বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
ত্রিপুরাহীন সিপিএম পলিটব্যুরো।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-সিপিএম পলিটব্যুরো থেকে বিদায় নিচ্ছে ত্রিপুরা। রাজ্য থেকে নতুন কোনও নেতার পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার আশা ক্ষীণ। বরং পার্টি কংগ্রেসে ত্রিপুরার একমাত্র পলিটব্যুরো সদস্য, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার পলিটব্যুরো থেকে বিদায় নিচ্ছেন। এ খবর রাজ্যে আসার পর বিষণ্ণ ত্রিপুরার সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব। ত্রিপুরাকে বঞ্চিত করেছে পলিটব্যুরো অথচ ২০২৮ সালে ত্রিপুরায় ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের স্বপ্নে বিভোর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
আগামী ২ থেকে ৬ এপ্রিল তামিলনাড়ুর মাদুরাইতে হবে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। এবারের পার্টি কংগ্রেসে ৭৫ বছরের বেশি বয়সিদের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার নীতি মেনেই নতুন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হবে। এ লক্ষ্যে ২০২২-এর পার্টি কংগ্রেসে দলীয় সংবিধান সংশোধন করেছিল সিপিএম। পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের অবসরের সময়সীমা ঠিক হয়েছিল।
৭৫ বছরের বয়সসীমা মেনে চললে এপ্রিলের পার্টি কংগ্রেসে এক সঙ্গে প্রকাশ কারাত, বৃন্দা কারাত, মানিক সরকার, সুভাষিণী আলি, পিনারাই বিজয়ন, সূর্যকান্ত মিশ্র, জি রামকৃষ্ণণের মতো অন্তত সাতজনের একই সঙ্গে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার কথা। যদিও তিন বছর আগের পার্টি কংগ্রেসে পিনারাই বিজয়নের জন্য ব্যতিক্রম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএম।৭৫ বছরের বেশি হলেও একমাত্র বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী, এই যুক্তিতে পলিটব্যুরো সদস্যপদ রাখা হয়।এদিকে কেরলে আগামী বছরই ভোট। এই অজুহাতে আবারও কি বিজয়ন পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে থাকছেন? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সদ্যসমাপ্ত ত্রিপুরা রাজ্য সম্মেলনে অভিজ্ঞতার নিরিখে মানিকবাবুকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। যদিও মানিকবাবু দলের সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন।
সিপিএম সূত্রে খবর, তিন বছর আগেই পলিটব্যুরো কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্য কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বয়সনীতি চালু করেছে সিপিএম। এই নিয়ম অনুযায়ী আসন্ন পার্টি কংগ্রেসে দলের শীর্ষে প্রজন্ম বদলের পথে যাচ্ছে সিপিএম। তাই দলের অধিকাংশ শীর্ষ নেতা এবার পদ থেকে অব্যাহতি নেবেন এমন পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে দলের পলিটব্যুরো। এ লক্ষ্যে কলকাতার নিউ টাউনে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক প্রতিবেদন গৃহীত হয়েছে।
সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির এক শীর্ষ নেতৃত্ব জানান, বর্তমানে পলিটব্যুরো সদস্য সংখ্যা ১৬। তবে ত্রিপুরা থেকে গত ২০ বছরে মানিক সরকার ছাড়া দ্বিতীয় ব্যক্তিকে পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়নি। এমনকী কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত ত্রিপুরা। এখন দলের নিয়ম অনুযায়ী পলিটব্যুরো থেকে বিদায় নিবেন মানিকবাবু। অবাক করার বিষয় হলো পলিটব্যুরো সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও যোগ্যতার মাপকাঠি না থাকলেও ত্রিপুরা থেকে দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তিকে পলিটব্যুরো সদস্য না করার পথেই হাঁটছে কেন্দ্রীয় কমিটি। যদিও সারা দেশের সাথে ত্রিপুরাতেও শীর্ষনেতৃত্ব সংকটে ধুঁকছে ত্রিপুরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে ত্রিপুরা থেকে পলিটব্যুরো সদস্য নির্বাচিত যদি না হয়। তবে পলিটব্যুরো বৈঠকে অংশ নিতে পারবে না ত্রিপুরা। এমনকী দলের পার্টি কংগ্রেসে ও রাজ্য রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে না। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এই বঞ্চনার দৌলতে সিপিএম ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভচরমে উঠেছে।
সিপিএম সূত্রে খবর প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রয়াণের পর কে হবেন দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক? এ নিয়ে সারা দেশের সাথে ত্রিপুরায় রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যেই আলোচনা হচ্ছে। তবে ৭৫ বছরের নিয়ম মানা হলে এম এ বেবি, বি ভি রাঘভুলু, মহম্মদ সেলিম, এ বিজয়রাঘবনরা সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে চলে আসবেন। তাই আসন্ন পার্টি কংগ্রেসে ৭৫ বছরের বয়সসীমা শিথিল করার জন্য পার্টি কংগ্রেসে চাপ তৈরি হবে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
এদিকে দলের এক পলিটব্যুরো সদস্য জানান নতুন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিই সিদ্ধান্ত নেবে নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন। এদিকে সম্প্রতি সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক প্রকাশ কারাত আজ পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক খসড়া প্রকাশ সাংবাদিকদের জানিয়েছে তিন বছর আগের পার্টি কংগ্রেস থেকে গৃহীত সিপিএমের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কোনও পরিবর্তন এখন পর্যন্ত হয়নি। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার সিদ্ধান্তে অনড় সিপিএম। পাশাপাশি নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি বাড়ানোয় মন দেবে সিপিএম। এমনকী বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে এককাট্টা করে-বিজেপির বিরুদ্ধে বিকল্প তৈরির চেষ্টা করবে সিপিএম। উল্লেখ্য, পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক খসড়া জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রায় ৭৮-এর বেশি সংশোধনী জমা পড়েছিল। এই সংশোধনীর পরই রাজনৈতিক খসড়া প্রকাশ করছে সিপিএম।