জিবির ৭টি সুপারস্পেশালিটি বিভাগে রয়েছে বেশকিছু ঘাটতি!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যবাসীর কল্যাণে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার গুণগত মান উন্নয়নে বর্তমান সরকার আন্তরিক।এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।বিগত ছয় বছরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যেমন উন্নতি হয়েছে, তেমনি নতুন নতুন চিকিৎসা পরিষেবা এবং পরিকাঠামো যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়।যা আগে কল্পনাও করা যায়নি।জটিল কোনও সমস্যা হলেই ঘটি বাটি বিক্রি করে বহিঃরাজ্যে চিকিৎসা করানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনও বিকল্প ছিলো না রাজ্যবাসীর কাছে।কিন্তু সেই অবস্থার এখন অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। বহু জটিল চিকিৎসা এখন রাজ্যেই হচ্ছে।সাধারণ মানুষ সেই চিকিৎসার সুযোগ নিতে পারছেন।রাজ্যের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র জিবি হাসপাতাল এবং আগরতলা গভঃ মেডিকেল কলেজে গত ছয় বছরে একাধিক চিকিৎসা পরিকাঠামো যেমন
গড়ে তোলা হয়েছে,তেমনি একাধিক সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসা বিভাগ চালু করা হয়েছে।যেমন নিউরোলজি বিভাগ,নেফ্রোলজি (কিডনি) বিভাগ, কার্ডিওলজি বিভাগ, নিউরো সার্জারি (ওপেন হার্ট সার্জারি), ইউরোলজি বিভাগ, সিটিভিএস (ওপেন হার্ট) বিভাগ এবং প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ।ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যে একসাথে ৭ টি সুপারস্পেশালিটি বিভাগ দেশের অন্য ছোট রাজ্যগুলিতে আছে কিনা সন্দেহ।জিবি হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ছয় মাসে এই সাতটি সুপারস্পেশালিটি বিভাগ থেকে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে রাজ্যের বহু মানুষ উপকৃত হয়েছেন।কিন্তু এই সাতটি সুপারস্পেশালিটি বিভাগ সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কিছু কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কেননা,রোগীদের কল্যাণে সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হলেও,সবগুলি বিভাগে কিছু না কিছু সমস্যা, ঘাটতি রয়েছে।যেমন যন্ত্রপাতি, টেকনিশিয়ান, নার্স, মেডিকেল অফিসার, ম্যান পাওয়ার এবং অন্যান্য আধুনিক চিকিৎসা পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। এর জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা চেষ্টা করেও সর্বাধিক পরিষেবা প্রদান করতে পারছেন না।যেমন, নিউরোলজি বিভাগে যেখানে নার্ভ ও ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসা হয়, সেখানে গত ছয় মাসে তথ্য অনুযায়ী ২৪০০ জন রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।সপ্তাহে গড়ে ১০০জন রোগী পরিষেবা পাচ্ছেন।গত ছয় মাসে একজনও রেফার হয়নি।অথচ এই নিউরোলজি বিভাগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্যাথ ল্যাব নেই।তেমনি গুরুত্বপূর্ণ কয়লিং এবং স্টেনটিং মেটেরিয়ালের ঘাটতি রয়েছে।এই বিভাগে বিশেষ চিকিৎসক এবং এইচওডি হচ্ছেন ডা. আবীর লাল নাথ।নেফ্রোলজি (কিডনি) বিভগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হচ্ছেন ডা. মানস গোপ এবং ডা. সমরেশ পাল। গত ছয় মাসে ২৫০০ রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।সপ্তাহে গড়ে ১০ জন চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েছেন।এখন পর্যস্ত ২০ জন রোগী রেফার করা হয়েছে।এই বিভাগে জরুরি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট টিম এবং বায়োপসি সরঞ্জাম নেই।কার্ডিওলজি (হার্ট) বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হচ্ছেন ডা. অনিন্দ্য সুন্দর ত্রিবেদী
এবং ডা. রাকেশ দাস।গত ছয় মাসে এই বিভাগে সাড়ে আট হাজার রোগীবচিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন।গত ছয় মাসে এই বিভাগে ৩০০ জন রোগীর অ্যাঞ্জিওপ্লান্টি করা হয়েছে।প্রায় ১৫০ জন রোগীর পেসমেকার বসানো হয়েছে।
