দৈনিক সংবাদ অনলাইনঃ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়লো করমণ্ডল এক্সপ্রেস।ওড়িশার বালাসোরের কাছে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১০০ জনের বেশি।রাত দশটায় শেষ খবর অনুযায়ী মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে।আহত হয়েছেন প্রচুর যাত্রী।পশ্চিমবঙ্গ এবং দক্ষিণের রাজধানী এক্সপ্রেস হিসেবে পরিচিত করমণ্ডল এক্সপ্রেস বালাসোরের কাছে বানাগা বাজার স্টেশনের অদূরে এই দুর্ঘটনায় পড়েছে শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ।সিগন্যালের ভুল অথবা অন্য কোনও কারণে মালগাড়ির সাথে একই লাইনে উঠে যায় এই করমণ্ডল এক্সপ্রেস।করমণ্ডল মালগাড়ির পেছনে ধাক্কা মারে। ফলে ২৩ কামরার করমণ্ডল এক্সপ্রেসের অন্তত কুড়িটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি কামরা উঠে যায় মালগাড়ির উপরে। ঘটনার আকস্মিকতায় যাত্রীরা কিছু ভাবার সুযোগ পায়নি।তার আগেই মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন অনেকে।রক্তে ছেয়ে যায় ট্রেনের ভেতর ও বাইরে। শুরু হয় হাহাকার।বাইরে আর্ত চিৎকারে দায় হয়ে পড়ে কানপাতা।মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন অন্তত ১০০জন।প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে,এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মাত্র দুজনের।যত সময় গড়াতে থাকে তত মৃতের সংখ্যা বাড়ার খবর আসতে থাকে। স্থানীয় এলাকার মানুষ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী আচমকা প্রচণ্ড শব্দ শোনা যায়। শুরু হয় চিৎকার, চেঁচামেচি, আর্তনাদ।বাঁচাও, বাঁচাও শব্দ। ভয়াবহতার কারণে প্রথম দিকে স্থানীয় মানুষ দুর্ঘটনাস্থলে এগিয়ে যাওয়ার সাহস পায়নি।কিছুক্ষণ পর স্থানীয়দের উদ্যোগে শুরু শুরু হয় উদ্ধারকাজ।ছুটে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় চিকিৎসকদের দল।
উদ্ধারকাজ করা করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় অন্ধকারের কারণে।প্রথম দিকে উদ্ধারকাজ শুরুই করা যায়নি। ধীরে ধীরে উদ্ধারকাজ শুরু হতে স্থানীয় মানুষ সহ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম হয়। উদ্ধারকাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে হতাহতের সংখ্যা। রাত সাড়ে নটায় প্রাপ্ত খবর অনুসারে সর্বশেষ অন্তত ১০০ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। আহত হয়েছেন কয়েকশো যাত্রী। দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুর চেন্নাই সেন্ট্রালের উদ্দেশে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া সংলগ্ন শালিমার স্টেশন থেকে শুক্রবার বিকাল তিনটে পনেরো মিনিটে যাত্রা শুরু করে করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি।বিকাল সাড়ে পাঁচটায় খড়গপুর স্টেশনে পৌঁছায়।বালাসোরে পৌঁছায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়।বালাসোর স্টেশন ছাড়ার পর প্রায় আধঘন্টা পর বহানাগা বাজার স্টেশনের অদূরে দুর্ঘটনায় পড়ে করমণ্ডল। ট্রেনটির সামনে একই লাইনে থাকা একটি মালগাড়ির পেছনে সজোরে ধাক্কা মারে। ফলে ২৩ কামরার ট্রেনের একের পর এক কামরা উঠে যেতে থাকে মালগাড়ির উপর।অনেকটা দেশলাইয়ের বাক্সের মতো উল্টেপাল্টে যেতে থাকে কামরাগুলি।এই ঘটনায় মালগাড়িরও পাঁচটি ওয়াগন বেলাইন হয়ে যায়।ভয়াবহ এবং বিধ্বংসী এই দুর্ঘটনায় একের পর এক কামরা দুমড়ে মুচরে যেতে থাকে,যাত্রীরা ছিটকে পড়তে থাকে নিজেদের আসন থেকে। তখন সন্ধ্যার দিকে গল্পে মশগুল বেশিরভাগ যাত্রী।আচমকা ঘটা দুর্ঘটনায় তাদের গল্পে ইতি পড়ে যায়।ঘটে ছন্দপতন।সৃষ্টি হয় ত্রাসের পরিস্থিতির।কেউ কারও খোঁজ নেওয়ার সময় থাকে না। দুর্ঘটনায় কারও হাত কেটে গেছে, কারও ঝুলছে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ।আলাদা হয়ে গেছে মাথা। দেহের বাকি অংশ ছিটকে পড়েছে কামরার বাইরে। বহু যাত্রী রেল লাইনের উপর পড়ে কাতরাতে থাকেন। অনেকেই ছিটকে পড়ে যায় পাশে থাকা খালে।একের পর এক কামরা দুমড়েমুচড়ে এবং উল্টেপাল্টে যেতে থাকায় ভেতরে থাকা যাত্রীদের অবস্থা অবর্ণনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
