টুনা আর মুরগি দিয়েই জন্মদিন পালন করবে বিশ্বের প্রবীণতম কুমির।
পালিত হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কুমিরের ১২০তম জন্মদিন। ক্যাসিয়াস নামের কুমিরটি অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের মেরিনল্যান্ড ক্রোকোডাইল পার্কে রয়েছে। চলতি সপ্তাহেই বিশ্বের এখনও পর্যন্ত জীবিত প্রবীণতম সরীসৃপটির জন্মদিন পালিত হবে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ অনুযায়ী নোনাজলের কুমিরটি লম্বায় প্রায় ১৮ ফুট। ১৮ ফুট বা ৬ মিটার লম্বা কুমিরের ক্ষেত্রে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কিন্তু এই বিশাল লম্বা কুমিরকে সাধারণ দেখতে পাওয়া যায় সমুদ্রের তটভূমি এলাকায়। মানুষের হেফাজতে থাকা অবস্থায় কুমিরের বিশাল দৈর্ঘ্য সচরাচর দেখাই যায় না। আনুমানিক ১২ থেকে ১৫ ফুটের মতো লম্বা হয় চিড়িয়াখানায় থাকা কুমিরগুলি। কিন্তু তার থেকেও প্রায় তিন ফুট বেশি লম্বা এই কুমির। ১৯৮৭ সাল থেকে গ্রিন আইল্যান্ডের মেরিনল্যান্ড ক্রোকোডাইল পার্কে রয়েছে কুমিরটি।মেরিনল্যান্ড ক্রোকোডাইল পার্ক কর্তৃপক্ষ জন্মদিনে ক্যাসিয়াসকে মুরগি ও টুনা মাছ দেবে।এই দু’টিই ক্যাসিয়াসের খুব পছন্দের খাবার। গবেষক গ্রায়েম ওয়েব বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলের ফিনিস নদী থেকে ১৯৮৪ সালে যখন কুমিরটিকে ধরা হয়, তখন সে আনুমানিক ৮০ বছর কাটিয়ে দিয়েছিল। সেই হিসাবে তার বয়স শতক ছাড়িয়ে গিয়েছে, সম্ভবত ১২০ বছরই হবে। টুডি স্কটের দাদা ক্যাসিয়াসকে ১৯৮৭ সালে গ্রিন আইল্যান্ডে নিয়ে এসেছিলেন।তিনিও জানান, গবেষকদের ধারণা অনুযায়ী কুমিরটির বয়স কমবেশি ১২০ বছর হবে। ক্যাসিয়াসকে দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। ক্যাসিয়াস কার্যত গ্রিন আইল্যান্ডের ভিভিআইপ। তাকে দেখতেও সাধারণ মানুষের মতো লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভিভিআইপিরা।যাদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, চিনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, থাইল্যান্ডের রাজা, অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।তবে ক্যাসিয়াসের এত সম্মান পাওয়ার আগে আরও একটি বয়স্ক কুমির ছিল। তার নাম মুজাই। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে গত বছরই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিল মুজাই। আর তারপর থেকেই ক্যাসিয়াসের কদর আরও বেড়েছে। মুজাই যখন মারা যায় তার বয়স ছিল ১০৫ বছর। সমাজ মাধ্যমে বরাবরই জনপ্রিয় ছিল মুজাই। কারণ তার স্বভাবটা ছিল না খিটখিটে। বিশেষ করে টিকটকে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল মুজাই। যখন ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে তার মৃত্যু হয় তখন কয়েক লক্ষ মানুষ তার মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়েছিল। কিন্তু মুজাইয়ের মৃত্যুর পরেই সবার নজরে চলে আসে ক্যাসিয়াস। আর তখন থেকেই তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। মুজাইয়ের মৃত্যুর এক বছর কাটতে না কাটতেই ক্যাসিয়াসের ১২০ তম জন্মদিন পালনে উদ্যোগ নিয়েছে গ্রিন আইসল্যান্ড চিড়িয়াখানা।ক্যাসিয়াস প্রচার এবং তার জন্মদিনকে ঘিরে যাতে কোন খামতি না থাকে তার জন্য খোদ আইসল্যান্ড প্রশাসনের নজরদারি চলছে।