দেও নদীর ভাঙন রোধে নেই কোনও পদক্ষেপ, গভীর উদ্বেগে শহরবাসী।
অনলাইন প্রতিনিধি :- কুমারঘাট পুর পরিষদ এলাকাতে দেও নদীর ভাঙন রোধে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর। নদীর ভাঙনে ইতিমধ্যে কুমারঘাট শহর এলাকার বেশ কিছু জমি এবং বাড়ি ঘর নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। গত জুন মাস থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে। বর্ষণের ফলে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পায়। ফলে নদীতে ভাঙনও শুরু হয়। কুমারঘাট শহর এলাকাতে নদীর ভাঙন রোধ করার জন্য প্রায় চার বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দল নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধি দলটি নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করার পরেও আজ পর্যন্ত দেও নদীর ভাঙন রোধের জন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কুমারঘাট শহর এলাকাতে নদীর ভাঙন রোধের জন্য ব্যবস্থা না নেওয়াতে আগামী দিনে কুমারঘাট শহরের অস্তিত্ব নিয়ে ও সংশয় রয়েছে।কুমারঘাট শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দেও নদী। আর এই দেও নদীতে দীর্ঘদিন ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর ভাঙনের ফলে ইতিমধ্যে কুমারঘাট শহরের বেশ একটা অংশ নদীর গর্ভে চলে গিয়েছে। এছাড়াও কুমারঘাটের নেতাজী সেতুর পূর্ত দপ্তরের ডাকবাংলোর পাশে যে বাঁধটি রয়েছে সেই বাঁধটির অবস্থাও বেহাল। কুমারঘাট শহর এলাকায় দেও নদীতে ভাঙন দেখা দিলেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর এই ভাঙন রোধের জন্য কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কুমারঘাট মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে চলে গেছে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে দেও নদী।এই এলাকাতে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে নদী গর্ভে এই এলাকার কৃষিজমি চলে গেছে। কোথাও কোথাও এই দেও নদী জাতীয় সড়কের একেবারেই পাশে চলে এসেছে।নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেলে জাতীয় সড়ক ভেঙে যাবার আআশঙ্কা দেখা দিয়েছে।এছাড়াও কুমারঘাট হর্টিকালচার অফিস সংলগ্ন এলাকাতে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে এই এলাকার বসতবাড়ির একটা অংশ নদীর গর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও কুমারঘাট নেতাজী চৌমুহনী সংলগ্ন দেও হাট এলাকাতেও নদীর ভাঙন চলছে। এই দেও হাটের বিপরীত পাশে কুমারঘাট পূর্ত দপ্তরের ডাকবাংলো সংলগ্ন এলাকাতে একটি বাঁধ রয়েছে। গত ২০১৮ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় এই বাঁধের অবস্থা খারাপ হয়েছিল। তখন তড়িঘড়ি এই এলাকাতে মাটির বস্তা ফেলা হয়। এরপর আর কোনও কাজ হয়নি। পাবিয়াছড়া বাজারের মাছ মাংসের শেড সংলগ্ন এলাকাতেও নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর ভাঙনে ইতিমধ্যে শহর এলাকার বেশ জমি বসত বাড়ির একটা অংশ নদীর গর্ভে চলে গিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সমগ্র ঊনকোটি জেলাতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে কুমারঘাট মহকুমা এলাকার প্রচুর জমি এবং বসত বাড়ি নদী গর্ভে চলে যায়।বন্যার পর পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের একটি উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দল কুমারঘাট শহর সহ সমগ্র ঊনকোটি জেলা সফর করে নদীর ভাঙন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে। এই প্রতিনিধি দলটি আশ্বাস দিয়েছিল নদীর ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু প্রতিনিধি দলটি নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে যাবার পর প্রায় চার বছর অতিক্রান্ত হতে যাচ্ছে কিন্তু নদীর ভাঙন রোধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যে বর্ষা প্রবেশ করে। আর বর্ষা প্রবেশের পরেই প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়। বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হবার ফলে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পায়। ফলে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে। এবার বর্ষা শুরু হবার পরেই নদীর জল বাড়ার সাথে সাথে কুমারঘাট শহর এলাকা ছাড়াও পেচারথল মাছমারা এলাকাতে দেও নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে।মাছমারা, ধনিছড়া সহ পেচারথল এলাকার নদীর দুই দিকে প্রচুর পরিমাণে কৃষিজমি রয়েছে। এই এলাকার জনগণের আয়ের উৎস হলো ‘কৃষি। কিন্তু বর্তমানে এই এলাকাতে নদীর ভাঙনের ফলে প্রচুর কৃষিজমি নদীর গর্ভে চলে গেছে। পেচারল মাছমারা এলাকার জনগণ নদীর ভাঙন রোধের দাবি জানালেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এছাড়াও কুমারঘাট শহর এলাকার জনগণের অভিমত হলো, কুমারঘাট শহর এলাকাতে নদীর ভাঙন যেভাবে দেখা দিয়েছে তা যদি রোধের ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে কুমারঘাট শহরের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়তে পারে।