প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্রমোদীর অফিসে রাহুল গান্ধি, সঙ্গে মজুত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতিও!!
দেওয়ানি বিধি!!

২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগেই নরেন্দ্র মোদি বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেশবাসকে।ক্ষমতায় আসার পর গত দশ বছর একে একে বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি পালন যেমন করেছেন,তেমনি একাধিক বড় সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণ করেছেন।নোট বাতিল থেকে শুরু করে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদের প্রত্যাহার, তিন তালাক প্রত্যাহার, ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ, রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সিএএ), ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইন ইত্যাদি মোদির প্রতিশ্রুতি ও সিদ্ধান্ত গুলির মধ্যে অন্যতম।এছাড়াও আরও বেশকিছু প্রতিশ্রুতি ও সিদ্ধান্ত রয়েছে,যেগুলি ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করেছেন। কিছু বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে।তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ‘এক দেশ এক ভোট’ এবং ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’।
তৃতীয়বারের মতো দেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার দেশে ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ বাস্তবায়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল করেছেন।মোদির এইবক্তব্যের পরই বিভিন্ন মহলে স্বাভাবিকভাবেই এনিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়ে যায়।এদিন লালকেল্লায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন, “বর্তমানে যে দেওয়ানি বিধি রয়েছে তা সাম্প্রদায়িক।যা দেশে বিভেদের সৃষ্টি করে।সমাজে বৈষ্যমূলক আইনের কোনও স্থান নেই”।প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই জল্পনা তীব্র হয়ে ওঠে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলছেন, “দেশের বড় অংশের মানুষ মনে করেন, বর্তমানে যে দেওয়ানি বিধি।ওই বিধি বৈষম্যমূলক।দেশের শীর্ষ আদালত এবং সংবিধান প্রণেতাদের স্বপ্ন ছিল ভেদাভেদহীন সমাজ।দেশকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনকারী আইনের আজকের দিনে কোনও স্থান নেই।এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হোক। সময়ের দাবি হল ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি”।
উল্লেখ্য, বিজেপি তথা গেরুয়া শিবিরের দীর্ঘদিনের দাবি দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা।যাতে মুসলিম সম্প্রদায়কেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়। অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের ভিন্ন ভিন্ন আইনি অনুশাসনকে বাতিল করে একই আইনের আওতায় দেশের সকল নাগরিককে নিয়ে আসা।দেশের আইন যেন সব নাগরিকের ক্ষেত্রে সমান হয়।সমানভাবে বিচার্য হয়।কেননা,ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক দেশ। অন্তত খাতায় কলমে এখনও তাই উল্লেখ আছে। দেশের সংবিধানও একই কথা বলে।তাহলে আইন ভিন্ন হবে কেন?মোদ্দা কথা, ধর্মের অনুশাসন ভালো বা খারাপ যা-ই হোক না কেন, তাকে রাষ্ট্রতন্ত্র থেকে দূরে রাখাই কাম্য।যদি সেটা না করা যায় তাহলে ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলা কতটা যুক্তিসঙ্গত? এই প্রশ্ন উঠবেই। ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি যেভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি চালু করার পক্ষে আলোচনার দাবি তুলেছেন তা বেশ তাৎপর্য্য এবং ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অনেকে আবার ভিন্ন মতও পোষণ করছেন।তাদের মতে, তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি ফের মেরুকরণের রাজনীতি বাড়াতে চাইছে।একইসঙ্গে আরএসএসের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের কথা বলে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব কমানোর কৌশলও নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।তবে শেষপর্যন্ত বিষয়টি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই এখন দেখার।ল