দুর্নীতির অর্থে মেডিকেল কলেজ ফের তোপ দাগলেন বিরোধী নেতা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ইস্যুতে আবারও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী।তিনি বলেন, কে এই শান্তিনিকেতন?তা রাজ্যের মানুষ জানতে চান। আমরা শান্তিনিকেতন শব্দ শুনলে দুর্বল হয়ে যাই। কেননা গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে এ নাম যুক্ত। তবে রাজ্যে আসা এই নামধারী শান্তিনিকেতনের সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনও যোগাযোগ নেই। রাজ্যে আগত বিদ্যা ব্যবসায়ী শান্তিনিকেতন দুর্নীতিগ্রস্ত।
আজ রাজধানী আগরতলায় শিক্ষা,স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানে দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের অভিযোগ এনে সিপিএম আয়োজিত বিক্ষোভ সভায় এই অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরী।তিনি বলেন, শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ যারা চালাচ্ছে তারা হলেন ‘স্বাধীন ট্রাস্ট’।রাজ্যের বিজেপি সরকারের এক মন্ত্রী বলছেন এরা নাকি মেডিকেল কলেজ চালুর জন্য জমি ক্রয় করেছে।অবাক করার বিষয় হলো, বিজেপি মুখপাত্র আবার বলছেন সরকার এ ধরনের সংস্থাকে কোনও সাহায্য করছে না।সে যাই হোক।রাজ্যবাসী জেনে গিয়েছেন এই ‘স্বাধীন ট্রাস্টের’ সাথে যুক্ত পশ্চিম বাংলার শাসকদলের একজন নেতা। জিতেন চৌধুরীর অভিযোগ, ওই নেতা গরু চুরি থেকে আরম্ভ করে সমস্ত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকায় বিগত কয়েক মাস ধরে তিহার জেলে বন্দি।আর তার সবচেয়ে নিকটতম শাগরেদ ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হয়ে গেলেন।অথচ তার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। রাজ্যে এসে কালো টাকায় মেডিকেল কলেজ সরকারী সাহায্যে করতে ব্যস্ত। সিপিএমও চায় রাজ্যে মেডিকেল কলেজ সহ অন্যান্য বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক।তবে কালো টাকায় রাজ্যে মেডিকেল কলেজ হবে তা রাজ্যবাসী মানবেন না।
তিনি বলেন, কালো টাকায় রাজ্যে মেডিকেল কলেজ হলে তা নিট, নেট কেলেঙ্কারি থেকেও আরও বড় ধরনের দুর্নীতি হবে।কারণ এই স্বাধীন ট্রাস্টের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই, আয়কর দপ্তর মামলা চালাচ্ছে।এদের অনেক লোক জেলে যাচ্ছে। অনেকে পলাতক আসামি, অনেককে খোঁজা হচ্ছে।তাই প্রশ্ন উঠছে, কার স্বার্থে রাজ্য সরকার এ রকম একটি সংস্থাকে রাজ্যে এনে মেডিকেল কলেজ চালু করতে ব্যস্ত।
জিতেনবাবুর দাবি, যেকোনও সময় এই স্বাধীন ট্রাস্ট বন্ধ হবে।ট্রাস্টের সব দুর্নীতিবাজরা জেলে থাকবেন।ফলে এই মেডিকেল কলেজও মুখ থুবড়ে পড়বে। রাজ্যের ছাত্রদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে এরা পালিয়ে যাবে। ছাত্রদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
বিধানসভায় কোনও আলোচনা নেই, বিল নেই, রাজ্য সরকারের সাথে পর্যন্ত কোনও চুক্তি নেই।এমনকী স্বাস্থ্য দপ্তর নিজেও কিছু জানে না। এরপর কীভাবে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্থাকে মেডিকেল কলেজ চালুর অনুমতি দেওয়া হলো। শুধু তাই নয়, রাজ্যের আইজিএম হাসপাতালকে পর্যন্ত এদের ছেড়ে দিল রাজ্য সরকার।সংবিধান, আইন এবং ত্রিপুরা বিধানসভার আইন পর্যন্ত রাজ্যে কলাপাতায় পরিণত হচ্ছে।
জিতেন চৌধুরীর অভিযোগ, রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের শাসকদলকে কীভাবে কোনও প্রসাদের ভিত্তিতে খুশি করেছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট তা রাজ্যবাসী জানতে চান। রাতারাতি শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের ‘সাইনবোর্ড’ কীভাবে আইজিএম হাসপাতালে লাগানো হল তাও রাজ্যবাসীর কাছে তুলে ধরা হোক।কারণ রাজ্যের সরকারী সম্পত্তি কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক ও দলের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। রাজ্যবাসী সব কিছু ধরে ফেলেছেন।তাই মন্ত্রী ও মুখপাত্র সাংবাদিক সম্মেলন করেও হতাশাগ্রস্ত।মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানো যাবে না।
জিতেন চৌধুরী আরও বলেন, এই শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের বিরুদ্ধে পশ্চিম বাংলার সব প্রচারমাধ্যম, পশ্চিম বাংলার প্রধান বিরোধী দল এবং রাজ্যের শাসকদল বিজেপি দিল্লীতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একের পর এক অভিযোগ করছে।আর ত্রিপুরায় বিজেপি দল ও তাদের নেতা মন্ত্রীরা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের স্বার্থে সীলমোহর প্রদানে ব্যস্ত।তবে সহজেই প্রমাণিত এর পেছনে এটা বড় ধরনের রহস্য লুকোনো রয়েছে।
এদিন মেলারমাঠ থেকে মিছিল শুরু হয়।এরপর শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে শকুন্তলা রোডের বিক্ষোভ সভায় মিলিত হয়। সভায় প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, পবিত্র কর, রতন দাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।