জিবি, আইজিএমে বিনামূল্যে ওষুধ স্বল্পতায় দুর্ভোগে রোগী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের প্রধান দুই সরকারী হাসপাতাল জিবি এবং আইজিএম থেকে রোগীরা চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের সিংহ ভাগই বিনামূল্যে পাচ্ছেন না।সব অংশের রোগীরাই তাতে বিপাকে পড়েছেন।হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ (ইনডোর) ও বহির্বিভাগ (আউটডোর)- এই দুই বিভাগের রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশনের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ ওষুধই হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে পাচ্ছেন না। শুধু ওষুধই নয়, রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী ও পাচ্ছেন না বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন ক্রমাগত এই অভিযোগ করে চলেছেন।জিবির রোগী কল্যাণ সমিতি আর কে এস ফার্মেসিতেও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের ৫০ শতাংশের বেশি ওষুধ পাচ্ছেন না। আর কে এস ফার্মেসিতে ওষুধেরও চিকিৎসা সামগ্রী এমআরপির উপর ৩৩ শতাংশ ছাড় দেওয়ার ঘোষণা থাকলেও তার সুবিধাও পাচ্ছেন না রোগীরা।দরপত্রে দিল্লীর একটি সংস্থাকে দিয়ে জিবির আরকে এস ওষুধের ফার্মেসি চালু করলেও দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী সব ওষুধ ফার্মেসিতে যেমন রাখা হচ্ছে না তেমনি চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রির উপর মাত্র ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে রোগীর জন্য। হাসপাতালে ভর্তি আছেন এমন রোগীর জন্য চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম লিখে দিলেও গভীর রাতে যখন আর কে এস ফার্মেসিতে রোগীর আত্মীয় ওষুধ আনতে যান তখন সেখানে ওষুধ না পেয়ে গভীর বিপাকে ও সংকটে পড়তে হচ্ছে।কিন্তু তারপরও স্বাস্থ্য দপ্তর, আর কে এস কারোর এই বিষয়ে কোন নজরদারি নেই।নীরব ও নির্বিকার ভূমিকা পালন করে চলেছে বলে ক্ষুব্ধ রোগী, রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ।জিবি হাসপাতালে মার্কফেড পরিচালিত জন ওষুধি জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টার থেকেও রোগীরা প্রেসক্রিপশনের ৯৫ শতাংশ ওষুধ পাচ্ছেন না বলেই রোগীরা নিত্য অভিযোগ করছেন। ভারত সরকার হাসপাতালগুলিতে রোগীর জন্য সস্তায় ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর সুবিধা পাওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার চালালেও জিবির জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টারে সেই সুবিধা মিলছে না বলেই অভিযোগ।এদিকে সরকারী ছুটির দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ হয়ে গেলে জেনেরিক মেডিসিনের কাউন্টারও বন্ধ থাকে।তাতে জিবি হাসপাতালে সস্তায় জন ওষুধির কাউন্টারে ওষুধ মিলছে না। জিবি হাসপাতালের বহির্বিভাগের সরকারী ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রে ও বিনামূল্যের ওষুধ প্রেসক্রিপশনের প্রায় ৮৫ শতাংশ ওষুধ মিলছে না। এমনকী ডায়াবেটিক রোগীর জন্য চিকিৎসক ইনসুলিন লিখে দিলে জিবিতে তাও মিলছে না। হাসপাতালে ভর্তি আছেন এমন রোগীর জন্য সেলাইন পর্যন্ত কিনে আনতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়কে। সাধারণ কিছু কমন সেলাইন হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হলেও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রের কিছু সেলাইন আবার হাসপাতালে মিলছে না। শুধু জিবি হাসপাতালেই নয়, আইজিএম হাসপাতালেও একই অবস্থা বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন নিত্য অভিযোগ করছেন।হাসপাতালের বহির্বিভাগ চালু থাকলে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র চালু থাকে। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের ৮৫-৯০ শতাংশ ওষুধ হাসপাতালের ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রে মিলছে না। সরকারী ছুটির দিন বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলে জিবি’র মতো আইজিএমে ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র বন্ধ থাকছে।হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসাধীন রোগীর জন্য প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধ দোকান থেকেই রোগীর আত্মীয়রা কিনে আনছেন বলেও নিত্য দিনের অভিযোগ।আইজিএমে জিবির মতো রোগী কল্যাণ সমিতির মতো ওষুধ বিক্রির কাউন্টার নেই।মার্কফেড পরিচালিত সস্তায় জনওষুধি তথা জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টার আইজিএম হাসপাতালে থাকলেও সেখানেও রোগীরা প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধ পাচ্ছেন না। বহির্বিভাগ বিকালে বন্ধ হয়ে গেলে কাউন্টারও বন্ধ হয়ে যায়। সরকারী ছুটির দিনেও কাউন্টার বন্ধ থাকছে। ফলে রাজ্যের দুই বড় হাসপাতালে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রীর এই সংকটময় দশার দ্রুত সমাধান করার জন্য রোগী ও রোগীর আত্মীয়েরা দাবি তুলেছেন। স্বাস্থ্য দপ্তর, আর কে এস, মার্কফেড ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসারও দাবি উঠেছে।