বাংলায় অত্যন্ত প্রচলিত ও জনপ্রিয় দুটি প্রবাদ আছে । একটি ‘ ঝোপ বুঝে কোপ ’ অন্যটি ‘ সুযোগের সদ্ব্যবহার ‘ । দুটি প্রবাদই একে অপরের পরিপূরক । আরও স্পষ্ট করে বললে দুটিরই মূল অর্থ প্রায় এক । শুধু স্থান – কাল – পাত্র বিবেচনায় রেখে প্রবাদের ব্যবহার হয়ে থাকে । রাজনীতি , সমাজনীতি , অর্থনীতি – জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই দুই প্রবাদের প্রচলন ও ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় । বলতে গেলে মানুষের জীবনের সঙ্গে এই দুই প্রবাদের সারমর্ম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ।
এই দুই প্রবাদের ‘ ভালো ’ ও ‘ মন্দ ’ দুইটি দিক আছে । অর্থাৎ দুই ক্ষেত্রেই সমান উপযোগী । এই দুই প্রবাদ বাক্যের মধ্যেই তার সারমর্ম ( অর্থ ) জড়িয়ে রয়েছে । ফলে নতুন করে এর ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই । মানুষ ভালো করেই জানে এই দুই প্রবাদের সারমর্ম । কেন , কোথায় , কী কারণে- প্রচলিত প্রবাদগুলিকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেয় । শুরুতেই বলেছি , এর ভালো ও মন্দ দুটি দিকই আছে । তবে ভালো যা কিছু আছে , তা সবসময়ই ভালো । এ নিয়ে কোনও কথা নেই । কথা হবে প্রবাদের ‘ মন্দ ’ দিক নিয়ে । সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে , যাদের জন্য এই প্রবাদগুলি অমরত্ব লাভ করেছে ।
এই ধরনের মানুষ শুধু নিজের ভালোটাই চিন্তা করে । আর পাঁচ জনের ভালো , সমাজের সকল অংশের মানুষের ভালো এদের কাছে গৌণ । এরা প্রধানত লোভী। লোভ সংবরন করা এদের ধাতের নেই। এরা সবসময়ই অপেক্ষায় থাকে। অর্থাৎ সুযোগ ও সময়ের অপেক্ষায় থাকে। কখন সাধারণ মানুষ বিপদে পড়ে, কখন সমস্যার মধ্যে পড়ে। এই ধরনের মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং স্বভাব ‘শকুন’ জাতীয় প্রাণীর চরিত্রের সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
তাই যেকোনো বিপর্যয়,সমস্যা দেখলেই অথবা শুনলেই, ওই জাতীয় মানুষের ভিতর লুকিয়ে রাখা লোভের কুৎসিত প্রবৃত্তিটা প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসে। যার ফলে সাধারণ মানুষ আরও বড় বিপদ ও সমস্যার মধ্যে পড়ে যায়। এটাই এরা মনে প্রাণে চায়। কারণ এতে লোভের ঘড়াটা পূর্ণ করা যাবে। হয়তো এই কারণেই প্রবাদগুলি বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
সম্প্রতি আমাদের পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসাম ভয়াবহ বন্যার কবলে। কাছাড় সহ আসামের কয়েকটি জেলা বন্যার কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ত্রিপুরার লাইফলাইন আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক এবং রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত। এককথায় সড়ক ও রেলপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ত্রিপুরা। জাতীয় সড়কের বহু জায়গায় ভূমি ধসে যান চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়ে। জলের স্রোতে বহু জায়গায় রেল লাইন ভেসে গেছে। পাহাড় ভেঙে রেল স্টেশনে এসে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ধস সরিয়ে সড়কপথে যানবাহন চলাচল শুরু করা হলেও, রেল পরিষেবা চালু হতে কতদিন লাগবে তা এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে বিপর্যয়ের নমুনা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, রাজ্যের সাথে বহিঃরাজ্যের রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হতে কম করেও মাস তিনেক লাগতে পারে। তাও যদি আর ভারী বর্ষণ না হয়। বৃষ্টি হলে সংস্কার কাজ স্বাভাবিকভাবেই বিঘ্নিত হবে। এই ক্ষেত্রে আরও সময় লাগতে পারে।
কিন্তু বিস্ময়ের ঘটনা হলো, জাতীয় সড়কে ধস এবং রেল পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার খবর পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মারা এবং মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুনাফা লুন্ঠনকারীরা অতি তৎপর হয়ে উঠে। সাথে সাথেই রাজ্যের বাজারগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মুনাফা অর্জনে নেমে পড়ে। সব ক্ষেত্রেই এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। রেল পরিষেবা বিঘ্নিত হতেই রাতারাতি বিমানের টিকিটের মূল্য একলাফে দ্বিগুণ, তিনগুণ বেড়ে গেছে। আড়াই হাজার টাকার টিকিট হয়ে গেছে পাঁচ হাজার টাকা। অথচ এমন হওয়ার কথা নয়। এমন নয় যে, রাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাদ্যসামগ্রীর মজুত নেই। যথেষ্ট পরিমানে মজুত আছে। তারপরেও আমজনতার দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকাটাই এখন বড় দায় হয়ে উঠেছে। কিন্তু কে শুনে কার কথা। প্রায় সকলেই তো ছুটছে সুযোগের পিছনে। ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মারার দৌড়ে শামিল। ফলে চুলোয় যাক আমজনতা।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…