দূষিত বাতাস থেকে শিশুদের দূরে রাখুন!!

 দূষিত বাতাস থেকে শিশুদের দূরে রাখুন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-আজকের দিনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে গোটা বিশ্বজুড়ে।তার ওপর নগরায়ন, শিল্পায়ন এসবের প্রভাবও পড়ছে বাতাসে। তাতে বড় বড় শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ।সবার জন্যেই এই বায়ু দূষণ অত্যন্ত খারাপ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর ঝুঁকি অনেক বেশি। দূষণের হাত থেকে কীভাবে শিশুদের রক্ষা করবেন তা নিয়েই এবার আলোচনা করা যাক।
বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে আজকের দিনে বাইরে বেরলে অনেক সময়ে শ্বাস নিতে ‘অসুবিধা হয়। আর যাদের শ্বাসজনিত কোনও সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা তো আরও বেশি। আর শিশুর ফুসফুসের জন্য এই বাতাস যে কতটা ক্ষতিকর, তা বলা বাহুল্য। দূষিত বাতাসের নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, আরএমপি (রেসপিরেবল পার্টিকুলেট ম্যাটার), এসপিএম (সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার) এসব ভাসমান কণা যেমন শিশুর জন্য ক্ষতিকর, তেমনই এদের কারণে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয় তাতে সহজেই ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন জীবাণু তাদের আক্রান্ত করে ফেলে।
দূষিত বাতাসের কারণে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ যেমন নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। আবার অন্যদিকে বায়ুদূষণের কারণে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিসসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগসমূহের ভোগান্তিও বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া শিশুর মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ কমে গিয়েও মাথা ঝিমঝিম করতে পারে, মাথাব্যথা, বিরক্ত ভাব বাড়িয়ে দিতে পারে।মস্তিষ্কেও রেখে যেতে পারে দীর্ঘস্থায়ী ও চিরস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব।
কীভাবে শিশুকে দূষিত বাতাস থেকে রক্ষা করবেন তা নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়তে হয় অভিভাবকদের। কারণ একটি শিশুকে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য বাইরে বেরতে হচ্ছে, খেলতেও বাইরে বের হচ্ছে। ফলে দূষণের কবলে তাদের পড়তেই হয়। এই সমস্যা থেকে শিশুদের দূরে রাখতেই হবে।
কিছু সাধারণ পদক্ষেপ শিশুদের দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।শিশুদের বাইরে যেতে হলে মাস্ক পরিয়ে নিতে হবে। শিশুরা অনেক সময়েই মাস্ক পরতে চায় না। কিন্তু তাদের মধ্যে এই অভ্যাসটি গড়ে তুলতে হবে।
চেষ্টা করতে হবে আগে থেকেই দূষণের পূর্বাভাস দেখে যে সময়টা দূষণের মাত্রা কম থাকে সেই সময়ে শিশুকে বাইরে নিয়ে বের হবেন। যেসব এলাকায় অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করে; যার আশপাশে কলকারখানা বেশি, সেসব রাস্তা কখনওই ব্যবহার করবেন না।
বাইরের বাতাসের পাশাপাশি ঘরের বাতাসও যে দূষণমুক্ত,এমন নয়।বরং রান্নাঘরের ধোঁয়া,ধূমপান কিন্তু শিশুর জন্য নিরাপদ নয়।এর থেকে শিশুকে বাঁচাতে আলো-বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রান্নার জন্য গ্যাস জ্বালান। এমন জায়গায় রান্নার কাজটি করবেন যেখানে ধোঁয়া সহজেই বের হয়ে যেতে পারে। এতে আপনার ঘরের পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে।ঘরের মধ্যে কখনওই ধূমপান করবেন না।
এই অভ্যাস দ্রুত ত্যাগ করুন।
মোমবাতি, মশার কয়েল জ্বালানো, এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহারও কমিয়ে ফেলতে হবে। কারণ এ থেকেও ঘরের পরিবেশ দূষিত হয়ে উঠতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাতাস বিশুদ্ধীকরণ যন্ত্র (এয়ার পিউরিফায়ার) পাওয়া যায়, প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘরে বা বারান্দায় গাছ লাগানো ভাল। গাছ সবসময়েই ঘরের পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। ফলে বাড়িতে একটু জায়গা থাকলেও গাছ রোপণ করুন।
শিশুর চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া দূষিত বাতাসের কারণে হয়।
শিশুর শারীরিক কোনও সমস্যা হলে তার লক্ষণ যেমন- দীর্ঘ সময় ক্লান্ত লাগে, মাথা ব্যথা করতে থাকে বুকে ব্যথা হয়, যাদের হাঁপানি রোগ আছে তাদের শ্বাসকষ্ট, কাশি আগের তুলনায় অনেক বেশি তীব্র হয়। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.