পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে কেন্দ্রের নিট পরীক্ষা,চরম দুর্নীতির যে স্বরূপ প্রকাশ পেয়েছে সেটি আকস্মিক ঘটনা নয়,বরং দীর্ঘদিনের বহমান বেনিয়ম ও তার পথ ধরে পুঁজির অনুপ্রবেশের সম্মিলিত ফল। দুই দুর্নীতিকে পাশাপাশি রাখলে দেখা যাবে, প্রায় অভিন্ন একটি দুর্নীতি-মডেল অনুসৃত হয়েছে।
শিক্ষাব্যবস্থায় এই বেনিয়ম অন্যান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যেরই পরিণতি।পুঁজিই যে সমস্ত সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নিয়ন্তা,এ ব্যপারে বিতর্কের অবকাশ নেই।তা নেই বলেই শিক্ষাব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়ে ‘কোটা ফ্যাক্টরি’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ সংশ্লিষ্ট মহলে প্রবল জনপ্রিয় হয়।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচিত সরকারের ভূমিকাটি হলো, এই পুঁজির ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সেই পুঁজির সর্বগ্রাসী প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে অতন্দ্র প্রহরীরূপে সমাজরক্ষকের ভূমিকা পালন করা।কিন্তু নির্বাচিত সরকার যদি সমস্ত ব্যবস্থাকে সেই পুঁজির কাছেই সমর্পণ করে, তখন নিঃসন্দেহে রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায় পরিবর্তিত হয়। দেশের কিছু কোচিং সেন্টারের যোগসাজশে সিংহভাগ সরকারী নিয়োগ যে বেশ কিছু কাল ধরেই হয়ে আসছে, সে কথা জেনেও না জানার ভান করা হয়েছিল, নাকি কর্তাব্যক্তিরা নিজেরাই এই অত্যন্ত ঝুঁকিহীন ও লাভজনক ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ করেছিলেন,তা কেবল কোনও নিরপেক্ষ তদন্তেই প্রকাশ হতে পারে। ইতিপূর্বে মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারির কথা আমরা সকলে জানি।কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির কথা ফাঁস হতেই এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত চল্লিশের বেশি মানুষের রহস্যজনক মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হয়। লক্ষণীয় যে, এই সব বড় দুর্নীতির কোনও মাথাই কিন্তু কোনও তদন্তের রায়ে জনসমক্ষে আসেনি।এর কারণ এটাই যে, প্রশাসনিক কর্তারাও চাননি তাদের স্বরূপ প্রকাশ পাক।তাই জনগণের স্মৃতি বিলোপের কথা মাথায় রেখে কমিটি গঠন করা হয়, যার খোঁজ পরে আর কেউ রাখেনি।
আর্থিক অসাম্যের ফলে মুষ্টিমেয় মানুষের কাছে আসে অপরিমিত অর্থ।এই সূত্র ধরেই ধনকুবের-রাজনীতিবিদের সন্ধি সামাজিক শক্তির নতুন উৎস হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।তাই আজ স্বাস্থ্য আর শিক্ষার মতো জনসেবামূলক ক্ষেত্রগুলিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বাণিজ্যিকীকরণের পথে।সমাজে অসাম্যের বৃদ্ধি এক দিনে হয় না, আবার অসাম্যের হ্রাসও একদিনে করা সম্ভব নয়।তবে মূল প্রশ্ন এটাই যে, অসাম্য দূরীকরণের ইচ্ছা শাসকের আছে কি না, আর সরকারের চালিকাশক্তি এই দুরীকরণের পক্ষে কি না। সরকারী নীতি যদি সমগ্র দেশকে লাগামছাড়া পুঁজির বিকাশের ক্ষেত্র হিসেবে বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে বৈষম্যের ফাটল বৃহৎ আকার ধারণ করবেই।গত কয়েক বছরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জনসেবামূলক ক্ষেত্রকে বর্তমান সরকার যেভাবে বেসরকারী পুঁজির জন্য উন্মুক্ত করার উদ্যোগ করেছে, তা ভবিষ্যতে অসাম্য বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত করে।সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষা ‘নেট’ নেওয়ার মাত্র চল্লিশ ঘন্টার মধ্যে তা বাতিলের ঘোষণা ও নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ কালে দেশবাসীর কাছে চরম লজ্জার।তার কয়েক দিন আগেই সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ ব্যাপক অনিয়ম ও লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে।দুটিই অতীব গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।যদি এই সব পরীক্ষায় স্রেফ টাকার জোরে অযোগ্যরা সুযোগ পেয়ে যায়, তা হলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার।তবে এগুলি কোনোটাই রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। রোগটির নাম দুর্নীতি। সে রোগ ছড়াতে ছড়াতে এটি এখন আর ব্যক্তিবিশেষের চারিত্রিক কারণে ঘটে না, বস্তুত এটি এখন ব্যবস্থাগত এবং কাঠামোগত।গ্রাম হোক বা শহর, মডেল হিসাবে এটি আজ প্রায় সর্বত্র বিরাজমান। কোনও নেতার আধিপত্য একটি গ্রামে সীমাবদ্ধ, কেউ আবার একটি গোটা শহরের অধিপতি।কিন্তু যার রাজনৈতিক অধিকারে যতটুকু জায়গা, সেখানকার খাজনা আদায় করার নির্বিকল্প অধিকারটি তার। কেউ কোথাও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাজনা আদায় করেন, কেউ সরকারী চাকরি বিক্রির চক্র গড়ে তুলে, কারও কাছে আবার কাঞ্চনমূল্যের বিনিময়ে বেআইনি নির্মাণের ছাড়পত্র মেলে। সবই চলে নির্দিষ্ট মডেলের মাধ্যমে। এক নেতার থেকে অন্য নেতার হাতে ক্ষমতা যেতে পারে, কিন্তু মডেলের চরিত্রটি পাল্টাবে কি না সেটাই কোটি টাকার প্রশ্ন।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…