দেশে সুশাসনের পথদ্রষ্টা ছিলেন বাজপেয়ী : মুখ্যমন্ত্রী!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুশাসন ও সুপ্রশাসনের মধ্য দিয়ে সমাজ উন্নত হয়। আর এই দুইই দেখিয়েছেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা ভারতরত্ন প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী। তাঁর রাজত্বকালে দেশে সুশাসন শুরু হয়েছিল। বর্তমান সরকার এই দিশা নিয়ে কাজ করছে।রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক অটল কবিতা ও সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা উদয়পুরে এই মন্তব্য করেন।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী তিনি তার শাসনকালে প্রকৃত শাসন এবং সুশাসন কী তা দেখিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অটল বিহারী তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ১৩ দিনের, ১৩ মাসের ও পরে পূর্ণাঙ্গ সময়ের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন। উনার শাসনকালে সুশাসন কাকে বলে তা তিনি দেখিয়েছেন। সেই কারণে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনকে সুশাসন দিবস হিসেবে পালন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুশাসন আর সুসম্পর্ক দুটি দরকার। তিনি বলেন, শুধু শাসন করলে হবে না।মানুষের সুসম্পর্ক রাখাটাও আমাদের বিশ্বাসের জায়গায় আনতে হবে।জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে সকলকে অবহিত করার লক্ষ্যেই এই ধরনের কবিতা ও সাহিত্য উৎসব একটা বাস্তবমুখী উদ্যোগ বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন। মুখ্যমন্ত্রী এই উপলক্ষে আজ একটি স্মরণিকা প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর লেখা একটি কবিতা তার ভাষণশেষে পাঠ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি বর্তমানে দেশের একটি সবচেয়ে ভালো পলিসি।
দেশের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের রাজ্য সরকারও একই বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। সবকিছুতেই স্বচ্ছতা থাকার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। স্বচ্ছতা না থাকলে কোনও ব্যক্তির যেমন ইমেজ উজ্জ্বল হয় না তেমনি কোনও সরকারের মধ্যেও স্বচ্ছতা না থাকলে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থাকে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিধানসভায় পেপারলেস অর্থাৎ ই বিধানসভা আমরা চালু করেছি।আমাদের কেবিনেট এখন ই কেবিনেট চালু হয়েছে। আমাদের রাজ্য সরকারের সব কাজকর্ম আগে ছিল সব কাগজপত্রের মাধ্যমে। বর্তমান সরকার সারা রাজ্যে বিশেষ করে প্রত্যেকটি জেলাতেই পেপারলেস পরিষেবা শুরু হয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবকিছুর পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে রাজ্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যদি আইনশৃঙ্খলা ঠিক না থাকে তাহলে সুশাসন কোথা থেকে আসবে। ঘরে যদি সুরক্ষিত না থাকে ঘরের মধ্যে কোথা থেকে কালচার ডেভেলপমেন্ট হবে। আজকের কবিতা ও সাহিত্য উৎসব এই সুশাসনের রূপ।মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ছাত্রছাত্রীদের শব্দ ভাণ্ডার অনেক সমৃদ্ধ করতে হবে। আধুনিক যুগে, গুরুজনদের সম্মান, শ্রদ্ধা যেন কোথাও ঘাটতি রয়েছে। এটাকে আরও উন্নত করতে হবে। ডিজিটাল যুগে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সম্মান ও সম্বোধন হারিয়ে ফেললে চলবে না। বড়দের শ্রদ্ধা করতে হবে। ছোটদের ভালোবাসতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অটল বিহারী বাজপেয়ী তিনি একজন বাক্তি নন, অটল বিহারী বাজপেয়ী একটি প্রতিষ্ঠান। অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রতিটি কথাই মূল্যবান ছিল। এক একটি কথা যেন একটি বাণী। তাঁর প্রতিটি কণার মধ্যে মানুষের কাছে বার্তা দিচ্ছেন। এই বার্তাগুলি আমরা একবারও যদি স্মরণ করি ভাবি চিন্তা করি তাহলে আমাদের পথচলা অনেকটা সুগম হবে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃত মানুষ যদি হতে হয় তবে কবিতা ও সাহিত্যের প্রতি অনুরোধ খুবই প্রয়োজন। কারণ এর মধ্যে জীবনকে খুঁজে পাওয়া যায়। আগামী দিনে আমার জীবন কোন্ পথে চলবে তার রস এর মধ্য দিয়ে আস্বাদন করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বই পড়ার প্রতি সকলকে আরও আগ্রহ বাড়াতে হবে। রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিতে পাঠকদের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এ রকম হওয়া ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি নিজেও মাঝেমধ্যে আগরতলার লাইব্রেরীতে যান। যদিও তিনি দেখতে পান ওনাকে যে বইগুলি পড়তে দেওয়া হয় তার মধ্যে থাকে অসংখ্য ধুলাবালি।অর্থাৎ এর দ্বারা প্রমাণিত গ্রন্থাগারগুলিতে পাঠকের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। বইয়ে হাত কম লাগছে। এটা খুব দুঃখজনক। বিজ্ঞানের অগ্রগতির যেমন সুবিধা রয়েছে এর অসুবিধাও রয়েছে।বিজ্ঞানের যুগে এখন আর এত বই পড়ার সময় নেই। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, লেখক ও পাঠক হলো একে অন্যের পরিপূরক। লেখক থাকলে পাঠক ছাড়া বাস্তব অকল্পনীয়।আজকের এই অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় ও উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। স্বাগত ভাষণ দেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি. কে চক্রবর্তী। অটল বিহারী বাজপেয়ীর ৯৯তম জন্মদিন উপলক্ষে উদয়পুর রাজর্ষি কলাক্ষেত্রে আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তিন বিধায়ক রঞ্জিত দাস, অভিষেক দেবরায় ও জিতেন্দ্র মজুমদার, গোমতী জিলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবল দেবরায়, উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান শীতল চন্দ্র মজুমদার, মুম্বাইয়ের দৈনিক জাগরণ পত্রিকার ব্যুরো চিফ ওম প্রকাশ তিওয়ারি, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট কবি বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন রাজ্য সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। আজকে এই অনুষ্ঠানে দুই কবি কিশোর রঞ্জন দে ও কবি রমেশ দেববর্মাকে অটল বিহারী বাজপেয়ী সাহিত্য সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে এবং দুইজনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রাজ্যভিত্তিক এই উৎসবে গোটা উত্তরপূর্ব রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ সহ ত্রিপুরা রাজ্যের চার শতাধিক বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিকগণ অংশ নিয়েছেন।

