জিবির ডায়ালিসিস নিয়ে কিডনি রোগীর ভোগান্তি বাড়ছে, ক্ষোভ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবির বেহাল ডায়ালিসিস চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কিডনি রোগীর ভোগান্তির শেষ নেই।গত অগাস্ট মাসের শুরুতে সরকারি পরিষেবা বাদ দিয়ে বেসরকারি একটি সংস্থার হাতে ডায়ালোসিস করানোর দায়িত্ব পুরো তুলে দেন।বেসরকারি সংস্থার রোগীর ডায়ালিসিস রাজ্য সরকার থেকে টাকা নিচ্ছে রোগীর অভিযোগ,বেসরকারি সংস্থা অযত্ন অবহেলা ও অবহেলায় ও উদাসীনতা ভাবে কিডনি রোগীর ডাইলোসিস এর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বেসরকারি সংস্থায়াটির সুষ্ঠু ও চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্মতভাবে রোগের ডায়ালিসিস করানোর বিষয়ে কাজে ফাঁকি ও অবহেলা করে চলছে বলে রোগীর অভিযোগ।
কিডনি রোগের ডায়ালিসিস করণার জন্য হাতে ফিসচুলা চ্যানেল থাকে। কোনওকোনও রোগীর আবার বুকেও এই চ্যানেল থাকে।কিন্তু রোগীর অভিযোগ হলো বেসরকারী সংস্থার যে সব কর্মী দিয়ে ডায়ালিসিস করানোর কাজ করা হচ্ছে তারা এই কাজে অদক্ষ।ভালোভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। আনকোরা।আর সেই কারণে ডায়ালিসিসের সময় ফিসচুলা চ্যানেলের ব্যবহার সঠিকভাবে না জানায় চ্যানেলগুলির ক্ষতি হচ্ছে বলে রোগীর অভিযোগ। তাতে চ্যানেলগুলি বন্ধ হয়ে যাবে বলেও রোগীরা অভিযোগ করছেন।ক্ষুব্ধ রোগীদের বক্তব্য, এই ব্যাপারে হাসপাতাল মেডিকেল সুপারকেও জানানো হয়েছে।মেডিকেল সুপার নাকি তাদের জানান, বেসরকারী সংস্থার কাজের ব্যাপারে দেখার দায়িত্ব তার নয়।ফলে কিডনির রোগীরা পড়েছেন গভীর বিপাকে। এদিকে আবার জিবিতে নতুন করে কিডনি রোগীরা ফিসচুলা চ্যানেলও করাতে পারছেন না।রাজ্যের প্রধান হাসপাতালে ফিসচুলা চ্যানেল করানোরও পরিকাঠামো নেই।বহিঃরাজ্যে বা বেসরকারী হাসপাতাল থেকে বহু টাকা খরচ করে ফিসচুলা করিয়ে আনতে হচ্ছে।রোগীর আরও অভিযোগ,
ডায়ালিসিস ইউনিটে রোগীর মৃত্যু নিয়েও।শুধু বেসরকারী সংস্থার বিরুদ্ধে গাফিলতির আঙুল তোলা এখানেই শেষ নয়,ডায়ালিসিস করানোর পর রোগীকে অতিরিক্ত অনেকটা সময় শরীরে নল নিয়ে শয্যায় শুয়ে থাকতে হচ্ছে।বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত কর্মীরা রোগীর শরীর থেকে নল খুলতে গড়িমসি করায় রোগীরা এই সমস্যায় পড়েছেন।কোনও ডাক্তারেরও দেখা পান না রোগীরা ডায়ালিসিস ইউনিটে।ফলে বেসরকারী সংস্থার হাতে রাজ্য সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে ডায়ালিসিসে দায়িত্ব দেওয়া রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা সরকারের সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছেন।মেডিসিন ভবনের এই ডায়ালিসিস ইউনিটে ২৪টি শয্যা রয়েছে।সব সময় ডায়ালিসিস করানোর জন্য রোগীর ভিড় লেগেই থাকছে। দিন দিন রোগীর ভিড় কেবল বাড়ছেই।রোগীর ভিড় সামলাতে দিবারাত্রি মিলে ২৪ ঘন্টা ডায়ালিসিস করানোর জন্য ইউনিট চালু রাখা হয়। মেডিসিন ভবনের এই ডায়ালিসিস চিকিৎসা পরিষেবা পরিচালনার বিষয়ে বেসরকারী সংস্থাটি অবহেলা ও চরম উদাসীনতা দেখাচ্ছে বলে রোগীর নিত্য অভিযোগ থাকলেও এই বেসরকারী সংস্থার জিবির সুপার স্পেশালিটি ব্লকে রোগীর ডায়ালিসিসের কাজ করলেও সেখানে এখন পর্যন্ত, এই বেসরকারী সংস্থার বিরুদ্ধে রোগীর তেমন অভিযোগ নেই।সুপার স্পেশালিটি ব্লকে যত্ন সহকারে গুরুত্ব দিয়ে সব কিছু মেনে রোগীর ডায়ালিসিসি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হলেও মেডিসিন ভবনের ডায়ালিসিস নিয়ে বেসরকারী সংস্থা কেন গাফিলতি ও উদাসীনতা দেখাচ্ছে তা নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন। জিবির সুপার স্পেশালিটি ব্লকে ডায়ালিসেসের শয্যা সংখ্যা হল ৫।আর মেডিসিন ভবনের শয্যা সংখ্যা হলো ২৪।রোগীর এই অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালের মেডিকেল সুপার ডা. শংকর চক্রবর্তীর বক্তব্য জানতে শনিবার রাতে কয়েকবার তার মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।প্রসঙ্গত, গত আগষ্ট মাসের শুরুতে জিবির ডায়ালিসিসের দায়িত্ব বেসরকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পর থেকেই বেসরকারী সংস্থার বেহাল পরিচালনায় রোগীরা হাসপাতালে ক্রমাগত ক্ষোভ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতাল মেডিকেল সুপার অফিসে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান।লিখিত অভিযোগ করেন সুপারের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার সরকারী আবাসেও গত দু’সপ্তাহ আগে বেসরকারী সংস্থায় বেহাল ডায়ালিসিস পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ জানাতে ক্ষুব্ধ রোগীরা ছুটে যান।তারপর স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যেও রোগীর ক্ষোভ সামলাতে বেসরকারী সংস্থার বেহাল ডায়ালসিস পরিষেবা দূর করাতে জিবিতে ছুটে যান।স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিছু ডায়ালিসিস চিকিৎসা পরিষেবা উন্নয়নে ও বেহাল দশার অবসানে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু তারপর জিবির ডায়ালিসিস পরিষেবার বেহাল দশা চালু রয়েছে বলে ক্ষুব্ধ রোগীর অভিযোগ।