তারা যেন দেশলাইয়ের খোলের ভেতর থাকা কাঠির মতো চ্যাপ্টা হতে থাকে।ছিটকে পড়তে বা ঘুরতে থাকে ট্রেনের ভেতর।কে কোথায় ছিটকে পড়তে থাকে তার হিসাব করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।শুরু হয় আর্ত চিৎকার। কানফাটা রোদনের শব্দ ভাসতে থাকে বাতাসে।দেশের অন্যতম মর্যাদাকর এই ট্রেনটি কেন এবং কীভাবে দুর্ঘটনায় পড়েছে সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন মহলের তরফে ধারণা করা হয় যে সিগন্যালের ভুলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ভুল লাইনে উঠে যায়। আর তাতেই ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অবর্ণনীয় দুর্ঘটনা।হতাহত হয়েছে বহু যাত্রী। তবে সংবাদ লেখা পর্যন্ত এর পুরো হিসাব জানা যায়নি।প্রাপ্ত খবর অনুসারে বালাসোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ৪৭ জন যাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের প্রায় প্রত্যেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বহু যাত্রীকে।রেলের তরফে জানানো হয়েছে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে, নেওয়া হবে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।তবে রেলে বহুল প্রচলিত কথা অনুসারে এক অথবা দুটি কারণে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে না।এর পেছনে থাকতে হবে বেশ কয়েকটি ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং যান্ত্রিক গোলযোগ। ভারতীয় রেলের তরফে বারবার দাবি করা হয় যে সুরক্ষার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে রেল।এরপরও এই দুর্ঘটনা কী করে ঘটেছে সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে বড় প্রশ্ন। চলমান মালগাড়ির পেছনে দূরন্ত গতির করমণ্ডল এক্সপ্রেস কেন এবং কীভাবে ধাক্কা মেরেছে তার তদস্ত হবে নিয়ম নেমে।
এই ফাঁকে অন্তত ১০০ জন যাত্রীর প্রাণ নির্বাপিত হয়েছে। এর দায় কে নেবে তার কোনও উত্তর নেই। একই দিনে হাওড়া-বেঙ্গালুরুর মধ্যে চলাচলকারী অপর দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়েছে। তার বিস্তারিত খবর সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত জানা যায়নি। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের সহায়তার জন্য রেলের তরফে বিভিন্ন সহায়ক নম্বর দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে শালিমার বালাসোর এবং খড়গপুরের জন্য আলাদা করে দেওয়া হয়েছে ১৯০৩৩৭০৭৬৪, ৭১৭৮৪১৮৩২২ ও ৮৯৭২০৭৩৯২৫ মোবাইল নম্বর।এই দুর্ঘটনার ফলে বহু ট্রেনের যাত্রা বাতিল অথবা সূচির পরিবর্তন করা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।আহতদের চিকিৎসায় সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব পুরো ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। তিনি ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।এই দুর্ঘটনায় ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনও রাজ্যের যাত্রী রয়েছে কিনা তা জানা সম্ভব হয়নি।এ নিয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে-র সঙ্গে।তিনি রাত পৌনে দশটায় জানান যে,উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যের কোনও যাত্রী এই দুর্ঘটনায় পড়েছে কিনা তা জানা যায়নি।এ নিয়ে সীমান্ত রেলের তরফে খোঁজখবর করা চলছে বলে উল্লেখ করেন শ্রী দে।
অনলাইন প্রতিনিধি :-চার দিনের মাথায় আবারও ভূমিকম্প পাকিস্তানে।শুক্রবার রাত ঠিক ১টা ৪৪ মিনিট।আগের দিনের তুলনায়…
অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃহস্পতিবারের পুনরাবৃত্তি। সন্ধ্যা আটটার পর থেকেই শুরু হয় একই কায়দায় ড্রোন মিসাইল হামলা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে মৃত্য হলো ভারতীয় বিএসএফ জওয়ান মুরলী নায়েকের। অন্ধ্রপ্রদেশের সত্যসাই জেলার বাসিন্দা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনাপূর্ণ আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়েছে পাকিস্তান ভারতে…
পহেলগাঁও হামলার প্রত্যাঘাত এতটা জোরালো এবং ভয়াবহ হতে পয়ল পারে সেটা নিশ্চয়ই পাকিস্তানের ভাবনার মধ্যেই…
অনলাইন প্রতিনিধি :-'বিজ্ঞান ও কৃষিরমেলবন্ধনই আগামী দিনের কৃষি উন্নয়নের চাবিকাঠি। কৃষকদের স্বনির্ভর করতে হলে এই…