জৈব ফসলই ভবিষ্যৎ, বিদেশ থেকে ফিরে বললেন কৃষিমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে কীভাবে অর্গানিক ফসল উৎপাদনে সাফল্য অর্জন করা যায়, সে বিষয়ে সম্যক ধারণা এবং বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে অবহিত হতে সম্প্রতি জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ইন্টার ন্যাশনাল অর্গানিক ট্রেড ফেয়ারে রাজ্যের প্রতিনিধি হয়ে অংশ নিলেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ এবং কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস।শুধু প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাই নয়,সময়ের সঙ্গে মাটির উর্বরতাও ক্রমশ কমে যাচ্ছে।ফলে কৃষি উৎপাদন দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।শুধু তাই নয়, কমছে কৃষিজমির পরিমাণও।এই অবস্থায় ভবিষ্যতে দেশ ও রাজ্যে কৃষি উৎপাদনের ভারসাম্য কীভাবে বজায় রাখা যায় এ বিষয়গুলি নিয়ে বিশ্বের তামাম কৃষি বিজ্ঞানীদের সাথেও আলোচনা করেন ওই আন্তর্জাতিক আসরে।নামে বাণিজ্য মেলা হলেও সেখানে ক্রয় বিক্রয়ের কোনও বিষয় নেই।মূল বিষয় হচ্ছে, অর্গানিক ফসলের প্রদর্শনী এবং অর্গানিক ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির পথ খোঁজা।
জার্মানির নুরেমবার্গের ম্যাসেতে গত তেরো ফেব্রুয়ারী থেকে ষোল ফেব্রুনারী, চারদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক আয়োজনে বিশ্বের একশোটি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। প্রতিটি দেশের নিজস্ব অর্গানিক ফসল এখানে প্রদর্শিত হয়।ফসলের উৎপাদন ও ব্যবসা নিয়ে বিভিন্নস্তরে আলোচনা হয়। এই আলোচনায় থাকেন কৃষি বিজ্ঞানী এবং বিভিন্ন দেশ ও রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চস্তরীয় আধিকারিকরা।জার্মানিতে আয়োজিত ওই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা থেকে ফিরে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শ্রীনাথ জানান, রাজ্যে মোট জমির মাত্র চব্বিশ শতাংশ হচ্ছে কৃষি জমি।এই চব্বিশ শতাংশ জমির উপরই আমাদের কৃষি উৎপাদনের সবকিছু নির্ভরশীল।ইচ্ছে করলেই কৃষিজমি বৃদ্ধি করার আর কোনও সুযোগ নেই।তাই আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জটা খুবই কঠিন।মাটির উর্বরতা যেভাবে কমছে এবং প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে কৃষি উৎপাদনে আমাদের আরও বেশি সাফল্য অর্জন করতে হলে প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতেই হবে।জোর দিতে হবে অর্গানিক ফসল উৎপাদেেনর উপর।পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়টিও সমানভাবে মাথায় রাখতে হবে।কীভাবে সেটা সম্ভব?এর পথ খুঁজতেই এই আন্তর্জাতিক জৈব ফসল বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ। কেননা,গোটা বিশ্ব এখন মাটির উর্বরতা রক্ষা করে এবং প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে জৈব ফসল উৎপাদনের দিকে যাচ্ছে। এছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই।মন্ত্রী জানান,চারদিনে এই জৈব ফসল বাণিজ্য মেলার সিইও পিটার ওডসম্যান,অর্গানিক ফসলের গ্লোবাল পলিসি হেড জাবর ফিজিজকের সাথে আন্তর্জাতিক পলিসি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।আলোচনা হয়েছে উগান্ডার কৃষি প্রতিমন্ত্রী ফ্রেড বুইনো এবং জার্মানির মিউনিখে ইন্ডিয়ান কনসুলেটর আমির বসিরের সাথে।আলোচনা অনেকটাই ফলপ্রসূ হয়েছে জানান কৃষিমন্ত্রী শ্রীনাথ।জার্মানি থেকে কৃষিমন্ত্রী এরপর যান সুইজারল্যান্ডের জুরিখে। সেখানে অবস্থিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গবেষণা কেন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউশন অব অর্গানিক এগ্রিকালচার পরিদর্শন করেন।এই গবেষণা কেন্দ্রে বিশ্বের ২৫০ জন কৃষি বিজ্ঞানী গবেষণা করছেন। এর মধ্যে ভারতীয় বিজ্ঞানীও আছেন বেশ কয়েকজন। জমির উর্বরতা রক্ষা করে, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে কীভাবে জৈব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, এরই গবেষণা চলছে দিনরাত।সেখানে গবেষণারত কৃষি বিজ্ঞানীদের সাথে বৈঠক করেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ।উদ্দেশ্য একটাই- রাজ্যকে কীভাবে কৃষি উৎপাদনে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যাওয়া যায়।রাজ্যে কীভাবে জৈব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।