জিবির ট্রমা সেন্টারে সিনিয়র চিকিৎসকদের সংকট বাড়ছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-রাজ্যের
প্রধান সরকারী রেফারেল হাসপাতাল জিবির ট্রমা কেয়ার সেন্টারের পরিকাঠামো আরও উন্নত ও সম্প্রসারণের দাবি উঠেছে।ট্রমা কেয়ার সেন্টারে মূলত ঘটনা-দুর্ঘটনায় গুরুতর ও আশঙ্কাজনক আহত ব্যক্তিরাই চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু ট্রমা কেয়ার সেন্টার চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকছেন না।এমবিবিএস ইনটার্ন এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্সে পাঠরত জুনিয়র চিকিৎসকরাই ট্রমা কেয়ার সেন্টারে মূলত চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন। ট্রমা কেয়ার সেন্টারের মতো চিকিৎসা পরিষেবার এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিনিয়র চিকিৎসকর সর্বক্ষণ উপস্থিত না থাকায় ক্ষুব্ধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সবসময়ই প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনায় গুরুতর, অতিগুরুতর ও আশঙ্কাজনক সব রোগী আসছেন। তাদের দ্রুত জীবনদায়ী চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হয়। সেই ক্ষেত্রে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রোগীকে
আপৎকালীন দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য শল্য, অস্থি নিউরো, চক্ষু, দন্ত এই সব বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ২৪ ঘন্টা থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের প্রধান সরকারী হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রোগীরা এই সুবিধা পাচ্ছেন না বলে সব সময় রোগীরা অভিযোগ করছেন। জুনিয়র চিকিৎসক দিয়ে বকলমে স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু রেখেছে বলে খোদ হাসপাতালের চিকিৎসক মহলেই এই অভিযোগ। তা না হলে সিনিয়র চিকিৎসকরা কেন থাকছেন-প্রশ্ন উঠেছে। ট্রমা সেন্টারে প্রতি শিফটে একসঙ্গে ন্যূনতম ছয় থেকে আটজন চিকিৎসক থাকার কথা। এর মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক সিনিয়র চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু ট্রমা কেয়ার সেন্টারে প্রতি শিফটে মাত্র তিন-চার জন জুনিয়র চিকিৎসক উপস্থিত থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পুরো সামাল দিচ্ছেন। রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজন রোগীর যে শারীরিক অবস্থা তাতে সিনিয়র তথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ভীষণ অভাববোধ করছেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে সিনিয়র (বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসকরা রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা দেন তা নিয়ে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের আপত্তি নেই। কিন্তু রোগীকে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে আনার পর থেকে শুরু করে সর্বক্ষণ সিনিয়র চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে জুনিয়র শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরাই রোগীর পরিষেবা দেবেন তা কী করে সম্ভব হচ্ছে তা নিয়ে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের দাবি, জুনিয়র চিকিৎসকের পাশাপাশি সিনিয়র (বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসকরাও একসঙ্গে উপস্থিত থেকে রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা দিন। তা না হলে রোগীর সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয় বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ। স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এদিকে কোন নজর না দেওয়ায় সিনিয়র চিকিৎসকরা ট্রমা কেয়ার সেন্টারে অনুপস্থিত থাকতে সহজ হচ্ছে বলেও অভিযোগ। অনকলে সিনিয়র চিকিৎসক ডেকে আনার রেওয়াজ চালু থাকায় অনেক বিলম্বে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে সিনিয়র চিকিৎসকরা আসছেন বলে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।এদিকে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধই রোগীর আত্মীয়কে ওষুধের দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে বলে সব সময়ই অভিযোগ করছেন।ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী, তুলা, ব্যাণ্ডেজ কেন রোগীর আত্মীয়কে কিনে আনতে হচ্ছে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন সেই প্রশ্নও তুলেছেন। আরও বিস্ময়ের ব্যাপার হল হাসপাতালের খাতায় ও সরকারী তথ্যে রোগীরা ওষুধপত্র, চিকিৎসা সামগ্রী, তুলা, ব্যাণ্ডেজ সবই বিনামূল্যে হাসপাতাল থেকে পাচ্ছেন বলে দেখানো হচ্ছে।এদিকে হাসপাতালে আইসিইউ’র অভাব ও স্বল্পতার ট্রমা কেয়ার সেন্টারের সংকটাপন্ন রোগীরা আরও সংকটে পড়ছেন।