ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যের আঁশ!!

 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যের আঁশ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন :-বর্তমানে সারা বিশ্বের প্রতিদিনে খাদ্য তালিকা খাদ্যের আঁশের ওপর বেশ জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ বহু সমীক্ষার পর দেখা গেছে, খাদ্যের আঁশ দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়, পাকস্থলিতে বেশিক্ষণ থাকে, কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লাইসেরাইডের মাত্রা কমায়, ওজন ও রক্তচাপের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এই কারণে প্রাচীন সমাজে ডায়াবেটিস রোগীদের অধিক পরিমাণে আঁশ ও স্বল্প পরিমাণে সহজ শর্করা দিয়ে চিকিৎসা করা হতো।
খাদ্যের আঁশ দু’ধরনের হয়।দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়।দ্রবণীয় আঁশ হল: বেসন, পেপটিন (যা ফলের খোসায় থাকে), গুয়ার গাম (এক প্রকার শিম বীজের নির্যাস)।অদ্রবণীয় আঁশ হল: সেল্যুলোজ (যা সবজি ও শমাজাতীয় খাবারে থাকে)। যেমন গম বা ভুট্টার খোসা, লাল চাল, আঁশযুক্ত সবজি ও খোসাসহ ফল। খাদ্যের আয়তন বৃদ্ধিতে অদ্রবণীয় আঁশ বেশ সহায়ক।
উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার স্বকীয়ভাবে দেহে শোষিত হয়ে ক্যালরি কমিয়ে মানুষকে কৃশকায় রাখতে সাহায্য করে। কারণ আঁশযুক্ত খাবার খেতে সময় বেশি লাগে বলে কম খেয়ে তৃপ্তি আসে। পাকস্থলী ধীরে ধীরে শূন্য হয় বলে রুগীদের অতিরিক্ত খাবারের আগ্রহ কমে যায়।
রাসয়ানিক আঁশের চেয়ে উদ্ভিজ আঁশ
খুব বেশি উপকারী বা অস্তিত্বসম্পন্ন। যেমন, ভূষি ও ভূষিযুক্ত শস্য, ভুট্টা, শুকনো শিম, মটরশুঁটি, বরবটি, ডাল, ভুষিযুক্ত পাউরুটি (ব্রাউন ব্লেড), লাল চাল, শুকনো ফল যেমন বাদাম, খেজুর, খোরমা, শাক, খোসাসহ আলু, তাজা ফল ইত্যাদি।বেশ কয়েকটি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে উচ্চ আঁশ কাজ করে।যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, কোলন ও রেকটামের ক্যানসার, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, গলস্টোন, ওজনাধিক্য, দন্তক্ষয় ইত্যাদি। উচ্চ আঁশ সুস্বাদু, সস্তা ও পুষ্টিকর।আমরা সাধারণত যে ভাত খাই তা খুবই মসৃণ। এজন্যে লাল চাল খুবই ভাল। এতে প্রচুর আঁশ রয়েছে। মূল জাতীয় সবজির মধ্যে গাজর, আলু, মিষ্টি আলু, মূলা, শালগম, কচু এগুলোতে আঁশ বেশি থাকে। শস্য ও ডাল হল বীজ জাতীয় খাবার। এগুলোকে প্রাকৃতিক আঁশ বেশি থাকে। আটার ভুষিযুক্ত পাউরুটিতে অল্প পনির ও সবজি দিয়ে স্যান্ডউইচ করলে তা বেশ আঁশযুক্ত খাবার হবে।
বিভিন্ন ধরনের আঁশ দেহে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে।
২০২১ সালে লন্ডনের ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ পাবলিকেশনের ডায়টারি রেফারেন্সভ্যালুতে গাইড জেনি স্যানমন খাদ্যের আঁশের একটি নতুন নাম দেন। সেটা হল এনএসপি (Non starch polysaccharides)। এর সম্পর্কে সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগের একটি নিবন্ধে চমৎকার একটি উপসংহার পাওয়া যায়।
প্রতিদিন নিয়মিত আঁশ গ্রহণ স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল।
এনএসপি রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
আঁশের ভাল উৎস গমের ভুষিতে থাকে ক্যালশিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও কপার।
যদি প্রতিদিন ১২ গ্রামের কম এনএসপি গ্রহণ করা হয়, তাহলে মলত্যাগে বেশ অসুবিধা হয়। যার সঙ্গে জড়িত রেকটাম ক্যানসার এনএসপি রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে।
প্রতিদিনের সম্পূর্ণ খাবারের মধ্যে ৩২ গ্রামের মতো নন স্টার্চ পলিস্যাকারাইডস্ থাকা উচিত।
ভারতে চলমান ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলার মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আঁশযুক্ত খাবারের ব্যবহার যে এই রোগকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে তা বলাই বাহুল্য। ইদানীং চিকিৎসকরা আঁশ যুক্ত খাবারের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.