দুই প্রধান হাসপাতালের কাউন্টারে ওষুধ মিলছে না!!

 দুই প্রধান হাসপাতালের কাউন্টারে ওষুধ মিলছে না!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের প্রধান দুই সরকারী রেফারেল হাসপাতালে রোগীরা বিনামূল্যে স্বল্প মূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাচ্ছেন না। তাতে রোগীর চিকিৎসা ও রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের প্রায় পুরো ওষুধই ওষুধের দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। জিবি এবং আইজিএম হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগীরা যেমন চিকিৎসক দেখিয়ে প্রেসক্রিপশনের ওষুধ হাসপাতালে না পেয়ে বেসরকারী ওষুধের দোকান থেকে কিনে নিচ্ছেন, তেমনি হাসপাতালের অন্ত: (ইনডোর) বিভাগে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রোগীর প্রেসক্রিপশনের প্রায় সব ওষুধই ওষুধের দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। প্রতিদিনই এই অভিযোগ করছেন ক্ষুব্ধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়। সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী
না মেলায় রোগীরা যে প্রতিদিন বিপাকে ও দুর্ভোগে পড়ছেন সেই বিষয়টি দেখার যেন হাসপাতালে কোনও আধিকারিক নেই। রোগী ও রোগীর আত্মীয়ের সমস্যা, অভাব অভিযোগ শোনার ও দেখার হাসপাতাল তরফে কেউ নেই। যদি কোনও আধিকারিক থাকেনও তাহলে তা হাসপাতালের খাতায়পত্রে সীমাবদ্ধ। বাস্তবে নেই। ফলে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে অসহায় রোগীরা ও রোগীর দেখভালে থাকা আত্মীয়দের ওষুধপত্র, চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে গিয়ে পকেটে টান পড়ছে। প্রতিদিন পকেট থেকে প্রচুর টাকা চলে যাচ্ছে। গরিব, নিম্ন আয়ী, সাধারণ উপার্জনশীল পরিবারগুলি তাদের পরিবারের সদস্যকে সুস্থ করে আনতে গিয়ে পকেটে টান পড়ায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ছেন। যদিও রাজ্য সরকার, স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতালের তরফে এ বিষয়টি উঠলেই সবসময়ই দাবি করা হচ্ছে হাসপাতালে রোগীর জন্য বিনামূল্যে ওষুধপত্র দেওয়া হয়। ওষুধপত্রের কোনও সমস্যা ও সংকট নেই ইত্যাদি। রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবি এবং দ্বিতীয় বৃহত্তর রেফারেল হাসপাতাল হলো আইজিএম।বাস্তবে
এই দুই বড় সরকারী হাসপাতালেই ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রীর সারা বছর যদি এই সংকট ও বেহাল দশা চলে তাহলে রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতাল স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কী হাল হকিকত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রোগী ও রোগীর সঙ্গে দেখভালে থাকা আত্মীয়স্বজনের বক্তব্য হলো, হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকলে সাধারণ সেলাইন ও সাধারণ ও খুব সামান্য ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। প্রেসক্রিপশনের ৯০ শতাংশ ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী বেসরকারী দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। এমনিতেই দিনদিন ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্য লাগামছাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওষুধপত্র কিনতে গিয়ে জেরবার ও নাভিশ্বাস অবস্থা। জিবি হাসপাতালের ভেতর রোগী কল্যাণ সমিতির তরফে ওষুধের মূল্যের উপর ৩৩ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য একটি ওষুধের ফার্মেসি চালু করা হলেও এই ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশনের ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ ওষুধ পাওয়া যায় না বলে রোগীর নিত্য অভিযোগ। চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্যের উপর ৩৩ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি দেখারও হাসপাতালের কোনও আধিকারিক নেই। স্বাস্থ্য দপ্তরও উদাসীন। দরপত্রের শর্ত অমান্য করে রোগী হয়রানি ও ঠকানোর অভিযোগ উঠলেও রোগী কল্যাণ সমিতি পরিচালিত ফার্মেসির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাসপাতালে ক্ষোভ বাড়ছে। জিবি এবং আইজিএম হাসপাতালে সস্তা মূল্যে
ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাওয়ার জন্য জেনেরিক মেডিসিন তথা জনঔষধির কাউন্টার থাকলেও সেখানেও প্রেসক্রিপশনের ওষুধপত্র মিলছে না। সারা বছর জেনেরিক মেডিসিন তথা জনঔষধির হাসপাতাল কাউন্টারে ওষুধ না মিললেও রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তর কেন কাউন্টারে ওষুধ পাওয়ার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নিচ্ছে না তা নিয়েও ক্ষুব্ধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.