জোটের নামে নাটক!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বলতে কোনও দ্বিধা আম বা সংশয় নেই যে, তথাকথিত ইন্ডিয়া জোটে ফাটল আরও বড় হলো।সেই সাথে গেরুয়া শিবিরের তৃতীয়বার দেশের ক্ষমতায় আসার পথটাও আরও মসৃণ হলো।এটা হওয়ারই ছিলো। যারা রাজনীতির হাঁড়ির খবর রাখেন,তারা খুব ভালো করেই জানেন,শেষ পর্যন্ত এমনই হবে।কারণ,অতীত অভিজ্ঞতা সেই কথাই বলে।তাছাড়া, রাজনীতির একেবারে ন্যূনতম খবর যারা রাখেন,তারা খুব ভালো করেই জানেন বিজেপি বিরোধী এই জোট ছিলো আদতে লোক দেখানো।শুধু নামকরণ করলেই যদি সবকিছু হয়ে যেতো,তাহলে তো কোনও কথাই ছিলো না। যে বিরোধী দলগুলি বিজেপিকে পরাজিত করবে বলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দিনে কয়েকবার করে হুমকি দিচ্ছে, অথচ তারা গত ছয় মাস ধরে জোটের একটি অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি পর্যন্ত তৈরি করতে পারেনি।আসন বণ্টনের ফর্মুলা তো দূরের কথা।স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে,জোটটা তাহলে হলো কোথায়?জোট হওয়ার আগেই তো বারবার হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।অনেকটা দেশি কই মাছের মতো।দাঁড়ি পাল্লা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যায়।ইন্ডিয়া নামক তথাকথিত জোটেরও একই অবস্থা। আসলে জোট জোট বলে, বৈঠকের নামে কয়েকদফা ফটোসেশন করে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে।এই কথা বললে, খুব একটা ভুল বলা হবে বলে মনে হয় না।কেন না,জোট নামক নাটকের কুশীলবদের আগে থেকেই জানাছিল,নাটকের শেষ পরিণতি।তাদের মুখে এরকম কথা থাকলেও,মনে ছিলো অন্য কথা।তা না হলে শেষ সময়ে এমনটা হবে কেন? জোট যে হবে না-সেটা তারাও ভালো করে জানতেন।কেন না,বর্তমান ভারতের রাজনীতিতে স্বার্থ এবং লাভই হচ্ছে সবথেকে বড় বিষয়। ক্ষমতাই হচ্ছে শেষ কথা। এগুলোকে বাদ দিয়ে বৃহত্তর এবং জনগণের স্বার্থে রাজনীতি এখন কল্পনা করাই বৃথাশ্রম ছাড়া কিছুই নয়। ফলে স্বার্থ,লাভ,ক্ষমতা এসবকে বাদ দিয়ে একটা নীতি-আদর্শহীন,অসম জোট গঠন করার প্রক্রিয়া যখন থেকে শুরু হয়েছে, তখন থেকেই জনমনে এই প্রশ্ন উঠেছে যে,এই জোট আদৌ হবে তো?জনগণের এই ভাইরাই প্রেম পর্যন্ত সঠিক হতে চলেছে।
বুধবার তথাকথিত ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি জোটে নেই।বঙ্গে তিনি একাই লড়বেন।
মমতার পর জোটের আরেক নেতা আম আদমি নেতা দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন, পাঞ্জাব ও দিল্লীতে আপ একাই লড়বে।ওই দুই রাজ্যে কোনও জোট হবে না। সমাজবাদীর অখিলেশ যাদবও একই সুর দিয়েছেন।
এখানেই শেষ নয়, মমতা, অরবিন্দ,অখিলেশের পর
বৃহস্পতিবার উল্টো সূর শোনা গেলো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কন্ঠেও।
রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় যোগ দিচ্ছেন না ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক নীতীশ কুমার। এমনই খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাহুলের ন্যায় যাত্রা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে।সেখান থেকে ৩০ জানুয়ারী ন্যায় যাত্রা বিহারে প্রবেশ করার কথা।খবরে প্রকাশ রাহুলের ন্যায়।যাত্রায় নীতীশ সহ তার দলের কেউই শামিল হবে না।এর থেকে স্পষ্ট জোট এগোনোর আগেই হুমড়ি খেয়ে আছড়ে পড়তে চলেছে।এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে,এমনটা হচ্ছে কেন? কারণটা একেবারেই সহজ। প্রথমত,রাজনৈতিক স্বার্থ। দ্বিতীয়ত,একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস।যে যত কথাই বলুক, মমতা, নীতীশ কুমার থেকে শুরু করে আরও অনেকের জোট ধর্ম পালনে তাদের আন্তরিকতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।তাছাড়া কংগ্রেসকে তারা জায়গা ছাড়তে রাজি নয়।তাহলে কংগ্রেসই বা কিভাবে তাদের জায়গা ছাড়বে?এই টানাটানিতেই টানাটানিতেই ইন্ডিয়া নামক তথাকথিত জোটের গঙ্গাপ্রাপ্তি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।উল্টোদিকে রামরাজ্যের আবেগ উসকে দিয়ে বিজেপির রথের গতি যেভাবে বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,তাতে তাঁর তৃতীয়বার দেশের শাসন ক্ষমতায় আসতে খুব একটা বেগ পেতে হবে বলে, এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে না।