জয় বিজ্ঞানের জয়!!

এ যেন এক অন্য ধরনের বিশ্বজয়। মহাকাশে গবেষণার তাগিদে নয় মাস আগে যে মেয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন সেই মেয়ের ঘরে ফেরা হল নয় মাস বাদে। মাহেন্দ্রক্ষণ বুধবার ভোর রাত, পৃথিবীতে ফিরলেন সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর-রা, মার্কিন নভশ্চর হলেও সুনীতার শেকড় ভারতে।তাই গোটা মার্কিনবাসী, বিশ্ববাসীর সাথে সুনীতাদের ঘরে ফেরা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন আপামর ভারতবাসীও।নয় মাস আগে গত বছরের জুন মাসে মাত্র আটদিনের অভিযান করতে গিয়েছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস, বুচরা।কিন্তু আট দিন, আঠার দিন, আটাশ দিন, পেরিয়ে গেলেও যান্ত্রিক ত্রুটিতে আটকে পড়েছিলেন সুনীতাসহ তার গোটা টিম। সেজন্য উৎকণ্ঠা বেড়েই যাচ্ছিল তার ঘরে ফেরা নিয়ে, নাসা এই অভিযানে পাঠিয়েছিলো সুনীতাদের। শুধু তাই নয়। সুনীতারা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আটকে পড়ে গেলেও সব কাজকর্ম ঠিকঠাকই চলছিল।এমনকী সুনীতা উইলিয়ামসরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।নয়া বছরও তারা মহাকাশে উদ্যাপন করেছেন।
যে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সুনীতা উইলিয়াম্ সহ তার সহযোগীরা থেকেছেন এটি আসলে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ।মানুষ এখানে গত পঁচিশ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।কীভাবে মানুষ সেখানে বাস করছে সুনীতা তার সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে এখানে মানুষ যায় আবার ফিরেও আসে।কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তারা স্পেস স্টেশনেই থেকে গেছেন দীর্ঘ নয় মাস। নাসা কয়েকবার চেষ্টা করেছিলো যান পাঠিয়ে তাদের আনার বিষয়ে, কিন্তু বার কয়েক ব্যর্থ হয়।এরপর মার্কিন মুলুকেও নির্বাচন সম্পন্ন হয়।পাঁচ বছর বাদে ফের ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে ফিরে।ট্রাম্প মসনদে ফিরেই বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের এলেন মাস্ককে বললেন কী করে সুনীতাদের ঘরে ফেরানো যায় তার যেন প্রচেষ্টা নেন তিনি। যেমনি বলা এলেন মাস্কও তেমনি কাজ শুরু করে দিলেন। জানুয়ারীতে একবার অ্যাটেম্প নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা হয়ে উঠেনি। এবার মার্চের ১৬ তারিখই নাসার স্পেস এক্স ক্যাপসুল যায় আন্তর্জাতিক স্পেস সেন্টারে সুনীতাদের আনতে।সাথে আরও কিছু মহাকাশবিজ্ঞানী, যারা সুনীতাদের রিলিভার।
অবশেষে মঙ্গলবার পৃথিবীর উদ্দেশ্যে, স্পেস এক্স-এ বসেন সুনীতা উইলিয়ামসরা।সঙ্গে বুচ উইলমোর এবং ২ জন ক্রু সদস্য।মাহেন্দ্রক্ষণ বুধবার ভোরের সূর্য দেখার আগেই পৃথিবী স্পর্শ করলেন সুনীতারা।এ যেন রূপকথার গল্পের মতো কাহিনি।যা দীর্ঘদিন বর্ণিত হবে আট থেকে আশির কাছে।কয়েক প্রজন্ম ব্যাপী সুনীতাদের গল্প পৃথিবীর বুকে ধ্বনিত হবে।নয় মাস পর কীভাবে মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে অবতরণ এক মহাকাশচারীর যার শেকড় আবার ভারতে প্রোথিত সেই কাহিনি, উচ্চারিত হবে।বুধবার সুনীতারা পৃথিবীর মার্টি স্পর্শ করতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বিশ্ববাসী। সুনীতার জন্য রাত জেগেছেন এদেশের লক্ষ কোটি দেশবাসী। সুনীতাদের পৈতৃক ভিটেতে বুধবার অকাল দেওয়ালি পালিত হচ্ছে। গুজরাটের মেহসেনাতে সুনীতাদের পূর্বপুরুষদের ভিটে। এখানে চলছে উল্লাস। একসময় উৎকণ্ঠা চলছিল নীতারা বোধহয় আর পৃথিবীর মুখ দেখতে পারবেন না। কিন্তু বিজ্ঞানের এক অবিস্মরণীয় আবিষ্কারের, উদ্ভাবনে সুনীতারা ঘরে করলেন। বিজ্ঞানের জয় হল শেষমেশ। মহাকাশ বিজ্ঞানের জয় হল। এর চর্চা চলতেই থাকবে বিশ্বব্যাপী যতদিন মহাকাশ গবেষণা থাকবে এই পৃথিবীতে।মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এ এক অনন্য মাইলস্টোন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।