দুই নদীর পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ নিল মুম্বাইয়ের পুর নিগম
দাহিসার ও পয়সার, মুম্বাই শহরের সৌন্দর্য বহন করত এই দুই নদী। কিন্তু শিল্পের নানা বর্জ্য থেকে শুরু করে আরও নানা বর্জ্য এই নদীগুলিতে ফেলার কারণে ক্রমেই নদী দু’টি ছোট হতে থাকে। এখন এই দুই নদী সাধারণ নর্দমার থেকে কিছুটা বড়। এবার এই দুই নদীকেই প্রশস্ত করা এবং এর পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ নিল ব্রিহানমুম্বাই পুর নিগম। সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যানের তুলসী লেক থেকে এই নদীর গতিপথ শুরু হয়েছে। এবার দ্রুত দুই নদীকে আগের অবস্থায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করেছে পুর নিগম। পয়সার নদীর জন্য ১,১৯২ কোটি টাকা এবং দাহিসার নদীর জন্য ২৪৬ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। নদীর যে এলাকা দখল হয়ে গিয়েছে সেই এলাকাগুলিকে দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে। এছাড়া নিকাশীর ব্যবস্থা যাতে সঠিকভাবে হয় এবং দু’টি নদীর ধারে নতুন পথ নির্মাণ করারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুই নদীর মধ্যে বর্জ্য পড়ার কারণে নদীর গতিপথ অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর সেই নদীকেই আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিহানমুম্বাই পুর নিগম। নিগমের সহ পুর কমিশনার (জোন সাত) ভাগ্যশ্রী কাপসে জানিয়েছেন, পয়সার নদীকেই প্রশস্ত করা সবচেয়ে বড় প্রকল্প। কারণ এই নদীর ধার বরাবর ২০০ বস্তি এলাকা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘যারা দীর্ঘদিন ধরেই এই বস্তি এলাকায় বাস করছেন তাদের সঠিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ দেওয়া হবে। নদীর ধারে যেসব বেআইনি নির্মাণ কাজ হয়েছে সেই নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ব্রিহানমুম্বাই পুর নিগম। এর ফলে নদীর এলাকা আবার আগের জায়গায় ফিরে যাবে। ভাগ্যশ্রী কাপসে জানিয়েছেন, দাহিসার নদীর ধারে যে ২০০ বস্তি রয়েছে সেই বস্তিগুলিকে তুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে পুর নিগমের তরফে।
তিনি বলেন, ‘এখন এই নদী নালার মতো হয়ে বয়ে চলেছে। কিন্তু আমরা এই নদীকে আবার তার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেবো।’ মাধব শীতালে কমিটি যে সুপারিশ করেছিল তার ভিত্তিতেই এই দুই নদীর পুনরুজ্জীবনের বিষয়ে প্রকল্প গ্রহণ করেছে বিধানমম্বাই পর নিগম। ডেঙ্গুর প্রকোপ গোটা শহরজুড়ে বেড়ে যাওয়ার কারণে ওই বছরের জুলাই মাসে এই কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই কমিটি যে সুপারিশগুলি করেছিল তার মধ্যে অন্যতম হল, নদীগুলিকে প্রশস্ত করা।
আর তাহলেই জল জমে যাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এই কমিটি উল্লেখ করে, নদী দু’টি ছোট হতে হতে নালা-র আকার নিয়েছে। এই অবস্থা থেকে নদীগুলিকে আগের জায়গায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে ব্রিহানমুম্বাই পুর নিগমকে। নিগমের ‘ব্রিহানমুম্বাই স্টম ওয়াটার ডিসপোজাল (রিমস্টোয়াড) প্রজেক্ট’-এর মধ্যে পড়ছে। ২০০৫ সালের বন্যার সময়ে এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতাতেই পুর নিগম বিভিন্ন নালাকে সঠিকভাবে পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে নতুন নালা তৈরির বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এবার একইভাবে এই দুই নদীকেও পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই কাজ শেষ করার বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।