জেনেরিক মেডিসিনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রোগীরা, ক্ষোভ!!

 জেনেরিক মেডিসিনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রোগীরা, ক্ষোভ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-কোটি
কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্রীয় সরকার রোগীর রোগ নিরাময়ে ভালো গুণমানসম্পন্ন সস্তায় জনৌষধি তথা জেনেরিক মেডিসিন ব্যবহার করার জন্য মানুষকে সচেতন করতে গোটা দেশে বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপনে ছয়লাপ।অথচ ডবল ইঞ্জিনের রাজ্য ত্রিপুরার মানুষ ন্যূনতম সেই সুবিধা পাচ্ছে না। হাসপাতালগুলিতে রোগীরা চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের সব ওষুধই নামিদামি ব্র্যান্ডের চড়া মূল্যে ওষুধের দোকান থেকে কিনে নিতে হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি (ইনডোর) রোগীর জন্যই হোক বা বহির্বিভাগের (আউটডোর) রোগীই হোক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের পুরো ওষুধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা চড়া মূল্যে ওষুধের দোকান থেকে কিনতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ ও বিপাকে পড়ছেন।
বিশেষ করে গরিব ও নিম্নরোজগারের মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ রোগ নিরাময়ে বেসরকারী ওষুধের দোকান থেকে চড়া মূল্যে ওষুধ কিনতে গিয়ে – সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়ছেন।অথচ কেন্দ্রীয় সরকার রোগ নিরাময়ে সস্তায় ভালো গুণমানসম্পন্ন জনৌষধির ওষুধ তথা তথা জেনেরিক মেডিসিন ব্যবহার করার জন্য গত কয়েক বছর ধরে সংবাদমাধ্যম সহ নানাভাবে বিপুল টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে।রোগ নিরাময়ে মানুষের সুবিধার জন্য সস্তায় জেনেরিক মেডিসিন ব্যবহার করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যবস্থাপনা ও উদ্যোগের বিজ্ঞাপন দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরাও।সাংসদ বিধায়ক জনপ্রতিনিধিরাও কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞাপন দেখছেন। কিন্তু অত্যন্ত বিস্ময় ও পরিতাপের ব্যাপার হলো শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়ক সাংসদ সকলেই রোগ নিরাময়ে রাজ্যের মানুষ সস্তায় ওষুধের সুবিধা পাক তাতে দিনের পর দিন পুরো নির্বিকার ভূমিকা পালন করে চলেছেন।মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতার দারুন রাজ্যের মানুষ হাসপাতালে সস্তায় এই ওষুধ না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন।আগরতলার মধ্যে জিবি, আইজিএম এবং টিএমসি হাসপাতালে জনৌষুধি তথা জেনারিক মেডিসিন ওষুধ নেওয়ার কাউন্টার রয়েছে।তাছাড়া রাজ্যের জেলা হাসপাতালগুলিতেও এই ধরনের কাউন্টার রয়েছে। তাজ্জব ব্যাপার হলো জেনেরিক মেডিসিনের কাউন্টারগুলিতে দীর্ঘদিন ধরেই ওষুধ মিলছে না। তাই হাসপাতালগুলির চিকিৎসকরাও প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক মেডিসিন লিখছেন না- এমনটাই দাবি করছেন হাসপাতালগুলির চিকিৎসকরা।
যদিও কোনও চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে জেনারিক মেডিসিন নেওয়ার জন্য লিখেদেন তাতে রোগীরা ওষুধের কাউন্টার গুলিতে গিয়ে কপাল ভালো থাকলে এক-দুইটি ওষুধের আইটেম পেয়ে যেতে পারেন।কোনও রোগীর প্রেসক্রিপশনের আবার একটি ওষুধও কাউন্টারে মিলছে না।কেন কেন্দ্রীয় সরকারের ভালো একটি উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনা ত্রিপুল্লর সরকার কার্যকর করছে না তা নিয়ে গভীর বিস্ময় ও রহস্য দেখা দিয়েছে।কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগে বলা হয়েছে রোগীরা যাতে সুবিধা পান তাই সব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে রোগ নিরাময়ে সস্তায় জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টার চালু করে পর্যাপ্ত পরিমাণ ও সব ধরনের ওষুধ রাখার জন্য।কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিজেপি পরিচালিত সরকার হলেও কেন কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ দিনের পর দিন অমান্য করে সেই সুবিধা চালু করা হচ্ছে না তা নিয়ে রাজ্যবাসী ও চিকিৎসক মহলও প্রশ্ন তুলেছেন।শুধু হাসপাতাল নয়,শুধু জেনেরিক মেডিসিনের জন্য বেসরকারী ওষুধের দোকানও কেন পর্যাপ্ত ভাবে চালু করা হচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দাবি উঠেছে রাজ্য সরকার যাতে খুব দ্রুত হাসপাতালগুলিতে সস্তায় জনৌষধি তথা জেনেরিক মেডিসিন রোগীরা পেতে পারেন তার পুরো ব্যবস্থা চালু করার জন্য। হাসপাতালগুলিতে রাজ্য সরকারের আন্ডার টেকিং মার্কফেড কো-অপারেটিভ জেনেরিক মেডিসিন সরবরাহ করার জন্য দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে রাখলেও মার্কফেড এই ব্যাপারে পুরোপুরি ব্যর্থ।মার্কফেড জেনেরিক মেডিসিন হাসপাতালের কাউন্টারগুলিতে সরবরাহ করতে পারছে না। সেই কারণে রোগীরা সস্তা ওষুধ থেকে চরম ভাবে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরেই মার্কফেড নির্বিকার ও উদাসীনতার ভূমিকা পালন করে চলেছে। অথচ বর্তমান রাজ্য সরকার মার্কফেড পরিচালনার সুবিধার জন্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে রেখেছে।কিন্তু জেনেরিক মেডিসিন নিয়ে তাদের কোনও কর্মতৎপরতা ও অস্তিত্ব আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য সরকারও সবজেনে শুনে ব্যর্থ মার্কফেড নিয়ে কোনও টু শব্দ না করায় ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের মানুষেরই।দাবি উঠেছে মার্কফেডকে বাদ দিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের মাধ্যমে হাসপাতালগুলিতে জেনেরিক মেডিসিন সরবরাহ করার দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। জেনারিক মেডিসিনের বিষয়ে সব দায়িত্ব স্বাস্থ্য দপ্তরকেই নেওয়ার দাবি উঠেছে চিকিৎসক সহ বিভিন্ন মহলে। রাজ্য সরকারের এই বিষয়ে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.