কৃষক আন্দোলন যেন মোদি সরকারের আমলে এই দেশের একটি বাৎসরিক ঘটনা হইয়া দাঁড়াইয়াছে। চলিত বৎসরের ফেব্রুয়ারীতে একবার কৃষকেরা আন্দোলনমুখী হইয়া উঠিয়াছিলেন, কিন্তু নানা কারণে তাহারা ঘরে ফিরিয়া গিয়াছিলেন।বৎসরের শেষ লগ্নে ফের পথে নামিয়াছেন। হরিয়ানায় পুলিশের সহিত একদফা সংঘাত তাহাদের হইয়া গিয়াছে,এক পরেও অভিযানের আন্দোলনসূচি তাহারা লইয়াছেন। কৃষকদিগের মতে,বারবার সময় চাহিয়াও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার ডাক পাইতেছেন না।অতএব পথে নামিতেই হইতেছে। আন্দোলনকারী কৃষকেরা মনে করিতেছেন,প্রধানমন্ত্রী মোদি কৃষকের সঙ্গে কথা বলিবার মেজাজে নাই।
অনুমান করা যায়, আন্দোলনমুখী কৃষকদিগের মেজাজও এই সময়ে ২০২০-২১ এর মতনই রহিয়াছে।প্রায় এক বৎসরের অধিক কাল ধরিয়া পথে বসিয়া আন্দোলন করিয়া কৃষকেরা তিনখানা কৃষি বিল বাতিল করাইয়া ঘরে ফিরিয়াছিলেন।তবে তাহাদের অন্যান্য আর্থিক দাবিদাওয়া মিটে নাই।সেই দাবি লইয়া বছর বছর আন্দোলনমুখী হইয়া থাকেন কৃষকেরা। ভারতবর্ষে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করিয়া দাবি আদায়ের ঘটনা নতুন বা স্বল্প নহে।কিন্তু দাবি আদায়ের জন্য কৃষক আন্দোলনের মতন এতো দীর্ঘ আন্দোলন আর নাই।কৃষি সংক্রান্ত তিনখানা বিলকে কৃষকেরা কৃষক স্বার্থ বিরোধী কালা আইন বলিয়া চিহ্নিত করে এবং বিল প্রত্যাহারের দাবিতে ২০২০ সালের ৯ আগষ্ট প্রথম রাস্তায় নামেন।
সরকার এই আন্দোলন গ্রাহ্য করিতে চাহে নাই এবং তিনখানা কৃষি বিল সংসদে পাস করাইতে অটল মনোভাব বজায় রাখিয়া চলিতে থাকে।ফলে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা যেমন বাড়িতে থাকে, তেমনি বাড়িয়া চলে আন্দোলনের তেজ।বৎসরের ছয় ঋতু আন্দোলনকারীরা পথেই কাটাইয়া দিলেন ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।অর্থাৎ এক বৎসর চার মাস দুই দিন ধরিয়া আন্দোলনকারীরা রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে পড়িয়া রহিলেন যতক্ষণ পর্যন্ত না সরকার তিন বিল প্রত্যাহার করিল।
কিন্তু সেই দফায় কৃষকদের সকল দাবি পূরিত হয় নাই। সরকার কৃষকদের দাবি সকলের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে এবং দাবি মিটাইবার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ২০২১-এর পর আরও তিন বৎসর অতিক্রান্ত।