গত ছয় মাসে মাত্র ৪ জন রোগীকে রেফার করা হয়েছে। এই বিভাগে নতুন ক্যাথ প্রয়োজন।যা এখনও গড়ে তোলা হয়নি।নিউরো সার্জারি (ওপেন সার্জারি) এই বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হচ্ছেন ডা. এস রেড্ডী এবং ডা. দেবদত্ত সাহা।গত ছয় মাসে এই বিভাগে প্রায় ৩০০০ রোগীকে বহিঃবিভাগে এবং প্রায় ৪০০ রোগীকে অন্ত:বিভাগে চিকিৎসা করা হয়েছে।সপ্তাহে গড়ে ৪০০ জন রোগী পরিষেবা গ্রহণ করেছেন।গত ছয়মাসে ২৯০ টি সফল সার্জারি করা হয়েছে।ছয় মাসে মাত্র ৪ জন রোগীকে রেফার করা হয়েছে। এই চারজনকেও রেফা করতে
হতো না, যদি নিউরোসার্জারি বিভাগে গামা ছুরি ( GAMA Knife) / অ্যান্ডোস্কোপি পিটুইটারি সার্জারির সুবিধা বা পরিকাঠামো থাকতো।শুধু তাই নয়, এই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগটিতে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামেরও ঘাটতি রয়েছে।ইউরোলজি বিভাগে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হচ্ছেন ডা. মুকুট দেবনাথ।গত ছয় মাসে প্রায় ২০০০ রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।সপ্তাহে প্রায় ৯০ জন চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন।ছয়মাসে রেফার হয়েছেন ৫ জন।কিন্তু এই বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ এন্ডোস্কোপি এবং মাইক্রোসার্জারির সরঞ্জাম নেই। সিটিভিএস (ওপেন হার্ট সার্জারি) এই বিভাগে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হচ্ছেন ডা. কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য। গত ছয় মাসে প্রায় ৩০০০ রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। সপ্তাহে গড়ে ১২০ জন।কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটিতেও রয়েছে একাধিক ঘাটতি ও সমস্যা।প্লাস্টিক সার্জারি,এই বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হচ্ছেন ডা. নীলোৎপল দে। গত ছয় মাসে ২২০০ জন রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।ছয় মাসে রেফার হয়েছেন মাত্র ১ জন রোগী।কিন্তু এই বিভাগে
বার্ণ আইসিইউ নেই।যা এই বিভাগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।শুধু তাই নয়,বেশ কয়েকটি সুপার স্পেশালিটি বিভাগের অন্তঃবিভাগ নেই। প্রতিটি বিভাগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সাথে সাথে আরও টেকনিশিয়ান, নার্স এবং ডাক্তার প্রয়োজন রয়েছে।রয়েছে আধুনিক সরঞ্জামের অভাব।এই ঘাটতি ও সমস্যাগুলি দ্রুত সমাধান না হলে, রাজ্যবাসী সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।

Dainik Digital

Recent Posts

নয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পাক অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ভারতীয় সেনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের…

6 hours ago

বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক মোদী সরকারের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কেন্দ্র।২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে পর্যটকদের উপর হামলা পরপাকিস্তানের বিরুদ্ধে…

6 hours ago

শূন্য কলস!!

শূন্য কলসি বাজে বেশি,আশৈশব এই বাক্যটি পাঠ্যে পড়ে বেড়ে উঠেছি আমরা সকলে।এখন পাক ফৌজির হম্বি…

11 hours ago

বাতিল করলেন তিন দেশের সফর প্রধানমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মে মাসের মাঝামাঝি ক্রোয়েশিয়া, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র…

12 hours ago

পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পাকিস্তানে ভারতের হামলায় মৃত বেড়ে ২৬। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক জানিয়েছেন,…

13 hours ago

কৃষকের মাঝেই ঈশ্বরের অবস্থান: রতন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান!!

অনলাইন প্রতিনিধি :;মঙ্গলবার সারা রাজ্যে একাধিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গত বছর রাজ্যের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের…

13 hours ago