টিআরপিসিতে অনৈতিক কাজে জটিলতা বাড়ছে!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা রিহ্যাবিলিটেশন প্ল্যানটেশন কর্পোরেশনের (টিআরপিসি) জটিল দশা ক্রমেই আরও গভীরে যাচ্ছে।কর্পোরেশনের উন্নতি নয়, পরিচালনগত ত্রুটি, বিচ্যুতি ও দুর্নীতির কারণে ক্রমেই টিআরপিসি অন্তর্জলি যাত্রার পথেই এগোচ্ছে।কর্পোরেশনের এমডি-কে পুতুল বানিয়ে চেয়ারম্যান পাতালকন্যা জমাতিয়া মর্জিমাফিক ও একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় সর্বত্র জট তৈরি হচ্ছে।এমনটাই অভিযোগ উঠেছে টিআরপিসির রাজ্যের চারটি জোনের ৬৯টি সেন্টারের তরফে।কর্পোরেশনের কুমারঘাটস্থিত উত্তর জোনের তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার তথা ডিডিওর দায়িত্বে আরকে ত্রিপুরা থাকাকালীন বাহাত্তর লক্ষ টাকা হাপিস করার ঘটনা ঘটে। দেড় বছর আগে সরকার তথা কর্পোরেশনের বিশাল অংকের টাকা হাপিস হওয়ার ঘটনায় গভীর রহস্য ও চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছিল।ক্যাশিয়ার বিশ্বজিৎ রিয়াংকে চাকরিতে সাময়িক বরখাস্ত করার পর ভিডিও তথা ডেপুটি ম্যানেজার আরকে ত্রিপুরাকেও বদলি করে দেওয়া হয়েছিল।শ্রীত্রিপুরার ভূমিকা নিয়ে নানা অভিযোগ ও সংশয় দেখা দেওয়ায় তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাকে অন্য জেলায় বদলি করে দেন। কর্পোরেশনের বাহাত্তর লক্ষ টাকা হাপিস হওয়ার পর এখনও তার কোনও কিনারা হয়নি।টাকাও উদ্ধার করা হয়নি।তার কিনারা করে টাকা উদ্ধারে কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাস্তবভিত্তিক কোনও পদক্ষেপ নেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে কর্পোরেশনের কোষাগার থেকে বিপুল টাকা চলে যাওয়ায় কর্পোরেশনের বিরাট ক্ষতি হয়েছে।তারপরও তাকে শাস্তিমূলক বদলির জায়গা থেকে উঠিয়ে এনে দু’মাস আগে প্রধান অফিসে আনা হয়।কিন্তু বিস্ময়জনক তার মধ্যে এখন আবার সেই উত্তর জোনের তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার তথা ডিডিও আরকে ত্রিপুরাকে গুরুত্ব দিয়ে চেয়ারম্যান গোর্খাবস্তিস্থিত কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপার পাকা করে ফেলায় কর্পোরেশনজুড়ে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।মার্কেটিং ম্যানেজার পদে তাকে রাখা হলে কর্পোরেশনে অনিয়ম,বেনিয়ম, দুর্নীতি জাঁকিয়ে বসবে বলে সবস্তরের কর্মচারীদের অভিযোগ।উত্তর জোনের দায়িত্বে থাকাকালীন বাহাত্তর লক্ষ টাকা হাপিস হয়ে যায়।তারপর এখন আবার প্রধান অফিসের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও পদে থাকলে কর্পোরেশনের কী অবস্থা হবে তা নিয়ে গভীরভাবেই উদ্বিগ্ন কর্মচারী মহল।এমডি তাকে এই পদে বসাতে রাজি না হলেও চেয়ারম্যানের চাপাচাপিতে এমডি পিছু হটেন।তারপরও কর্মচারীদের প্রবল বাধা ও আপত্তি আরকে ত্রিপুরাকে এই পদে বসানো যাবে না।তা নিয়ে কর্পোরেশনজুড়ে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। এদিকে,যে কাজ ও অর্ডার এমডি তার অফিসার ও কর্মচারীদের দেওয়ার কথা সেই কাজ ও অর্ডার প্রধান কার্যালয়ে বসে ডেপুটি ম্যানেজার আরকে ত্রিপুরা দেওয়ায়ও অনৈতিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ,চেয়ারম্যান এমডি-কে কর্পোরেশনের কোনও কাজের বিষয়ে বলতে পারেন।এমডি সব বুঝেশুনে তা কার্যকর করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন।কারণ চেয়ারম্যান হলেন রাজনৈতিক দলের লোক। সরকারী অফিসার বা কর্মচারী নন।এমডি কর্মচারী ও অফিসারদের কাজের নির্দেশ ও অর্ডার দিতে পারেন।তার দায়বদ্ধতা থাকবে এমডি স্বয়ং। কিন্তু চেয়ারম্যান রাজনৈতিক লোক হওয়ায় তার কথায় কোনও কাজ করতে গেলে কোনও কর্মচারী বিপত্তিতে পড়লে চেয়ারম্যান তখন কী করতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কর্পোরেশনে।ডেপুটি ম্যানেজার আরকে ত্রিপুরা এখন যেভাবে রাজ্যের ইউনিট ইনচার্জদের নানা অর্ডার ও নির্দেশ ধরিয়ে দিচ্ছেন তা নিয়ে বিস্ময় দেখা দিয়েছে। আদৌ তিনি কি এভাবে ইউনিট ইনচার্জকে অর্ডার দিতে পারেন কি না, চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে জানাতে হবে রাবার শিটের স্টক কত আছে ইত্যাদি।আরকে ত্রিপুরার এসব কাজে উৎসাহ জোগাচ্ছেন দক্ষিণ জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারও।অন্য জোনগুলি তা মানতে রাজি নয়। এদিকে, কর্পোরেশনের হাল দিন দিন লালবাতি জ্বলার পথে হাঁটলেও অযথা কর্পোরেশনের খরচ শুধু বেড়েই চলেছে। চেয়ারম্যানের গাড়ির জ্বালানির খরচের বহরও বাড়ছে।ওএসডি আগে কোনওদিন কর্পোরেশনে না থাকলেও এখন চেয়ারম্যানের ওএসডি থাকায় যেমন প্রশ্ন উঠছে তেমনি ওএসডি বাবদ খরচ বাড়ছে।আগে কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী যিনি দায়িত্বে থাকতেন তিনিই কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন।তাতে কর্পোরেশনের এই খরচ লাগতো না।এদিকে,বেতনের দাবিতে সরকারী ছুটির দিনে রবিবার সাত জানুয়ারী কর্পোরেশনের প্রধান অফিসে প্রতিবাদ সভা করায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে এমডি কর্পোরেশনের সব কর্মচারীকে শোকজ করায় কর্মচারীরা চরম অসন্তুষ্ট। শোকজের বিষয়টি বিনা মেঘে বজ্রপাত হওয়ার মতো ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছেন কর্মচারীদের কাছে। কোনও অন্যায় না করেও শোকজ নোটিশ পাওয়ায় চাকরিজীবনে একটা বিরাট দাগ পড়লো বলেই কর্মচারীরা মনে করছেন।