এইবার কৃষকেরা ঋণ মুকুব এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তাকে প্রধান দাবি করিয়া সামনে লইয়াছেন। ইহার বাইরে কৃষকদিগের জন্য পেনশন,২০২০-২১ সালের আন্দোলন চলাকালে তাহাদের বিরুদ্ধে যে সকল মামলা দায়ের হইয়াছিল সেই সকল মামলা প্রত্যাহার, বিদ্যুতের মাসুল ইত্যাদি দাবি রহিয়াছে।সর্বোপরি ২০২১ সালে লখিমপুর খেরি সহিংসতায় নিহত কৃষকদের জন্য ন্যায় বিচারের দাবি করিতেছেন কৃষকেরা। প্রধানমন্ত্রী মোদির সহিত সাক্ষাৎ প্রার্থী কৃষকেরা এই দফায় ট্রাক্টর কিংবা নিজ যানবাহন আনেন নাই।১০১ জন কৃষকের একটি মিছিল লইয়া তাহারা দিল্লী অভিযান করিতেছেন, এমনই ঘোষণা দিয়াছেন আন্দোলনকারী নেতারা।
তবে ২০২০ সালের মতন এই দফায়ও পুলিশ প্রশাসন কৃষকদের যাত্রা বা রাস্তায় নামিয়া আসার বিপক্ষে অবস্থান লইয়াছে।পুলিশের কড়া অবস্থানে কৃষক জমায়েত যাতে না হয় সেই জন্য প্রথম হইতেই নানান বিধি ব্যবস্থা আরোপ হইয়াছে।যেমন আম্বালা সহ হরিয়ানা সীমান্তের ১১টি গ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছে। মোবাইলে এসএমএস পরিষেবা বাতিল করিয়া দিয়াছে হরিয়ানা সরকার। সরকার যে আলোচনার দরজা সহজে খুলিয়া দিবে না বা পুলিশও যে কৃষক আন্দোলনকারীদের রাস্তায় থাকিতে দিতে চাহে না তাহা স্পষ্ট বুঝা গেল শুক্রবারে। দিল্লী অভিযানে হরিয়ানা সীমান্তে পুলিশ তাহাদের পথ অবরোধ করিয়া কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে।ইহাতে ১৬ জন কৃষক আহত হইয়াছে। চার কৃষকের আঘাত গুরুতর।পুলিশের এই ধরনের ভূমিকায় কৃষক আন্দোলনের নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিয়াছেন।তাহারা বলিয়াছেন, শুক্রবারের ঘটনা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আসল স্বরূপ জনসমক্ষে লইয়া আসিয়াছে।মানুষ পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ।
অপরদিকে পুলিশ বলিতেছে কৃষক আন্দোলনকারীরা আইন ভঙ্গ করিতেছেন। তাহারা আইন মানিতেছেন না,অগত্যা পুলিশকে কঠিন ভূমিকা গ্রহণ করিতে হইয়াছে।বাস্তব ঘটনা যাহাই হউক,দেশের উত্তর প্রান্তে এক ঝঞ্ঝা ফের দানা বাঁধিতেছে,তাহা স্পষ্ট।উত্তর ভারতের কৃষক আন্দোলনকে রুখিয়া দিতে মোদি সরকার এবং ডবল ইঞ্জিনের রাজ্য
সরকারগুলি ২০২০-২১ সালে কোনও কসুর ছাড়ে নাই। কিন্তু গণতান্ত্রিক এই আন্দোলনের কাঠিন্যের সামনে শেষ পর্যন্ত সরকারকে দরজা খুলিতে হইয়াছিল। সরকারের মেজাজ মর্জি দেখিয়া এইবারও আলোচনার দরজা যে সহজে খুলিবে না দিল্লীর কেন্দ্রীয় সরকার তাহা অনুমান করা যাইতেছে।তবে কৃষকদিগকে তীব্র শীত-বর্ষায় রাজপথে বসাইয়া রাখিয়া রাজকার্য পরিচালনা রাজপুরুষদিগের জন্য শোভা পায় না।কৃষক এই দেশে অর্থনীতির ভিত্তি। যাহাদের আমরা অন্নদাতা বলিয়া থাকি, তাহাদের প্রতি একটা আলাদা আবেগ প্রতিটি দেশবাসীর হৃদয়ে ক্রিয়াশীল।দেশের মানুষ তাই আরও একটি ২০২০-২১ এর কৃষক আন্দোলন দেখিতে চাহিবে না।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…