থমথমে মণিপুরে নিহত ৫৪

 থমথমে মণিপুরে নিহত ৫৪
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গত কয়দিনের জাতিগত হানাহানির পর আজ সরকারীভাবে প্রকাশ্যে এলো মণিপুরের হিংসায় মৃত্যুর সংখ্যা। সরকারী তথ্যে আজ বলা হয়েছে এই হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে অবশ্য মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। শনিবারে ইম্ফল উপত্যকায় জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। হাটবাজার এবং দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে এবং রাস্তার উপরেও যানবাহন চলাচল করছিল। বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। যে সকল এলাকায় উগ্র জনতা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছিল সেখানে রোড ব্লক এবং কর্ডন বসানো হয়েছে।

Manipur Issues "Shoot-At-Sight" Orders In "Extreme Cases" Amid Violence

সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাড়ির বাইরে বের হতে দেখা গেছে। অশান্ত রাজ্য ত্যাগ করার উদ্দেশে ইম্ফল বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছে ছাত্রছাত্রী সহ বিপুল সংখ্যক মানুষ। এদিকে আসাম রাইফেলসের একটি কলামকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইম্ফলের বিভিন্ন অবস্থান থেকে নাগা ছাত্রছাত্রীদের তুলে নিয়ে কোহিমা ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয়রত মানুষ জানিয়েছেন, দাঙ্গা চলাকালীন সময়ে বহু গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও বিক্ষিপ্তভাবে এখনও হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখতে আরও বেশি সংখ্যক সেনা জওয়ান পাঠানো হয়েছে রাজ্যটিতে। বর্তমানে ভারতীয় সেনা, আধা সামরিক বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বাহিনীর প্ৰায় ১০,০০০ সদস্য সদস্য সেখানে মোতায়েন রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৩,০০০ দাঙ্গাপীড়িত মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, ঘোরে, কাকচিং এবং কাংপোকশি জেলা থেকেই অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অবরোধ এবং অগ্নি সংযোগের খবর পাওয়া গেছে। তবে সেই ঘটনাগুলো শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণে এসেছে সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা। প্রসঙ্গত ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মৈতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি করেছ যে তাদের তপশিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধিতা করেছে স্থানীয় আদিবাসীরা। এই আবহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বুধবারে একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। পরবর্তী সময় আদিবাসী বনাম মৈতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও।

Manipur violence: As death toll reaches 52, CM Biren Singh warns of strict  action against those disturbing law and order | North East India News,The  Indian Express


এই সুযোগে বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও সক্রিয় হয়ে উঠে এবং অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। অবশ্য কঠোরভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে সেখানে। মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের সাথে মণিপুরের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রয়োজনে সমস্ত ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন অমিতশাহ।এদিকে শুক্রবার থেকে মণিপুরগামী সমস্ত ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের এক মুখপাত্র এই তথ্য দিয়ে বলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আবার ট্রেনযাত্রা শুরু হবে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুসারে। কলকাতা অফিসের সংযোজন : মণিপুরে আটকে থাকা মানুষজনকে উদ্ধারের জন্য এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ট্যুইট করে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার মমতা ট্যুইটে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে।যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্যুইটে তিনি জানিয়েছেন, আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার করতে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, মণিপুর থেকে যারা বাংলায় ফিরে আসতে চান তারা ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে সাহায্য পাবেন। মণিপুর সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Manipur Violence News LIVE: BJP MLA brutally attacked, I-T officer killed,  sporadic violent events witnessed on Friday | Mint


তপশিলি জাতির মর্যাদা পেতে চেয়ে মৈতেই জনজাতির বিক্ষোভে কয়েক সপ্তাহ ধরে অশান্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সেখানে। রাস্তা শুনশান, অশান্তি এড়াতে পথে চলছে সেনাবাহিনীর টহল। দেখামাত্র গুলীর নির্দেশ জারি রয়েছে। বন্ধ ট্রেন চলাচল। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৫৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রাণহানির আশঙ্কায় মানুষজন রাজ্য ছেড়ে পালাচ্ছেন আসাম ও অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্যে। মণিপুরে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করে সেখানকার আইন শৃঙ্খলার ভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। আর এই পরিস্থিতিতে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.