দেশের হৃতগৌরব ফেরাতেই জাতীয় শিক্ষানীতি : মুখ্যমন্ত্রী।

 দেশের হৃতগৌরব ফেরাতেই জাতীয় শিক্ষানীতি : মুখ্যমন্ত্রী।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || প্রাচীনকালে বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ভারতের নালন্দা, তক্ষশিলার মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে আসতো। এসব প্রতিষ্ঠানের বিশ্বজুড়ে সুখ্যাতি ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিক্ষাক্ষেত্রে দেশের এই হৃতগৌরব পুনরায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছেন। তাই ভারতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বিশ্বমানের সর্বোত্তম শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসাবে কর্ণাটক নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ বাস্তবায়ন করে।পরবর্তীতে মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, আসাম সহ অন্য রাজ্যেও এই জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করা হয়। শুক্রবার ত্রিপুরা রাজ্যেও প্রাথমিকভাবে উচ্চশিক্ষাস্তরে এই জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণ করা হচ্ছে। এদিন আগরতলা টাউন হলে এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি – ২০২০-তে অনার্স / রিসার্চ সহ চার বছরের ডিগ্রি কোর্স রয়েছে। এছাড়াও এই শিক্ষানীতিতে এগজিট ও এন্ট্রান্সের সুবিধা রয়েছে। কোনও ছাত্র যদি মনে করে সে তার বর্তমান পাঠ্যক্রম বাদ দিয়ে অন্য কোনও বিষয়ে পড়াশোনা করবে তবে সে কলেজ থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। তখন তাকে সার্টিফিকেট প্রদান করে মূল্যায়নও করবে সংশ্লিষ্ট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুণগতমানের শিক্ষা প্রদান সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি সফল রূপায়ণের লক্ষ্যে সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করার উপরও শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের গুরুত্ব দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। দেশের যেকোনও অংশের ছেলেমেয়েদের তুলনায় রাজ্যের ছেলেমেয়েরা প্রতিভার দিক দিয়ে কোনও অংশে কম নয়। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০- তে সমগ্র দেশের শিক্ষা পদ্ধতি এক হওয়ার ফলে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের জাতীয় স্তরে শিক্ষা গ্রহণে কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, ভারতের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, পরম্পরাকে সামনে রেখে এই শিক্ষানীতি কার্যকর করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশের মানুষ এর সুফল পাবে। শিক্ষাক্ষেত্রে যুগোপযোগী পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে চৌত্রিশ বছর পর দেশে প্রবর্তিত হয়েছে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০। রাজ্যে সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। আগামীতে রাজ্যে বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। উত্তর জেলায় আরও একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। বর্তমানে রাজ্যে আইন বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধীরে ধীরে ত্রিপুরাতে তৈরি হচ্ছে এডুকেশন হাব।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী প্রজন্মের হাতেই রয়েছে দেশ ও বিশ্বের দায়িত্ব।এক্ষেত্রে জ্ঞান ছাড়া কিছু সম্ভব নয়। আর এই জ্ঞানের বিস্তারে ছাত্রছাত্রীদের দিশা দেখান শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ। সমস্ত বিষয়ে সঠিক রূপরেখা দেওয়া না গেলে প্রকৃত অর্থে মানুষ তৈরি করা সম্ভব নয়। শুক্রবার রাজধানীর টাউন হলে উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত রাজ্যে উচ্চশিক্ষায় জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির টার্গেট রাখা হয়েছে ২০৩০ পর্যন্ত। কিন্তু তার আগেই রাজ্য ও দেশের ছাত্রছাত্রীগণ এর সুফল পেতে পারেন। সারা দেশে এক নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় পড়ার সুযোগ পাবে ছেলেমেয়েরা। এদিন থেকে রাজ্যে উচ্চশিক্ষা স্তরে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা হলো। বিদ্যালয় স্তরের ক্ষেত্রে আরও কিছুটা সময় লেগে যেতে পারে।এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গঙ্গাপ্রসাদ প্রসেইন, এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সত্যদেও পোদ্দার, শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী, অধিকর্তা এনসি শর্মা সহ অন্য বিশিষ্ট অতিথিগণ। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষিকা ও অধ্যক্ষগণ ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.