টিকিট কালোবাজারি!!
নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর আকাশছোঁয়া মূল্যের কথা আর বলে লাভ নেই। সাধারণ মানুষের এখন বেঁচে থাকাটাই এক অবিশ্বাস্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে চাল-ডাল-নুন-তেল থেকে সবজি, আলপিন থেকে উড়োজাহাজ, সবকিছুর এখন আকাশছোঁয়া মূল্য। সমস্ত কিছুর দাম প্রতিদিন হু-হু করে বেড়ে চলেছে। সেই সাথে যেন পাল্লা দিয়ে কমছে মানুষের মূল্য। হ্যাঁ, এটাই এমন সমাজ ও জীবনের অভিজ্ঞতা। জিনিসের মূল্য প্রতিদিন বাড়ছে, অথচ মানুষের রোজগার প্রতিদিন কমছে। খরচ বাড়ছে, আয় কমছে। টানাটানি করে ও দু’জনের সংসার চালাতে এখন হিমসিম খেতে হচ্ছে আমজনতাকে।
আর যারা দিন এনে দিন খায়,তাদের কথা আর বলে লাভ নেই। মূল্যবৃদ্ধি এবং কালোবাজারি এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে মানুষের অবস্থা আরও কাহিল। সবাই সবকিছু জানে। কোথায় কী হচ্ছে? কেন হচ্ছে? অথচ কোনও নিয়ন্ত্রণ বা ব্যবস্থা নেই।এই কথাগুলি বলার একটাই কারণ, রাজ্যে ফের শুরু হয়েছে বিমানের টিকিট কালোবাজারি। খবরে প্রকাশ, বিমানের গ্রুপ টিকিট বুকিংয়ের নামে কম মূল্যের টিকিট কালোবাজারিতে চলে যাচ্ছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা পড়েছে মহাবিপাকে।অস্বাভাবিক চড়া মূল্যে বিমানের টিকিট নিতে হচ্ছে। একাংশ অসাধু ট্র্যাভেল এজেন্সি বিমানের টিকিট বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের জ্ঞাতসারেই গ্রুপ টিকিট নিয়ে আবার রমরমিয়ে কালোবাজারি শুরু করেছে।
সব থেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, বিমান টিকিটের কালোবাজারি প্রকাশ্যে চললেও, রাজ্য সরকার, রাজ্য পুলিশ প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করে চলেছে। নির্বিকার ডাবল ইঞ্জিন সরকারের বড় ইঞ্জিন কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তকারী এজেন্সিও।এই ধরনের কালোবাজারি এর আগেও হয়েছে।এ নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছিলো। মাঝে বেশ কয়েকবছর ধরে এই ধরনের কালোবাজারি বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি বিমানের টিকিট নিয়ে ফের কালোবাজারি বেশ রমরমিয়ে শুরু হয়েছে।বিমানযাত্রীর অস্বাভাবিক ভিড় বাড়লেই সক্রিয় হয়ে ওঠে কালোবাজারি চক্রগুলি। গ্রুপ টিকিট বুকিংয়ের নামে কালোবাজারি চক্রগুলি এক থেকে তিন মাস আগেই খুব কম মূল্যের একসাথে অনেক টিকিট ক্রয় করে রেখে দিচ্ছে।
যাত্রীর নাম ছাড়াই গ্রুপ টিকিট হিসাবে অসাধু চক্রগুলি প্রচুর বিমান টিকিট ক্রয় করে রেখে দিচ্ছে। যে টিকিটের মূল্য ২২০০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকার মধ্যে,সেই টিকিট অসাধু চক্রগুলি গ্রুপের নামে কিনে নিচ্ছে। ন্যূনতম ছয়টি টিকিট একসাথে নিলে একটি গ্রুপ হয়। ছয়টি টিকিটের জন্য একটি পিএনআর নম্বর দেওয়া হয়।পরবর্তী সময় নির্দিষ্ট দিনে যাত্রীর নাম ঢুকিয়ে কনফার্মড করা হয়। আর এখানেই চলে বড় ধরনের কালোবাজারি। টিকিট ক্রাইসিস দেখিয়ে তখন সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি অর্থ নিয়ে গ্রুপ টিকিটে নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
যাত্রীরাও নিরুপায়। আর তখন ২২০০ টাকার টিকিট কিনতে হয় ৬০০০ থেকে ৭০০০ টাকায়। কখনো আরও বেশি মূল্যে। এমন নয় যে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজসরকারের গোচরে নেই। সকলেই এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল। কিন্তু সকলেই নির্বিকার। এমনিতেই বিমান সংস্থাগুলির উপর সরকার ও প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এরা নিজেদের মর্জিমতোই সাধারণ মানুষের পকেট কাটে। এর উপর কালোবাজারিদের থাবা। সাধারণ মানুষ তাহলে যাবে কোথায় ?