জিতেন্দ্রবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা জবাব দিলেন রতন নাথ!!.
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে এমজিএন রেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের সাফল্যের তথ্য উত্থাপন করে সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন রাজ্যের কৃষি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই কৃষিমন্ত্রী শ্রীনাথ রেগার সাফল্য রাজ্যবাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন।কিন্তু কৃষিমন্ত্রীর সেই সাংবাদিক সম্মেলন এবং রেগা প্রকল্প রূপায়ণে মন্ত্রীর দেওয়া যাবতীয় তথ্য অসত্য, মনগড়া বানানো বলে দাবি করেন সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র চৌধুরী।
মঙ্গলবার ফের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মহাকরণে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করে জিতেন্দ্র চৌধুরীকে রীতিমতো তুলোধুনো করেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ।তিনি জিতেন্দ্র চৌধুরীকে রেগা ইস্যুতে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে
বলেন,জিতেন্দ্রবাবুর সৎসাহস থাকলে একসাথে বসে এ ব্যাপারে আলোচনা করুন।তিনি দীর্ঘ সময় রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন।সাংসদ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।তার মতো একজন ব্যক্তি কি করে এমন কথা বলেন?এখন তো দেখছি জিতেন্দ্রবাবুর সাধারণ জ্ঞান পর্যন্ত নেই।কোনও কিছু না জেনে একটি দলের রাজ্য সম্পাদকের এমন বক্তব্য দুঃখজনক।মস্তিষ্ক বিকৃতি হলে এসব কথা বলতে পারেন।এতে আমার কোনও বক্তব্য নেই।এভাবেই মঙ্গলবার জিতেন্দ্র চৌধুরীকে নিশানা করেন রতনলাল নাথ।
রতনবাবু বলেন,রেগা প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্যের শেয়ার থাকে।কেন্দ্র দেয় ৭৫ শতাংশ অর্থ এবং রাজ্য দেয় ২৫ শতাংশ অর্থ।আমি – দুটো মিলিয়েই বলেছি।এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে আরডি দপ্তরের দুই শীর্ষ আধিকারিককে পাশে বসিয়ে একেবারে তথ্য উত্থাপন করে জিতেন্দ্র চৌধুরীকে পাল্টা জবাব দেন তিনি।জিতেন্দ্র বাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন রতনবাবু মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের রেগা প্রকল্পের পুরো চিত্র তুলে ধরেন।তিনি বলেন, মুন্সিয়াকামী ব্লকে ১৪টি ভিলেজ কাউন্সিলরয়েছে।৯৯ শতাংশ জনজাতি অধ্যুষিত এই ব্লক।যে কোনও ব্লকে বা
গাঁওসভাতে কত কাজ হয়েছে?তার সম তথ্য রয়েছে। এই ব্লকের হলুদিয়া ভিলেজ কাউন্সিল এলাকায় সন্তান বিক্রি নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ভিলেজ কাউন্সিলে কাজ হয়েছে ১০০.৬৯ শতাংশ। এই ভিলেজে ২৭৬ পরিবার ১০০ দিন কাজ পেয়েছে।১৫০ দিন, ১৪৯ দিন করে কাজ পেয়েছে এমন পরিবারও আছে।এই ভিলেজে ৫৮০ জন জব কার্ড হোল্ডার আছেন, এর মধ্যে ৫৭৪টি কার্ড সক্রিয় আছে। অর্থাৎ এরা কাজ চান। ৩০৯ পরিবারের রেশন কার্ড প্রায়োরিটি গ্রুপের।এরা ৫ কেজি করে ফ্রি চাল পায়। ১০০ পরিবারের অন্ত্যোদয় যোজনার কার্ড রয়েছে।এরা দুই টাকা করে ৩৫ কেজি চাল পান।এপিএল পরিবার রয়েছে ১৮টি।ওই ভিলেজে খুকেন দেববর্মা নামে যে ব্যক্তি তাঁর কন্যা সন্তান বিক্রি করে বলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই খুকেন দেববর্মা উক্ত ভিলেজের বাসিন্দা রবরং দেববর্মার জায়গায় থাকে।রবরং দেববর্মাও আজকে পর্যন্ত ১৮ দিন কাজ পেয়েছেন।মন্ত্রী আজ বলেন, সন্তান বিক্রি নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।তবে প্রাথমিকভাবে যে রিপোর্ট এসেছে তাতে অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি হয়েছে, বিষয়টা এমন নয়।করবুকের রঞ্জিত ত্রিপুরা নামে একজন দীনমজুর তিনি এই কন্যা সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। যদিও, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে খুকেন দেববর্মার পরিবারের আরওআর, পিজি রেশন কার্ড ইত্যাদি তুলে দেওয়া হয়েছে।তাঁর পরিবারের অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করার কাজ চলছে।যেমন আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট,জব কার্ড শীঘ্রই তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে।মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই হলুদিয়া ভিলেজে ২৮৩ পরিবারে পাকা ঘর দেওয়া হয়েছে।২৩৩ পরিবারে পাইপে জলের লাইন দেওয়া হয়েছে। জিতেন্দ্র বাবুরা তো একটানা পঁচিশ বছর রাজত্ব করেছেন। এমন কাজ করলেন না কেন? মন্ত্রী বলেন,শুধু হলুদিয়া ভিলেজেই নয়, ঙ্গিয়াকামী ব্লকের অন্য ভিলেজগুলির মধ্যে যেমন রামকৃষ্ণপুর ১১৪.৫৭ শতাংশ,তুইকর্ম ১০৮.৬৬ শতাংশ, নোনাছড়া ভিলেজে ১১১.০১ শতাংশ, নাকড়াছড়া ভিলেজে ১০১.৭১ শতাংশ, দক্ষিণ মহারাণী ১০০.৮৪ শতাংশ, ক্ষিণ গকুলনগর ভিলেজে ৭৭.৯৪ শতাংশ, আঠারোমুড়া ভিলেজে ৭৮.৪৩ শতাংশ, মহারাণীপুর ভিলেজে ৮৪.২৫ শতাংশ, মানিক দেববর্মা ভিলেজে ৭৬.৪১ শতাংশ, নবজয়বাড়ি ভিলেজে ৮৫.৮৩ শতাংশ, পূর্ব লক্ষ্মীপুর ভিলেজে ৮৮.২২ শতাংশ, শ্রীরামঘড়া ভিলেজে ৮০.১৫ শতাংশ এবং উত্তর গকুলনগর
ভিলেজে ৭৯.০৩ শতাংশ রেগার কাজ হয়েছে। এমআইএস পোর্টালে গিয়ে জিতেন্দ্রবাবুকে দেখে নেওয়ার জন্য বলেন রতনবাবু।