ঝর্না দিদি, স্বামীর খুনিদের ভোট দিতে পারবেন?

 ঝর্না দিদি, স্বামীর খুনিদের ভোট দিতে পারবেন?
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-১৯৮৮ থেকে ৯৩।কংগ্রেস-টিইউজেএস জোট সরকারের আমলে বিভীষিকাময় রাজনৈতিক সন্ত্রাসকে হাতিয়ার করে বামেরা একটানা পঁচিশ বছর রাজত্ব করে গেছে।ভোট এলেই ধর্মনগর থেকে সাব্রুম পর্যন্ত সিপিএম নেতৃত্ব নির্বাচনি প্রচারে জোট আমলের সন্ত্রাসের ক্যাসেট বাজিয়ে ময়দানে ঝড় তুলে নিজেদের অনুকূলে ভোট কুড়াতো।উল্টোদিকে কংগ্রেস দলও দীর্ঘ বাম রাজত্বের হাড়হিম করা রাজনৈতিক সন্ত্রাসের খতিয়ান তুলে ধরে মানুষের কাছে ভোট চাইতো।

এটাই ছিল রাজ্য রাজনীতির বাস্তবতা। কিন্তু পরিস্থিতির পটপরিবর্তনে আজ কংগ্রেস-সিপিএম এক ঘাটে জল খাচ্ছে।২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের পর ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও বাম- কংগ্রেসের প্রচারের হাতিয়ারকে পাল্টা হাতিয়ার করে প্রচারে ঝড় তুলেছে শাসকদল বিজেপি।পশ্চিম আসনের বিজেপি প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সিপিএম-কংগ্রেসের সেই প্রচারকেই হাতিয়ার করে পাল্টা প্রচারে একের পর এক তোপ দাগিয়ে চলেছেন। মানিক সরকার, জিতেন্দ্র চৌধুরীদের প্রায় প্রতিদিনই নিশানা করেন।সোমবার আগরতলা রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে আয়োজিত জনসভায় তিনি প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ ঝর্না দাস পাল বৈদ্যকে নিশানা করেন।

সোমবার রামনগর বিজেপি মণ্ডলের উদ্যোগে স্থানীয় রাজনগর স্কুল মাঠে আয়োজিত সভায় ভাষণ দিতে গিয় বামনেত্রী ঝর্না দাস পাল বৈদ্যকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি বলেন, ঝর্না দিদি কী
তাহলে তার স্বামীর খুনিদের পক্ষে ভোট দেবেন?বীরচন্দ্র মনুতে আপনার স্বামী শ্রীদাম পাল সহ যে চৌদ্দজন বাম নেতাকে জোট আমলে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, আপনি কি সেই খুনিদের ভোট দেবেন? বীরচন্দ্র মনুর নৃশংস গণহত্যার ঘটনায় এতদিন মাঠঘাট গরম করে, মায়াকান্না করে এই রাজ্যের তথাকথিত কমিউনিস্টরা রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করেছিল। প্রতি বছর নিয়ম করে বীরচন্দ্র মনুর শহিদ বেদিতে ফুল মালা চড়িয়ে মানিকবাবু, জিতেন্দ্রবাবুরা মায়াকান্না করে বুক ভাসিয়ে দিতেন। সেদিন কারা খুন করেছিল আপনার স্বামী শ্রীদাম পাল সহ চৌদ্দজন বাম নেতৃত্বকে? আজ রাজনৈতিক স্বার্থে সেই খুনিদের সাথে হাত মিলিয়েছেন?তাদের ভোট দিতে পারবেন তো?প্রশ্ন ছুড়ে দেন বিপ্লব দেব।সভায় তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরার এত বছরের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, সারা জীবন কংগ্রেসিদের বিরুদ্ধে রাজনীতি করে এসেছেন। কংগ্রেসিদের বিরোধিতা করে ত্রিপুরায় দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর রাজত্ব করেছেন।কী করে এবার তাদের ভোট দেবেন? নির্বাচনি প্রচারে কী করে কংগ্রেস প্রার্থীক ভোট দেওয়ার দাবি জানাবেন মানিক সরকার?কী করে রাজ্যের জনগণকে বলবেন কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য?আপনার বিবেক, নীতি, আদর্শ সব কিছু কি বিসর্জন দিয়ে দিয়েছেন?তবে আশা ব্যক্ত করে শ্রীদেব বলেন,মানিক সরকার কখনই নীতি আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে কংগ্রেসকে ভোট দিতে পারবেন না।তিনি বলেন,
কমিউনিস্টরা এখন বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধিতে পরিচালিত হচ্ছে।এত বছর কংগ্রেসের পরোক্ষ মদতে ক্ষমতায় টিকে থাকা কমিউনিস্টদের পুনরায় ক্ষমতায় আসার প্রত্যাশায় কংগ্রেসের কাছ থেকে এখন শক্তি ধার নিতে হচ্ছে।যদিও এই রাজ্যে কংগ্রেস বলতে এখন কিছুই নেই।তারপরও নির্বাচনে একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করার মতো সাহস বা শক্তি নেই কমিউনিস্টদের। বাম-কংগ্রেসের এই জোটকে
রাজ্যের উন্নয়নবিরোধী অশুভ জোট বলে আখ্যায়িত করেন শ্রীদেব।তিনি এই জোটকে একটি ভোটও না দেওয়ার আহ্বান জানান রাজ্যবাসীর কাছে।এদিনের নির্বাচনি জনসভা থেকে সিপিএম সমর্থকদেরও ভোট চাইলেন বিপ্লব দেব।তিনি বলেন,২০১৮ সালে কমিউনিস্ট সমর্থকরাও ভোট দিয়েছিলেন বলেই একক
সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শূন্য থেকে সরকার পরিবর্তন সম্ভব হয়েছিল।জনসংযোগের মাধ্যমে বাম সমর্থকদেরও কাছে আনার জন্য দলীয় কর্মীদের পরামর্শ দিলেন
শ্রীদেব।শুধু তাই নয়,এদিন জনসভায় একই সাথে রামনগর বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী মেয়র দীপক মজুমদারকে বিপুল ভোটে জয়ী করার
আহ্বান জানান।

এদিন রামনগরে নির্বাচনি জনসভায় পিতৃদশা নিয়েও অংশ নিয়েছেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। ভাষণ দিতে গিয়ে বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রীতিমত আগুন ঝড়ালেন। ভাষণ দেন রামনগর উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী মেয়র দীপক মজুমদারও। আমি আপনাদেরই। আপনাদের কাছে এসেছি আশীর্বাদ চাইতে।এইভাবেই রামনগরবাসীর কাছে ভোট চাইলেন দীপকবাবু।এদিন রামনগর ছাড়াও প্রতাপগড়ে আরও একটি নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দেন বিপ্লব কুমার দেব।দুটি সভাতেই মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।এছাড়াও সোমবার রাত দশটা পর্যন্ত একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেন শ্রীদেব।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.