দেশের প্রথম বেসরকারী পাম গবেষণা কেন্দ্র হচ্ছে রাজ্যে: রতন!!

 দেশের প্রথম বেসরকারী পাম গবেষণা কেন্দ্র হচ্ছে রাজ্যে: রতন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভোজ্য
তেলের চাহিদা মেটাতে সারা দেশের সাথে ত্রিপুরাতেও গত দুই বছর ধরে পাম গাছের চাষ শুরু হয়েছে।ওই গাছের ফল থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয় ভোজ্য তেল।যা অয়েল পাম, বা পাম অয়েল নামে পরিচিত।২০২১ সালে দেশের খ্যাতনামা পাম অয়েল উৎপাদক সংস্থা গোদরেজ এগ্রোভেট লিমিটেডের সাথে রাজ্য সরকার চুক্তি সম্পাদন করে।এই সংস্থা শুধু তেল উৎপাদনই করে না, একই সাথে নার্সারির মাধ্যমে উন্নত প্রজাতির পাম গাছের চারাও উৎপাদন করে।চুক্তি মোতাবেক সংস্থা ইতিমধ্যে ধলাই জেলার নালকাটাতে বছরে তিন লক্ষ চারা উৎপাদনের নার্সারি গড়ে তুলেছে। শুধু চারা উৎপাদনই নয়, চুক্তি মোতাবেক সংস্থা এবার নালকাটাতে ভারতের প্রথম অয়েল পাম রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করতে চলেছে। একই সাথে নালকাটাতে অয়েল পাম প্রসেসিং কারখানাও স্থাপন করতে যাচ্ছে।শনিবার নালকাটাতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুটি প্রকল্পেরই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ।উপস্থিত ছিলেন সংস্থার গবেষণা ও উন্নয়ন প্রধান ড.এইচকে কুলাভিরাসিংগাম এবং পল্যান্টেশন বিশেষজ্ঞ এসডি গুথারি।এরা দুজনই মালয়েশিয়ার কৃষি বিজ্ঞানী ও অয়েল পাম বিশেষজ্ঞ। ছিলেন গোদরেজ এগ্রোভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলরাম সিং যাদব, অয়েল পাম প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটের মুখ্য কার্যনির্বাহী সৌগত নিয়োগী,স্থানীয় বিধায়ক পলদাংশু, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় সহ বিশিষ্টজনেরা।এছাড়াও অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্যভাবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অয়েল পাম চাষিরা।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের কৃষি দপ্তর প্রাথমিক পর্যায়ে রাজ্যের সাত হাজার হেক্টর জমিতে পাম চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।এ দিন অনুষ্ঠানে ভাষণ রাখতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার মাটি এবং জলবায়ু পাম গাছ চাষের জন্য অত্যন্ত উত্তম এবং উর্বর।শুধু তাই নয়, পাম চাষ অত্যন্ত লাভজনক।এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে দারুণ লাভবান হবেন।ভারত সরকার সারা দেশব্যাপী ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে পাম চাষের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।মন্ত্রী জানান, রাজ্যে পাম চাষের জন্য গোদরেজ এবং পতঞ্জলি এই দুটি সংস্থার সাথে রাজ্য সরকারের চুক্তি হয়েছে।গোদরেজ কোম্পানি উত্তর, ঊনকোটি এবং ধলাই জেলাতে পাম চাষের যাবতীয় দেখাশোনা করছে।বাকি পাঁচটি জেলায় কাজ করছে পতঞ্জলি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, শুধু পাম চাষ করলেই হবে না। কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত
ফসল সময়মতো প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে, তার জন্য চুক্তি মোতাবেক ধলাই জেলার নালকাটাতে স্থাপন করা হবে অয়েল পাম প্রক্রিয়াকরণ কারখানা।শুধু তাই নয়, দেশের মধ্যে প্রথম নালকাটাতেই গড়ে তোলা হবে অত্যাধুনিক অয়েল পাম গবেষণা কেন্দ্র।আজ দুটি প্রকল্পেরই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।শীঘ্রই এর কাজ শুরু করা হবে।দশ হেক্টর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হবে প্রক্রিয়াকরণ কারখানা। মন্ত্রী জানান, মালয়েশিয়া থেকে উন্নতমানের পাম গাছের বীজ এনে এখানে নার্সারি করা হয়েছে।ইতিমধ্যে এই নার্সারি থেকে চারা কৃষকদের সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষকরাও সেই চারা রোপণ করে নিয়েছে।প্রাথমিকভাবে রাজ্যে ৮৫৩ হেক্টর জমিতে লাগানো হয়েছে পাম গাছ। এখন প্রতিদিনই চাষের জমির পরিমাণ বাড়ছে।পাম চাষের জন্য অনলাইন অ্যাপেরও সূচনা করেছেন মন্ত্রী।
জানা গেছে, গোদরেজ সংস্থা নালকাটাতে বর্তমানে বছরে তিন লক্ষ চারা উৎপাদনসম্পন্ন নার্সারি করেছে।এটিকে আগামীদিনে বছরে পাঁচ লক্ষ চারা উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে।২০২৭ সালের মধ্যে ত্রিপুরায় দশ হাজার হেক্টর জমিতে পাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।এ দিন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ কৃষকদের পাম চাষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.