ঠিকাদারের ভাইয়ের উপর প্রাণঘাতী হামলা মাফিয়াদের!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-
সরকার ও প্রশাসনের চরম নিষ্ক্রিয়তায় নিগো এবং জমি মাফিয়ারা গোটা রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন কায়েম করে নিয়েছে।সরকার ও প্রশাসন সব জেনেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।ফলে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।প্রতিদিনই রাজ্যের কোনও না কোনও জায়গা থেকে নিগো ও জমি মাফিয়াদের তাণ্ডব, ভয়ভীতি প্রদর্শন, প্রাণনাশের হুমকি এবং প্রাণঘাতী হামলার খবর আসছে।পুলিশ প্রশাসনের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এবার এমনই ঘটনা সামনে এসেছে ধলাই জেলার আমবাসা থেকে।নিগো মাফিয়াদের হাতে আক্রান্ত হলেন এক ঠিকাদারের ভাই। ঠিকাদারকে না পেয়ে ঠিকাদারের ভাইয়ের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় স্থানীয় দুই মাফিয়া। ঠিকাদারের ভাইকে অপহরণ করে তার উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।সব থেকে বিস্ময়কর ঘটনা হলো,ঠিকাদারের পিতা দুই মাফিয়ার নামধাম দিয়ে আমবাসা থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলেও, পুলিশ সেই অভিযোগ রাখেনি।শেষে ঠিকাদারের পিতা জেলা পুলিশ -সুপারের কাছে অভিযোগ জানান। – পরবর্তীকালে থানা অভিযোগ রাখে।কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ঠিকাদার এবং তার পরিবার।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ সেপ্টেম্বর।সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জাতীয় সড়কের কিছু অংশ মেরামতের জন্য পূর্ত দপ্তর থেকে টেন্ডার আহ্বান করা হয়।সেই টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সড়ক মেরামতির কাজটি পান সৌরজিৎ পাল নামে আমবাসার এক ঠিকাদার।কিন্তু সৌরজিৎবাবুকে ওই কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য সন্তু ঘোষ নামে এক নিগো মাফিয়া বারবার চাপ এবং হুমকি দিতে থাকে।কিন্তু সৌরজিৎ পাল এতে রাজি না হওয়ায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্তু ঘোষ এবং আরও৷ কয়েকজন মাফিয়া, ঠিকাদার সৌরজিৎ পালের আমবাসাস্থিত তাদের নিজস্ব স-মিলে এসে হাজির হয়। মাফিয়ারা স- মিলে এসে ভাঙচুর চালায় এবং ঠিকাদার সৌরজিৎ পালকে না পেয়ে তার ছোট ভাই সত্যজিৎ পালের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়। তাকে স-মিল থেকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যেতে থাকলে মিলের অন্য কর্মীরা এগিয়ে আসেন।মাফিয়ারা সত্যজিৎ পালের মাথায় কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাত করে এবং ব্যাপক মারধর করে। মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম হয়ে সত্যজিৎ পাল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।তাকে মৃত ভেবে শেষে মাফিয়ারা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। সাথে সাথে গুরুতর আহত সত্যজিৎ পালকে মিলের কর্মীরা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার পরই আমবাসা থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু আমবাসা থানার পুলিশ সেই অভিযোগ রাখেনি। শেষে আহত সত্যজিৎ পালের পিতা সুভাষ চন্দ্র পাল আগরতলা থেকে ফিরে রাতে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন।এসপির নির্দেশে সুভাষবাবু পরদিন আবার আমবাসা থানায় বিস্তারিত উল্লেখ করে সন্তু ঘোষ এবং বাবুল সাহা নামে দুই মাফিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্তু ঘোষ বাম আমলেও নিগো বাণিজ্যের সাথে যুক্ত ছিল।শুধু তাই নয়, বাম আমলে কট্টর ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিল। সরকার পরিবর্তনের পর বেশ কিছু সময় এলাকাছাড়া ছিল। পরবর্তীকালে জামা পাল্টে গেরুয়া শিবিরে শামিল হয়েছে। গেরুয়া শিবিরে শামিল হয়েই ফের নিগো বাণিজ্যের হর্তাকর্তা হয়ে ওঠে। গোটা ধলাই জেলায় এরাই এখন নিয়ন্ত্রণ করছে সবকিছু। সরকার ও প্রশাসন সব জানে। কিন্তু সরকার ও প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। আর এই সবের কারণে শাসক দলের উপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে।