অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনের সূচনা পর্বে সংসদ ভবনের অমূল প্রবেশদ্বারের বাইরে চোদ্দো মিনিটের ভাষণের শেষ একশো কুড়ি সেকেণ্ড বিরোধীদের কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য।বিরোধীদের উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘দেশের জনতা দায়িত্বশীল বিরোধী পক্ষ চায়।বিরোধীদের কাছে সু-পদক্ষেপের আশা রাখে। বিরোধীদের গণতন্ত্রের গরিমা রক্ষাকর্তায় ভূমিকায় দেখতে চায়।দেশবাসী সংসদে ঝগড়া দেখতে চায় না।নাটকবাজি দেখতে চায় না।স্লোগান শুনতে চায় না।আশা করি, বিরোধীদের নিয়ে যে নিরাশা সৃষ্টি হয়েছিল, এবার তা থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রী ভুল কিছু বলেননি। তবে এক্ষণে সঙ্গত প্রশ্নগুলি হলো, দেশের মানুষ কি কেবল বিরোধীদের কাছেই সু-পদক্ষেপের আশা করে? গণতন্ত্রের গরিমা রক্ষার দায়িত্বটি কি কেবল বিরোধীদের?শুধু বিরোধীদের তরফেই এতদিন দেশবাসীর নিরাশা নিঃসৃত হয়েছে? শাসকের সিদ্ধান্তের বিরোধিতার অর্থ কি নিছক নাটক?গণতন্ত্রে বিরোধী ছাড়া শাসক বেলাগাম হয়ে পড়বে, এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।প্রশ্ন হলো, বিরোধীরা অতিরিক্ত ‘দায়িত্বশীল’ হয়ে পড়লে
শাসককে ‘কাপড় কোথায়’ প্রশ্নটি কে করবে?
বিভ্রমের স্বপ্ন ফেরি, মন্দির-মসজিদ, সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদ, বহুত্ববাদের এই দেশে একরৈখিক সংস্কৃতির ঢক্কানিনাদ দেশবাসীর কর্ণকুহরে যে মনোরঞ্জনী সুরে বাজেনি, এবারের নির্বাচনি ফলাফলের নির্যাস এটাই।এই ফলাফল বুঝিয়েছে, ভারত নামক ধারণাটির আত্মাকে পাল্টে দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। অযোধ্যায় শাসক দলের প্রার্থীর পরাজয় কি তারই দ্যোতক নয়?এই সবের জন্যেও কি দায়ী বিরোধীরা? বল্লাহীন মূল্যস্ফীতি, অর্থব্যবস্থার গতিভঙ্গ, কর্মসংস্থানের করুণ দশা, কৃষক থেকে সাধারণ মানুষের ক্রমবর্ধমান দুর্দশা, ঔপনিবেশিক আমলের স্তরে আর্থিক বৈষম্য।এহ বাহ্য, ইলেক্টোরাল বন্ডের সঙ্গে দুর্নীতির যোগসাজশের অভিযোগ, নোট বাতিল থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম, বিরোধী দল এবং সুশীল সমাজের উপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ, তা কি কেবলই বিরোধীদের নেতিবাচক পদক্ষেপের প্রতিফলন?বিশ্ব মানবোন্নয়ন সূচকে ভারতের ১৩৪তম স্থানে অবনমন, বিশ্ব লিঙ্গবৈষম্যের ক্ষেত্রে ১০৮তম স্থান বিশ্ব সুখের সূচকে ১২৬তম স্থান, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১১তম স্থান, দুর্নীতির সূচকে ৯৩তম স্থান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকে ১৬১তম স্থান, পরিবেশের ক্ষেত্রে শেষতম স্থান প্রাপ্তি, পাশাপাশি বিশ্ব উদ্ভাবনী সূচক ও বিশ্ব প্রতিযোগিতামূলক সূচকে ৪০তম স্থান- তাও কি বিরোধীদের কু- পদক্ষেপের ফসল? বিশ্ব সামরিক শক্তিতে চতুর্থ ও বিশ্ব জিডিপিতে ভারতের পঞ্চম স্থান অধিকার সত্ত্বেও সেই উন্নয়ন দেশের গড়পড়তা মানুষের জীবনযাত্রাকে খুব একটা পাল্টাতে ব্যর্থ কেন,তার দায় কি বিরোধীদের?বিপক্ষে দৃশ্যত নগণ্য বিরোধী শক্তির অস্তিত্ব সত্ত্বেও শাসকদল যদি ২৪০-এই আটকে যায়, সেই ‘দায়’ কার, বিরোধীদের? নিরবচ্ছিন্ন দশ বছরের শাসক যদি আমজনতার দাবিকে তুচ্ছ করে বিরোধীদের কাছে জনতার প্রতি দায়বদ্ধ থাকার প্রস্তাব দেয়, তা কতখানি যুক্তিসঙ্গত সেটিও ভাবা প্রয়োজন।এ প্রশ্ন শাসককে কে করবে যে, সংসদের গত শীতকালীন অধিবেশনে বেনজিরভাবে এক লপ্তে ১৪১ জন সাংসদকে সদন থেকে বার করে দিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করানো হয়েছিল কেন?স্বাধীনতার পর সেই প্রথম, একই দিনে সংসদের দুই কক্ষ মিলে বিরোধী পক্ষের ৭৮ জন সাংসদকে নিলম্বিত করে সরকার দেশের সামনে কী বার্তা দিতে চেয়েছিল?মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের একাংশকে কাজে লাগিয়ে এমন একটি ন্যারেটিভ তৈরি করা হয়েছিল যেন শাসকের অমিত শক্তির সামনে বিরোধীরা পোকামাকড়ের চেয়ে বেশি কিছু নয়।তাদের যাকে ইচ্ছা জেলে পাঠাও, যাকে ইচ্ছা নিজের পালে টেনে আনো।
বিরোধীরা পুরনো সংসদ ভবন পরিসরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনা দিচ্ছেন, আর অন্যদিকে সদনে একের পর এক বিল তর্কবিহীন মান্যতা প্রাপ্তি পাচ্ছে,এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য শেষ কবে দেখেছে ভারত?শাসক কি তখন টের পেয়েছিল যে আর কিছু মাস পরেই সাধারণ নির্বাচনে জনতা-জনার্দন তাদের একচ্ছত্র ক্ষমতায় লাগাম টেনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ৩২ আসন দূরে আটকে দেবে!
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের নাগরিক বিরোধীদের কাছে গণতন্ত্রের গরিমা রক্ষার প্রত্যাশা করে।কথাটি সঠিক, বিরোধীদের কাছে দেশবাসীর এমন প্রত্যাশাই থাকা বিধেয়। বিরোধীদের যেমন দরকার গঠনমূলক বিরোধিতার মোড়কে শাসককে নিরন্তর প্রশ্ন করে যাওয়া, সরকারেরও তদনুরূপ কর্তব্য, দেশবাসীকে একটি সৎ এবং স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়া।
অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…
অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…
অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…
নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…