ডাবল ইঞ্জিনে এ কোন ছবি!!!
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধিঃ অমরপুরঃ পূর্ত কর্তাদের চরম গাফিলতির কারনে অমরপুর শহরের সাথে মৈলাক, মালবাসা গ্রামের বূরবুরিয়া ও গামাকো বাড়ির বিস্তৃর্ণ এলাকার জনগণের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। মৈলাক গোমতী নদীর উপর ষ্টিল ব্রীজ নির্মান কাজ সাড়ে তিন বছরেও সমাপ্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট নির্মান কাজের বরাত পাওয়া ঠিকেদার। শুধু তাই নয়,পূর্ত কর্তাদের সিদ্ধান্ত প্রদানে চরম উদাসিনতা, এবং ঠিকেদারের রানিং বিল মিটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অযথা গড়িমসির কারনেই নির্মান কাজ শম্ভুক গতিতে চলছে বলে অভিযোগ । আর তার মাশুল গুনছেন এলাকার জনগণ। চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে অবরুদ্ধ জীবন যাপন করতে হচ্ছে মৈলাক, মালবাসা, বুরবুরিয়া,গামাকো বাড়ির কয়েক হাজার পরিবারের লোকজন এবং তাদের স্কুল পড়ুয়া কচিকাঁচা শিশু ও কিশোরদের।
কেউ অসুস্থ হলে কিংবা কোন সন্তান সম্ভবা জননীকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে আনতে হলে অনেকটা ঘুর পথে বীরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের নরক গুলজারে পরিনত হয়ে থাকা রাস্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আনতে হচ্ছে। আর স্কুল পড়ুয়া কচিকাঁচা শিশু,কিশোর সহ অনান্য ছাত্রছাত্রীদের এমনকি এলাকার মহিলা ও বৃদ্ধদের পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় চেপে গোমতী নদী পাড়াপাড় করে অমরপুর শহরে আসাযাওয়া করতে হচ্ছে। আর নৌকা দুর্ঘটনা তো নিত্য নৈমিত্তিক ব্যপার। বিগত সাড়ে তিন বছরে ওটা মানুষের গা সওয়া হয়ে গেছে এবং ভাগ্যের লিখন বলে এলাকাবাসী মনে করছে। স্টিল ব্রীজ নির্মান সাপেক্ষে গোমতী নদীর উপর একটি অস্থায়ী সেতু কিংবা নিদেন পক্ষে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মান করে দিলেও মানুষের এত দুর্ভোগ পোহাতে হতোনা।
কিন্তু অমরপুর পূর্ত দপ্তরের করিৎকর্মা ইঞ্জিনিয়ার বাবুদের মাথায় বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। আরও ভয়ঙ্কর বিষয় হল বিস্তৃর্ণ এলাকার গ্রাম বাসিদের জন্য নদী পারাপারের নৌকাটি চালানোর কোন মাঝি পর্যন্ত নিয়োগ করা হয়নি। যারা নৌকায় নদী পারাপার করেন, তারা নিজেরাই নৌকা চালান। এবিষয়ে মৈলাক গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও প্রশ্ন চিহ্নের মুখে। গত সাড়ে তিন বছর যাবতই গ্রাম গুলির বাসিন্দারা এক দুর্বিসহ জীবনযাপন করে আসছেন। কবে নাগাদ গোমতী নদীর উপরের ষ্টিল ব্রীজ নির্মান কাজ শেষ হবে, তা পূর্ত কর্তারাও হলপ করে বলতে পারছেন না। নির্মান কাজের বরাত পাওয়া ঠিকেদারের ম্যানেজার পর্যন্ত নির্মান কাজ সম্পন্ন হওয়ার সঠিক দিনতারিখ জানাতে ব্যার্থ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সনে জোট আমলে উল্লিখিত গ্রাম বাসিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে মৈলাক খেয়া ঘাটে গোমতী নদীর উপর কাঠের সেতু নির্মিত হয়। আর বামেদের পঁচিশ বছরের মধ্যে কুড়ি বছরই ওই কাঠের সেতুটি একাংশ বাম নেতা, ঠিকেদার ও পূর্ত কর্তাদের কাছে কামধেনুতে পরিনত হয়েছিল । বামেদের শেষ দশ বছরে ওই কাঠের সেতু মেরামতির নামে যত কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে, তা দিয়ে মৈলাক খেয়া ঘাটে গোমতী নদীর উপরে দুই দুটি পাকা সেতু নির্মাণ করা যেত বলে পূর্ত দপ্তরের প্রকৌশলীদেরই অভিমত। ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে স্থানীয় অন্য কয়েকটি প্রতিশ্রুতির মধ্যে মৈলাক খেয়াঘাটে গোমতীর উপর পাকা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও ছিল বর্তমান শাসকদলের নেতৃত্বের। কাজ শুরু হলেও তা এখনো বিশ বাও জলের তলায় রয়ে গেছে। ফলে এলাকার মানুষ দারুণ ক্ষুব্দ। তারা যথাযথ জবাব দেয়ার জন্য কোমর বেঁধেই তৈরী হচ্ছেন বলে খবর।