জি ২০ এবং সাফল্য।

 জি ২০ এবং সাফল্য।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

সোমবার থেকে আগরতলায় বসেছে জি- ২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বার্ষিক সন্মেলনের অন্যতম বৈঠক।প্রথা মেনে এক বছরব্যাপী এই হাইপ্রোফাইল সম্মেলনের এই প্রথম পৌরহিত্য করছে ভারত।এবার ১৮ তম সম্মেলন।

At G20 summit, PM Modi to address challenges on recovery from COVID-19,  Russia-Ukraine war | India News


উন্নয়ন, অর্থনীতি, শিল্পনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য, জলবায়ু সহ নানা বিষয় নিয়ে গত ডিসেম্বর মাস থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সম্মেলনের বিভিন্ন পর্ব শুরু হয়েছে।এবার পালা আগরতলার। ‘নির্মল সবুজ ও ভবিষ্যতের জন্য দূষণমুক্ত শক্তি উৎপাদন’পরিকল্পনা স্থির করতে আগরতলার হাপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইণ্ডোর হলে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে জি – ২০গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদের বৈঠক। চলবে মঙ্গলবার।

May be an image of 14 people and people standing


ভারতে আয়োজিত এবারের জি-২০ সম্মেলনের মূল স্লোগান হচ্ছে “বসুধৈব কুটুম্বকম্’। সরকারীভাবে এর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ। যদিও রাজনৈতিক পণ্ডিতদের মতে এই স্লোগানের মধ্যে দিয়ে ‘সমসাময়িক কৌশলগত বাস্তবতার নিরিখে ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতি ও চিন্তাধারাকে তুলে ধরা হয়েছে। এক বছরের জি- ২০-এর সভাপতিত্বের দায়িত্ব পেয়েছে ভারত। ১ লা ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ভারতের প্রেসিডেন্সির মেয়াদ। এই সময়ের মধ্যে জি- ২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির প্রায় দুই শতাধিক সম্মেলন (বৈঠক) অনুষ্ঠিত হবে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে জি- ২০-এর শীর্ষ বৈঠক। ৯-১০ সেপ্টেম্বরের ওই বৈঠকে দেশের রাজধানীতে হাজির হবেন পৃথিবীর তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানরা। দিল্লীর প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে এই শীর্ষ সম্মেলন।

G20 Presidency: Udaipur hosts first meeting



অনেকের মনেই প্রশ্ন, এই জি-২০ আসলে কি? এটি হলো একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম। ‘গ্রুপ অফ টুয়েন্টি’ যা বিশ্বের ১৯টি দেশ এবং ইউরোপেীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে। যার মূলত কাজ হচ্ছে আন্তর্জাতিক আর্থিক স্থিতিশীলতা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন এবং স্থিতিশীলতা উন্নয়নের মতো বৈশ্বিক অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত প্রধান সমস্যাগুলি মোকাবিলা করা। ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আনুষ্ঠনিকভাবে জি- ২০ গঠন করা হলেও, জি-২০ সদস্য দেশের নেতাদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৮ সালে। এর পর থেকে প্রতিবছর এই বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। বিশ্ব পণ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ, বিশ্ববাণিজ্যের ৮০ শতাংশ, বিশ্ব জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের ভূমি এলাকার প্রায় ৬০ শতাংশ স্থান এই জি- ২০-এর অধীনে। ফলে এই ফোরাম কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই গোষ্ঠীর সদস্য দেশগুলি হলো- আমেরিকা, রাশিয়া, ভারত, চিন, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু সব ছাপিয়ে যে প্রশ্ন উকি দিয়েছে, তা হলো জি-২০ সম্মেলনের সাফল্য। কেননা, গত মাসে বেঙ্গালুরুতে জি- ২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির অর্থমন্ত্রী এবং নয়াদিল্লীতে বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে কোনও যৌথ বিবৃতিতে উপনীত হওয়া যায়নি। কূটনৈতিক শিবিরের মতে-আগামী সেপ্টেম্বরের আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি কেমন থাকবে, তার উপরই অনেকটা নির্ভর করছে জি- ২০ শীর্ষ বৈঠকের সাফল্য। কূটনৈতিক মহলের আরও দাবি, আজকের বিশ্বের হাল ফেরাতে যুদ্ধ বন্ধের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সহমত তৈরি করা এখন অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে জি-২০ এর মতো বিশাল মঞ্চে যদি তা করা যায়, তবেই রাশিয়ার উপর যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি চাপ তৈরি করা যাবে। তা না হলে এই বৈঠকের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। যদিও জি-২০ তে অর্থপূর্ণ ফলের আশা করছে ভারত।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.