দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ত্রিপুরা

 দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ত্রিপুরা
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচার পর্বের সূচনাস্থল হিসেবে তিনি উত্তরপূর্বের এই ছোট রাজ্যকেই বেছে নিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি হয়ে এই রাজ্য দিয়েই তিনি উত্তর পূর্বাঞ্চলে তার প্রথম সফর শুরু করলেন। বুধবার টাউন হলে নাগরিক সংবর্ধনার পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এই বিষয়টায় আলোকপাত করে ত্রিপুরার সাথে তার আন্তরিকতার সম্পর্কের কথা মেলে ধরেছেন। সেই সাথে তিনি রাজ্যের জনজাতিদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং পরম্পরার কথাও উল্লেখ করেছেন। তার বক্তব্যে রাজ্যের অগ্রগতি, ভবিষ্যৎ দিশার প্রসঙ্গও স্থান পেয়েছে।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এদিন রাজ্যবাসীর দেশপ্রেমের ভাবধারার কথা নাতিদীর্ঘ বক্তব্যের শুরুতেই উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ত্রিপুরায় রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধের শহিদ এলবার্ট এক্কার সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন। একই সাথে বলেন, বীর শহিদের ভাবধারাতেই রাজ্যবাসী দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। রাজ্যের শিল্প ও সংস্কৃতি ঘরানার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজ্যের জনজাতিদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সাথে আধুনিক ভাবধারাও রয়েছে। তিনি রাজপরিবারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষা বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবদান ছিল উল্লেখনীয়। সাহিত্য রচনার শুরুর দিকে ত্রিপুরার রাজাদের কাছে উৎসাহ পেয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যার জন্য তিনি বার বার পা রেখেছিলেন এই রাজ্যে। শচীন দেববর্মণ এবং রাহুল দেববর্মণদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বাদ দিয়ে আধুনিক ভারতের সঙ্গীতের কথা কল্পনা করা যায় না ।
রাষ্ট্রপতি মুর্মু এদিন রাজ্যের সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদের প্রসঙ্গে বাঁশের কথা উল্লেখ করেন। তিনি রাজ্যের বাঁশের গুণগতমানের বিষয়টি মেলে ধরে তার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছেন। যোগাযোগ ক্ষেত্রে ত্রিপুরার অগ্রগতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ফেণী সেতু বাংলাদেশের সাথে ভারতের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা এনে দেবে। ইন্দো-বাংলা মৈত্রীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত বাংলার সম্পর্ক সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ত্রিপুরা শুরু থেকেই অগ্রণীয় ভূমিকা পালন করেছে। রাষ্ট্রপতি এদিন রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রেরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত উন্নতি করে চলেছে ছোট রাজ্য ত্রিপুরা। স্বচ্ছ রাজ্যের ক্যাটাগরিতে ত্রিপুরা পুরস্কৃত হওয়ায় রাষ্ট্রপতি রাজ্যবাসীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। রাজ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য কম হওয়ার জন্যও তিনি গোটা রাজ্যবাসীকে কৃতিত্ব দেন। এদিন রাষ্ট্রপতির হাতে বাঁশজাত সামগ্রীতে তৈরি স্মারক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত শহরে রাষ্ট্রপতি মুমুকে স্বাগত জানাতে পেরে রাজ্যবাসী গর্বিত। প্রথম সফরের জন্য রাজ্যকে বেছে নেওয়ার জন্যও তিনি তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এদিন রাজ্যের অগ্রগতির লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে দিশাও চেয়েছেন। উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ বলেন, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর জীবনই দেশবাসীর জন্য প্রেরণা। রাজ্যবাসীও তার দিশায় পা বাড়াতে উৎসাহ পাবে। এদিন স্বাগত বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার। তিনি আগরতলা পুর সংস্থার প্রেক্ষাপট মেলে ধরে বলেন, সবচেয়ে পুরনো পুর সংস্থাগুলির মধ্যে আগরতলা অন্যতম। তিনি গত ১০ মাসে এএমসির অগ্রগতির চিত্রও রাষ্ট্রপতির সামনে মেলে ধরেন। এদিনের নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য সহ বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ ছিলেন। এএমসির উদ্যোগেই ওই অনুষ্ঠান হয়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.