দীর্ঘ বছর চাকরি করেও নিয়মিত না হওয়ায় ক্ষোভ

 দীর্ঘ বছর চাকরি করেও নিয়মিত না হওয়ায় ক্ষোভ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়মিত কর্মচারীরা দীর্ঘ বছর ধরে চাকরি করে এলেও নিয়মিত করা হচ্ছে না।সেই কারণে অবসরে গিয়ে অনিয়মিত কর্মচারীরা কোনও আর্থিক সুবিধা সহ কোনও সুবিধাই পাচ্ছেন না। অনিয়মিত হিসাবে একটানা ৩৪-৩৫ বছর রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সুনামের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কাজ তথা চাকরি করার পর অমিয়মিতদের নিয়মিত না করায় কোনও আর্থিক সুবিধা ছাড়া শূন্য হাতে অবসরে চলে যাচ্ছেন। যা অত্যন্ত অমানবিক হয়েই ঠেকেছে সকলের কাছেই ৷ আগে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করার গাইডলাইনও নিয়ম – চালু করেছিল।প্রথমে অনিয়মিতদের নিয়মিত করার জন্য ১৭ বছর চাকরি করলেই নিয়মিত করার নিয়ম ও গাইডলাইন চালু করা হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের সময়। তারপর সেই সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছিল ১৫ বছর সর্ব শেষ ২০০৯ সালে আরও সেই সময় কমিয়ে আনা হয়েছিল অনিয়মিত কর্মচারীরা ১০ বছর চাকরি করলেই অটোমেটিক অর্থাৎ গাইডলাইন ও নিয়ম অনুযায়ী অনিয়মিতরা নিয়মিত কর্মচারী হয়ে যাবেন।বামফ্রন্ট সরকারের সময়ের অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণেই এই গাইডলাইন ও নিয়ম অনুযায়ী বহু অনিয়মিত কর্মচারী নিয়মিত হয়ে যান ৷ নিয়মিত বেতনক্রম ও অন্যান্য সুবিধা পেয়ে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। আর্থিক সংকট কাটিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ ও সন্তানদের পড়াশোনা করাতে কোনও বেগ পেতে হয়নি।সেই সময়ের অনিয়মিতদের নিয়মিত করায় অবসরে গিয়ে পেনশনও জুটছে।কিন্তু অত্যন্ত বিস্ময়ের ব্যাপার হলো বিজেপি জোট সরকার ২০১৮ সালে ক্ষমতার আসার পর অমিয়মিতদের নিয়মিতকরণে সেই গাইডলাইন ও নিয়ম বন্ধ করে দেয়।

Gratuity Calculator for Central Govt Employees


২০১৮ সালের ১ আগষ্ট রাজ্য সরকারের (অর্থ দপ্তর) আণ্ডার সেক্রেটারির স্বাক্ষরিত এক মেমোরেন্ডাম জারি করে বলা হয় বামফ্রন্ট সরকারের সময় ২০০৯ সালে নিয়মিতকরণের ক্ষেত্রে ১০ বছর অনিয়মিত থাকলেই নিয়মিতকরণ করার যে গাইডলাইনও নিয়ম চালু ছিল তা বন্ধ থাকবে।নতুন সরকার নিয়মিতকরণের নতুন নিয়ম ও গাইডলাইন চালু করবে। ২০১৮ সালে ১ আগষ্ট বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ের নিয়মিতকরণের এই সুবিধা বন্ধ করে দিলেও আশ্চর্যের ব্যাপার হলো গত ৫ বছরও বিজেপি জোট সরকার অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণের কোনও নতুন গাইডলাইন বা নিয়ম চালু করতে পারেনি। সেই কারণে গত ৫ বছরের মধ্যে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দীর্ঘ বছর ধরে ক্যাজুয়েল ওয়ার্কার, ডিএডব্লিউ, ডিআরবি, কন্টিজেন, ফার্ম ওয়ার্কার, পাম্প কর্মী, বাগান কর্মী, আশা কর্মী, পার্মানেন্ট লেবার সহ আরও বিভিন্ন ক্যাটাগরির অনিয়মিত কর্মচারীরা চাকরি করলেও নিয়মিত হয়নি। ৫ বছরে কোনও অনিয়মিত কর্মচারীকে নিয়মিত করা হয়নি। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কুড়ি হাজারের উপর অনিয়মিত কর্মচারী রয়েছেন। কোনও কর্মচারী কুড়ি বছর ধরে অনিয়মিত হিসাবে কাজ করছেন, আবার কোনও কর্মচারী পঁচিশ বছর, ত্রিশ বছর, চৌত্রিশ বছর, পঁয়ত্রিশ বছর ধরে চাকরি করলেও নিয়মিত করা হচ্ছে না। তাতে অনিয়মিত কর্মচারীরা প্রচণ্ড হতাশায় ভুগছেন। বয়স ৬০ বছর হয়ে যাওয়ায় অবসরে চলে গেলেও পেনশনের কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না তারা। দীর্ঘ বছর চাকরি করার পর কোনও আর্থিক বেনিফিট ছাড়াই শূন্যহাতে অবসরে গিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আরও গভীর সংকটে পড়ছেন তারা। একদিকে চাকরিতে নিয়মিত না হওয়ায় ও আবার এই অবস্থায় অবসরে গিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পরিবার নিয়ে। কবে বর্তমান রাজ্য সরকার নিয়মিতকরণের নতুন গাইডলাইন ও নিয়ম চালু করে তাদের নিয়মিত করবে সেই বিষয়ে রাজ্য সরকার এখন পর্যন্ত কোনও কিছুই জানায়নি। কোনও ঘোষণা নেই। ফলে অনিয়মিতদের ক্ষোভ ও অসন্তোষও কেবল বাড়ছে। সদ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনিয়মিত কর্মচারীদের বেতনবৃদ্ধি করেছে বিজেপি জোট সরকার। বেতনের প্রায় ৫০ শতাংশের মতো বৃদ্ধি করেছে। তাতে অনিয়মিতদের বেশকিছুটা আর্থিক সুবিধা হয়েছে। কিন্তু অনিয়মিতদের দাবি শীঘ্রই চাকরি নিয়মিত করা হোক। সেই দাবিতে অনিয়মিতদের তরফে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগেও নির্বাচনে আবার জয়ী হওয়ার পরও। তবে মুখ্যমন্ত্রী তাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করে আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি তিনি দেখছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.