দুই কেন্দ্রে লড়াই হবে দ্বিমুখী লড়াই করবে না মথা-কংগ্রেস।
অনলাইন প্রতিনিধি ;-রাজ্যের দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে ১:১ লড়াই হচ্ছে। একদিকে শাসকদল বিজেপি, অন্যদিকে সিপিএম। এই দুই দলের মধ্যেই মূলত লড়াই হচ্ছে। এই উপনির্বাচনে দুই কেন্দ্রেই তিপ্ৰা মথা ও কংগ্রেস লড়াই করবে না। সেই সাথে মথা ও কংগ্রেস সরাসরি সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থনও করছে না। বুধবার তিপ্রা মথা দলের বৈঠক হয়েছে।বৈঠকশেষে দলের সভাপতি বিজয়কুমার রাঙ্খলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপনির্বাচনে ধনপুর ও বক্সনগর কোনও কেন্দ্রেই মথা প্রার্থী দেবে না।কোনও দলকে সমর্থনও করবে না। এমনকী কোনও দলের হয়ে প্রচারও করবে না। উপ-নির্বাচনে তিপ্ৰা মথা নীরব থাকবে।কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকেও বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা জানান, উপনির্বাচনে কংগ্রেস দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না।তবে বাম প্রার্থীকে সমর্থনের প্রশ্ন সচেতনভাবেই এড়িয়ে গেছেন। ফলে দুই কেন্দ্রেই লড়াই হবে দ্বিমুখী। এদিকে, শাসক দল বিজেপি স্থানীয় প্রার্থীর উপরই ভরসা রেখেছে। ১৪ আগষ্ট সকালে দলের প্রদেশ নির্বাচন কমিটির বৈঠকেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল বিষয়টি। জানা গেছে, কেউ কেউ নিজেদের পছন্দের এবং আগরতলা থেকে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখালেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মনোভাবে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যায়। ফলে আলোচনা হয় শুধুই স্থানীয় প্রার্থী নিয়ে। দিল্লীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও স্থানীয় প্রার্থীর নামে সীলমোহর দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে দিল্লী থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই ধনপুর ও বক্সনগরে অকাল দীপাবলি লক্ষ্য করা যায়। দলের কর্মীসমর্থকরা বাজি-পটকা পুড়িয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন। বুধবার সকালে দুই কেন্দ্রেই বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে মিছিল করে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। আগামীকাল দুই প্রার্থীই মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। অপরদিকে, বুধবার প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য দৈনিক সংবাদকে জানান, দুই কেন্দ্রে একের বিরুদ্ধে এক লড়াই হলেও চিন্তার কিছু নেই বলে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে ধনপুর কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক জয়ী হয়েছিলেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে তিনি বিধায়কপদে শপথ নেননি। এবার আমাদের লক্ষ্য আরও বেশি। ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করা। বক্সনগর কেন্দ্রে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর পরাজয়ের ব্যবধান ছিলো খুবই কম। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এবার বক্সনগরে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হবেন। কেননা, রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারের কাজকর্ম দেখছে। এই সরকার রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলস্তরের মানুষের জন্য কাজ করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, উপনির্বাচনে তিপ্ৰা মথা ও কংগ্রেস উপনির্বাচনে যে অবস্থান নিয়েছে, তাতে তারা রাজনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে? আদৌ লাভবান হবে কিনা? দুই দলের কর্মী সমর্থকরা বিজেপি না সিপিএম, কোন দলকে ভোট দেবে? রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের মতে, তিপ্রা মথা নিজেদের মান বাঁচাতেই উপনির্বাচনে লড়াই না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ভালো করেই জানে, উপনির্বাচনে লড়াই করলে দলীয় প্রার্থীর শুধু পরাজয় ঘটবে না, বর্তমান পরিস্থিতিতে মথা প্রার্থীর জামানত জব্দ হতে পারে। এতে দলের উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। তাই কৌশল অবলম্বন করে নির্বাচন থেকে বিরত থাকাটাই শ্রেয় মনে করেছে। ধনপুর কেন্দ্রে মোট ১১ হাজার জনজাতি ভোটার রয়েছে। জনজাতি এলাকায় মোট বুথ রয়েছে ১৯টি। এই ১৯টি বুথেই প্রায় এক হাজার করে ভোটার রয়েছে। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের যে ফলাফল, তাতে দেখা গেছে ১টি বুধের ভোট বিজেপি প্রার্থীর দিকে গেছে। বাকি ১০টি বুথের ভোট গেছে মথা প্রার্থীর বাক্সে। গত পাঁচ মাসে ধনপুরে মথার শক্তি অনেকটাই তলানিতে নেমে গেছে। উপনির্বাচনে জনজাতি ভোট কোন দিকে যায় ? এখন সেটাই দেখার।