Dainik Digital

Recent Posts

উচ্চশিক্ষার গতিভঙ্গ!!

গত জুলাইয়ে,তৃতীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রথম তথা সর্বশেষ সংসদ অধিবেশনে, লোকসভায় এক প্রশ্নোত্তর পর্বে কেন্দ্রীয়…

42 mins ago

গুলিবিদ্ধ অভিনেতা গোবিন্দা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গুলিবিদ্ধ অভিনেতা তথা শিবসেনা নেতা গোবিন্দা। জানা গিয়েছে ভুলবশতই তাঁর নিজের বন্দুক থেকে…

58 mins ago

রাজধানীতে সিপিএমের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম ও দপ্তরের পরিকাঠামো তলানিতে এসে ঠেকেছে।এই কারণে,রাজ্যে ৪০ শতাংশ গ্রাহকের…

1 hour ago

ভোক্তাদের পকেট কেটে চিনি, সুজি, ময়দা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে বিনামূল্যে চিনি, সুজি,ময়দা দেওয়ার নামে সস্তা রাজনীতি করতে গিয়ে লেজেগোবরে হয়েছে বিজেপি…

2 hours ago

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে হার্টের ক্ষতি হয়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ডায়াবেটিসের রোগী এখন প্রায় ঘরে ঘরেই। জীবনযাপনে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে সহজেই এই রোগ…

2 hours ago

গয়নার ল্যাবে তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম রুবি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলায় চুনি, ইংরেজিতে রুবি।চুনির রং কতটা টকটকে লাল, তার উপর এই মানিকের দাম…

1 day ago