তিন দলীয় বৈঠক

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

চোখ ও কানের মধ্যে দূরত্ব বেশি নয়। কিন্তু মানব দেহের এই দুই অঙ্গের কার্যপ্রণালী তে বিস্তর ফারাক রয়েছে। সেটা আমরা সকলেই জানি। তবে চোখে দেখা যে কোনও বিষয়কে আমরা খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বাস করতে পারি। কিন্তু রাজনীতিতে চোখে দেখার অন্য অর্থ রয়েছে। রাজনীতিতে যা খালি চোখে দেখা যায়, তা ধ্রুব সত্য বলে বিশ্বাস করে নিলে নির্ঘাত ঠকতে হবে। কেন না, রাজনীতির অঙ্গনে প্রতিদিন চোখের সামনে যা দেখা যায়, তা সবগুলো সঠিক নয়। পিছনে থাকে অন্য খেলা। অন্য অঙ্ক। রাজ্যে বর্তমানে দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। আর এই উপনির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় প্রতিদিনই নানা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক কর্মসূচি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে রাজ্যেও বিজেপি বিরোধী জোট গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। এমনই একটি প্রক্রিয়ার ছবি বুধবার রাজ্যের প্রায় সকল সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের প্রধান তিন বিরোধী দলের নেতারা একজায়গায় বসে আলোচনা করছেন। এমন ছবি আগেও প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু বুধবার প্রকাশিত ছবিতে কুশীলবদের সংখ্যাটা বেশি এবং বৈঠকের স্থানটাও ভিন্ন। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, উপনির্বাচনে যাতে বিরোধী ভোট ভাগ না হয়, তারজন্য তিন বিরোধী দল একজোট হয়ে বাম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করবে। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার তিন দলের নেতারা পুনরায় বৈঠক করেছেন। কিন্তু প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই বহু চৰ্চিত বৈঠকও নিষ্ফলা হয়েছে। অর্থাৎ বৈঠকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়নি। আগেও একবার এমন বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকের পরদিন দেখা গেল সিপিএমকে এক তরফাভাবে দুই কেন্দ্রে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে। এই নিয়েও জল ঘোলা কম হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজনীতিতে লাভ-ক্ষতির অঙ্ক বড় জটিল। যে যা কিছুই করে, সবই লাভের অঙ্ক মাথায় রেখেই। তাই তিন দল একসাথে বৈঠক করলেই, সব অঙ্ক মিলে যাবে? এমন ভাবলে ভুল হবে। ধরে নেওয়া যাক, উপনির্বাচনে দুই কেন্দ্রে মথা ও কংগ্রেস দল সিপিএমকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে প্রচারে শামিল হলো। তাতে মখা ও কংগ্রেসের কি লাভ হবে? আগামী লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম দল কি দুইটি আসনের মধ্যে একটি মথা অন্যটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেবে? মূল প্রশ্নটি এখানে। যদিও বর্তমানে রাজ্যে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি বলতে সাইনবোর্ড ছাড়া কিছুই নেই। বরং সাংগঠনিক শক্তিতে অনেক বেশি শক্তিশালী তিপ্ৰা মথা। লোকসভায় অন্তত একটি আসন (পূর্ব) জয়ের ক্ষমতা রাখে মথা। এডিসি তাদের হাতে। কিন্তু সিপিএম কি পূর্ব আসন মথাকে ছাড়বে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজনীতির এই লাভ-ক্ষতির হিসাব যখনই মিলে যাবে, তখনই জোট সমীকরণ গড়ে উঠতে পারে। নতুবা এমন ফটোসেশন চলতেই থাকবে। এতে সমাধান বেড়িয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। এজন্যই রাজনীতির ময়দানে যা দেখা যায়, তা সবই সঠিক নয়। এখানে অনেক কিছু মানুষকে দেখানো হয়। এই দেখানোর পিছনে থাকে অন্য কিছু। তবে মানুষ সব কিছুই বুঝে। বুঝে বলেই রাজনৈতিক দল ও নেতাদের দেখানো ছবিতে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে না। কারণ, জনগণ অনেক বেশি সচেতন।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

22 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

22 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

22 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

22 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

2 days ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

2 days ago