দলত্যাগীদের মানুষ ক্ষমা করবে না, কৈলাসহরে বললেন দীপা!!
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। বৃহস্পতিবার কৈলাসহরে নির্বাচনী প্রচারে এসে কংগ্রেসের পালে হাওয়া দিলেন কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাসমুন্সি। এই কেন্দ্রে বিজেপি র প্রার্থীকে কটাক্ষ করে বলেন, দলত্যাগীদের মানুষ ক্ষমা করে না। তাঁর এই বক্তব্য যে নিজ দলের নেতাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়, সম্ভবত তা তিনি ভুলে গেছেন। বৃহস্পতিবার কৈলাসহর বিধানসভার বাবুর বাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় কংগ্রেস ও সিপিআইএম দলের যৌথ নির্বাচনী জনসভা। জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাস মুন্সী। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জামান, কংগ্রেস নেতা বাপ্টু চক্রবর্তী, সিপিআইএম মহকুমা সম্পাদক বিশ্বরূপ গোস্বামী, সিপিআইএম জেলা কমিটির সদস্য ইনুচ মিয়া খাদিম সহ কংগ্রেস ও সিপিআইএম দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৈলাসহর কেন্দ্রের প্রার্থী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা বলেন, আজ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুটি দল হাত মিলিয়েছে মানুষের জন্য। আমরা রাজনীতি করি দেশের স্বার্থে মানুষের স্বার্থে। তিনি বলেন, পাত্রের একটি ভাত টিপলে বুঝা যায় সারা পাত্রের ভাতের কি অবস্থা। বর্তমানে কৈলাসহরের যে অবস্থা সারা রাজ্যের একই অবস্থা। বিজেপি দল দিকে দিকে আক্রমণ করেছে। আমাকে তিনবার আক্রমণ করা হয়েছে। এত নিরাপত্তা থাকার পরও। সাধারণ মানুষের কি অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়। সবাই মিলে এই কেন্দ্রে বিজেপি দলের জামানত বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বিজেপি দল এই বিধানসভা নির্বাচনে দশটির নিচে আসন পাবে। সরকার প্রতিষ্ঠার পর ত্রিপুরার প্রত্যেকটি জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করব। হেলিকপ্টারে বস্তা বস্তা নিয়ে আসছে বিজেপি নেতারা। এলাকায় পাহারা দিতে হবে।
জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাস মুন্সী বলেন, এখানে শিক্ষা নেই, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ২০১৩ সালের তিনি ত্রিপুরায় এসেছিলেন। তখন আর এখনের মধ্যে তফাৎ হচ্ছে, এখন আগরতলা কংক্রীটের শহরে পরিণত হয়েছে। আর মানুষের চোখে মুখে ভয়, আর সন্ত্রাস দেখেছি। বিজেপি এই আসনে কোন প্রার্থী পাচ্ছিল না। তাই বিধায়ককে নিজের দলে নিয়ে প্রার্থী করেছে। তিনি বলেন, ভোটে জেতার জন্য দল পাল্টানো ব্যক্তিকে মানুষ কোনদিন ক্ষমা করবে না। ত্রিপুরার মানুষ এবার পরিবর্তন চাইছে। এবার বাম কংগ্রেসের সরকার হবে। অনেক ভয় দেখানো হয়েছে। ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। এবার আপনারা নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারবেন। প্রত্যেক ভোটার যেন নিজেকে বীরজিৎ সিনহা ভাবে। ত্রিপুরায় আগুন জ্বলছে, হিংসার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। পাঁচ বছর আগে মানুষ বিজেপি সরকার গড়েছিল। পদ্ম ফুলকে ভোট দিয়ে তারা ভেবেছিল নতুন দিন আসবে। অনেক পরিবর্তন অনেক আশা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। পাঁচ বছরে কি দেখলাম মানুষ এখন শান্তি চায়। আজ শান্তিতে মানুষ ঘুমাতে পারছে না। তারা সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে আমাদের মধ্যে ভাঙ্গন তৈরি করতে চাইছে। হিন্দুর বিয়েতে যে সানাই বাজে তা বিসমিল্লাহ খানের। আমরা তো কখনো জিজ্ঞেস করি না সানাইর সুর কে দিয়েছিলেন। আমরা যখন ঘেমে গামছা দিয়ে ঘাম মুছি তখন তো ভাবি না যে তাঁতি গামছাটা বুনেছিল সে হিন্দু না মুসলমান। আমরা জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু ভুলতে পারিনা। আজকে তারা যে পদ্মফুল নিয়ে ভোট চাইছে বিজেপির পদ্মফুলে গান্ধীর রক্ত লাগানো রয়েছে। এই পদ্ম ভারতের কোনদিনও ভালো করবে না। আমরা কংগ্রেসীরা কোন কিছুতে ভয় পাই না। যেখানে বাম ও কংগ্রেস এক হয়েছে সেখানে কোন বাইক বাহিনী কিছু করতে পারবে না। পাহাড়া দিয়ে জয় নিশ্চিত করুন। তিনি বলেন বীরজিৎ সিনহা আমাদের পরিবারের সদস্য। রাজ্যের মধ্যে সবচাইতে বেশি ভোটে বীরজিৎ সিনহাকে জয়ী করার আহ্বান রাখেন। শেষে তিনি রাজীব গান্ধীর হত্যার পর সোনিয়া গান্ধী হত্যাকারীদের মধ্যে এক মহিলাকে ছাড়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে যে ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন তা নিয়ে এক আবেগ তাড়িত বক্তব্য রাখেন।