দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধনের প্রস্তুতি, আখাউড়া-নিশ্চিন্তপুর জুড়বে ৯ সেপ্টেম্বর।

 দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধনের প্রস্তুতি, আখাউড়া-নিশ্চিন্তপুর জুড়বে ৯ সেপ্টেম্বর।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- ৯ সেপ্টেম্বর হতে চলেছে সেদিন। রেলপথে জুড়তে চলেছে ভারত তথা ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ। বহু কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথের শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। ভারত, বাংলাদেশ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এর উদ্বোধনে থাকবেন। নয়াদিল্লী ও ঢাকা থেকে ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে সূচনা হবে এই রেলপথের। একই সঙ্গে রাজ্যের সাব্রুম এবং বাংলাদেশের রামগড়ও জুড়তে পারে। উদ্বোধন হতে পারে মৈত্রী সেতুর। পুরো বিষয়টি অবশ্য চূড়ান্ত হবে চলতি আগষ্ট মাসের ২২ তারিখ। আগরতলায় বৈঠক হবে রেল আধিকারিক ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। তারপরই যাবতীয় রূপরেখা তৈরি হবে রেল ও সড়কপথে রাজ্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দুয়ার খুলে যাওয়ার।আপাতত স্থির হয়েছে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথের পুরোটা চালু হবে না। চালু হবে আখাউড়া-নিশ্চিন্তপুর স্টেশন।পরে নিশ্চিন্তপুরের সঙ্গে জুড়বে আগরতলা রেল স্টেশন। তার জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে পুজোর সময়কে।অক্টোবর মাসের শেষদিকে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ সংযুক্ত হবে পূর্ণাঙ্গভাবে। ভারতীয় রেলবোর্ড, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল এবং রাজ্য প্রশাসনিক সূত্র নিশ্চিত করেছে এই খবর। পাশাপাশি খবরের সত্যতা মিলেছে ভারত ও বাংলাদেশে রেলপথ নির্মাণ কাজে নিয়োজিতদের সূত্রে। তবে এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। জানা গেছে, দুই দেশের শীর্ষ পদাধিকারীদের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি জারির আগে এ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খোলা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিরোধী। এই কারণে উল্লেখিত বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে। তার কাছে ভারত- বাংলাদেশ রেলপথের সংযুক্তিকরণ নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি শুধু বলেন, ২২ আগষ্টের আগে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা যাবে না। এ দিন সীমান্ত রেলের জিএম চেতন কুমার শ্রীবাস্তব ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা আগরতলায় এক বৈঠকে মিলিত হবেন। বৈঠকের আলোচ্যসূচি হিসাবে থাকছে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ সংযুক্তিকরণ। এই বৈঠকে অংশ নেবেন সীমান্ত রেলের লামডিঙ বিভাগের প্রধান তথা ডিআরএম। রেলের বিভাগীয় প্রধান প্রেমরঞ্জন কুমারের সঙ্গেও কথা হয় দৈনিক সংবাদের তরফে। শ্রীকুমারও এ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর রেলপথ সংযুক্তিকরণ নিয়ে সম্মতি মিলেছে।আগরতলা-আখাউড়া রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার ২৪০মিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ৬ কিলোমিটার ৭৮০মিটার। ভারতীয় অংশে রয়েছে ৫ কিলোমিটার ৪৬০ মিটার। উভয় দেশে মোট চারটি স্টেশন রয়েছে।আগরতলা, নিশ্চিন্তপুর,গঙ্গাসাগর এবং আখাউড়া।প্রথম দুটি স্টেশন ভারত তথা ত্রিপুরায় এবং বাকি দুটি স্টেশন বাংলাদেশের আখাউড়া জেলায় পড়েছে।ভারতীয় অংশে নিশ্চিন্তপুর থেকে আগরতলার দূরত্ব প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। এই অংশের সংযুক্তিকরণ এখনও হয়নি। এর কাজ চলছে। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে নিশ্চিন্তপুর স্টেশন পর্যন্ত কাজ হয়ে গেছে ৯৫ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ অংশে কাজ হয়ে গেছে ৯০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে রেলপথ পাতা ও সংযুক্তিকরণের কাজ প্রায় শেষ। ২২ অক্টোবর চলতে পারে পরীক্ষামূলক ট্রেন। ইতিমধ্যে উভয় দেশের রেলপথে চলেছে ট্রলি তথা ট্র্যাক কার।রেলপথ সংযুক্তিকরণ ছাড়াও আনুষঙ্গিক নানা কাজ থাকবে। রেলপথ সংযুক্তির পর দুই পর্যায়ের পরীক্ষামূলক চলাচলের প্রয়োজন। প্রথম পর্যায়ে খালি ইঞ্জিন ও দ্বিতীয় পর্যায়ে মালগাড়ি এবং যাত্রীট্রেন নিয়ে পর্যবেক্ষণ চালাতে হবে। তারপর এর জন্য প্রয়োজনীয় শংসাপত্র পাওয়ার প্রশ্ন রয়েছে সুরক্ষা কমিশনারের কাছ থেকে। এ সবের জন্য এখন প্রস্তুতি চলছে। ভারতীয় অংশে ২৬ আগষ্ট প্রথম পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ চালানোর প্রস্তুতি চলছে। প্রস্তুতি চলছে যে কোনও মূল্যে ৯ সেপ্টেম্বরের আগে আন্তর্জাতিক এই রেলপথ সবদিক থেকে তৈরি রাখার। এর ভারতীয় অংশে সীমান্ত রেল, নির্মাণের আওতায় কাজ করছে রেলের নিজস্ব নির্মাণ সংস্থা ইরকন। বাংলাদেশে কাজ করছে দেশীয় বেসরকারী সংস্থা বিড়লার আওতাধীন টেক্সম্যাকো। লক্ষ্য ৯ সেপ্টেম্বর ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.