থলি হাতে বাজারে গেলেই দামের ছ্যাঁকায় বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ।বছর বছর এটাই সাধারণ গৃহস্থের কাছে নৈমিত্তিক।শীত অতিক্রান্ত হতেই আনাজের দামের দৌড় শুরু হয়, বর্ষা না পড়তেই সে দামে আগুন লাগে।এমনকী আলু, পেঁয়াজ, রসুন-সহ বৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্করহিত আনাজের দামও এই মুহূর্তে যেন আকাশছোঁয়া।এই বৃদ্ধি অতি দ্রুত ও উচ্চ হারে ঘটে বলেই তা সাধারণ মানুষকে আরও বেশি বিচলিত করে। অথচ বাজারে কিন্তু সমান্তরাল ভাবে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, মশলা-সহ আনুষঙ্গিক নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও বছরভর বেড়ে চলে।ফারাক শুধু এ সব পণ্যের দর ধীরে ধীরে এমনভাবে বাড়ানো হয় যে তা নজরে আসে কম।খেয়াল করলে দেখা যাবে,এভাবে বাড়তে বাড়তে এক বছরেই ভোজ্যসামগ্রী-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অন্তত ১৫-২০ শতাংশ বেড়ে যায়,ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি।অতিরিক্ত খরচে নাভিশ্বাস উঠলেও সাধারণ গৃহস্থ এই জুলুম মেনে নিতে বাধ্য হন।মূল্যবৃদ্ধির এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে এ রাজ্যে সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার ঐতিহ্য বহুকাল আগেই গত হয়েছে।যে বামপন্থীরা একদা সামান্য বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নামতেন, তাদের উত্তরসূরিরা আজ হয়তো কিছু বিবৃতি দিয়েই দায় সারেন। অন্য রাজনৈতিক দলগুলি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দাবির পরিবর্তে কেন্দ্র অথবা রাজ্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দায় সারে।অতএব, বাস্তব প্রতিফলন,ন যযৌ ন তস্থৌ। আনাজপাতির এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকার বাহাদুর যে সর্বদা হাত গুটিয়ে বসে থাকেন, এ কথা বললে সত্যের অপলাপ হবে।সরকারী বাবুরা কখনও দাম নিয়ন্ত্রণে বাজারে হানাও দেন।প্রশ্ন হলো,এভাবে কি আদৌ মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানা সম্ভব?বাজারে এখন আনাজ- সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস যে দামে বিক্রি হচ্ছে,তা অন্যায্য চিহ্নিত করে বিক্রেতাদের দাম কমাতে বাধ্য করার সত্যিই কি কোনও আইনি সংস্থান আছে? উপভোক্তা সুরক্ষা আইন ২০১৯-এর ধারা ২-এর উপধারা ৬ (৪) অনুযায়ী, চারটি ক্ষেত্রে কোনও বিক্রেতার বিরুদ্ধে বাড়তি দাম নেওয়ার অভিযোগ জানানো যেতে পারে।এক) রাষ্ট্রের নির্ধারণ করা বা কোনও সুনির্দিষ্ট আইনবলে ধার্য হওয়া দামের (সর্বোচ্চ খুচরো দর বা এমআরপি)চেয়ে বেশি নেওয়া হলে, দুই) কোনও পণ্য বা পণ্যের মোড়কের উপরে লেখা দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হলে, তিন) বিক্রেতা-প্রদর্শিত বা আইনসঙ্গতভাবে প্রস্তুত মূল্যতালিকায় লেখা দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হলে,এবং চার) ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে চুক্তিতে স্থির হওয়া দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হলে।সত্য এই যে, বাজারে বিক্রিত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বর্তমান দাম আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় যতই বেশি মনে হোক,এ বিষয়ে
বিক্রেতার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন।
উপভোক্তা সুরক্ষা আইন ২০১৯-এর ২-এর উপধারা (৪৭) (৩) (৫) অনুযায়ী, মজুত বা নষ্ট করার মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে কোনও জিনিসের দাম বাড়ানো হলে তা অন্যান্য বাণিজ্য অনুশীলন হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য হওয়ার কথা।কিন্তু ২০২০-এর সেপ্টেম্বরের সংসদে পাস হওয়া অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধন) আইন, ২০২০ অনুযায়ী দানাশস্য, ডাল, তৈলবীজ, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ ও আলুর মতো বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোজ্যসামগ্রীকে অত্যাবশ্যক জিনিসপত্রের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলত সঙ্ঘবদ্ধ মজুতদারেরা ওইসব সামগ্রী যথেষ্ট মজুত করে একতরফা দাম বাড়িয়ে চললেও আইনি পথে তাদের নিরস্ত করা কার্যত অসম্ভব।
আনাজ মূলত গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজার থেকে শহরে সরবরাহ হয়।আনাজ কেনার সময় একাধিক সমিতি বা কমিটি চাঁদার মোড়কে তোলা আদায় করে।এখানেই শেষ নয়, তারপর সেই আনাজ বিক্রয়স্থলে পৌঁছানো পর্যন্ত সরকারী আইনরক্ষক থেকে শুরু করে স্বঘোষিত শৃঙ্খলারক্ষকদের যে পরিমাণ ‘চাঁদা’ দিতে হয়, তা ওই আনাজের কেনা দামের প্রায় সমান।কোথাও আবার মাসিক চুক্তির ‘সুব্যবস্থা’ থাকে।রেলে পরিবহণ করলেও ‘চাঁদা’ থেকে রেহাই নেই।রেলকর্মী থেকে আইনরক্ষক-সকলকে খুশি না করে স্টেশনের গন্ডি পার করা অসম্ভব।প্রশাসন এই অবৈধ চাঁদা আদায় বন্ধ করতে পারলে আনাজের দামে সাময়িক স্বস্তি মিলতেও পারে।কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মধ্যবিত্তের নাগালে বেঁধে রাখতে হলে প্রচলিত আইনগুলির উপভোক্তা-বান্ধব হয়ে ওঠার সংস্কারমূলক কাজ বেশি প্রয়োজন।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…