গে
দেখা করে কেন্দ্রীয় করের ৫০ শতাংশ রাজ্যগুলোকে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সিপিএম। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন কেন্দ্রীয় করের ৪১ শতাংশ রাজ্যগুলোকে দিচ্ছিল। সেটা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার দাবি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় করের
অংশ এবং রাজ্যের নিজস্ব আয়ের পর ঘাটতি যা থাকবে সেটা গ্যাপগ্র্যান্ট হিসেবে নেওয়ার দাবি করেছে সিপিএম। অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা, রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশনের সুযোগসুবিধা প্রদানের জন্যও অর্থ চেয়েছে পার্টি। দাবি করেছে অষ্টম বেতন কমিশনে একই সঙ্গে এডিসির হাতে সরাসরি অর্থ দিতে হবে। রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা সহ এনডিআরএফ ফাণ্ড ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি করার দাবি করেছে সিপিএম। বিজেপি সরকার উপজাতি দরদের প্রচারে ব্যস্ত থাকলেও বাস্তব হল। এডিসিকে সরকারী অর্থ প্রদানের দাবিই করলেন না এই সরকার। জানালেন জিতেন চৌধুরী। উল্লেখ্য, ২৪তম রাজ্য সম্মেলনে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত-বৃন্দা কারাত, অশোক ধাওয়ালে, সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দে, অরুণ কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।