রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
দেড় যুগ ধরে নামী হাসপাতালে ডাক্তারের বেতন ৯ হাজার
চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর প্রথম কর্মজীবনে তিনি যখন প্রবেশ করেন, তখন মাসে বেতন ছিল ৯ হাজার টাকা। তার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল সিএমসি ভেলোরে, ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসাবে। নামী হাসপাতালের অন্যান্য ডাক্তারের কাজের ধরন এবং সাদামাঠা জীবনযাপন দেখে বুঝেছিলেন, এই পেশার মূল কথা মানবসেবা। টাকার আতিশয্য কিংবা বিলাসের, গল নয়, অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তোলাই এই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। আরও বুঝেছিলেন, একজন ডাক্তারের জীবন হবে মিতব্যয়ী।এভাবে কেটে গেছে ১৬ বছর। আজও মাসে ৯ হাজার টাকা বেতনেই সংসার চালান স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সুধীর কুমার। ডাক্তার কুমার বর্তমানে হায়দরাবাদের অ্যাপোলো হাসপাতালের একজন নিউরোলজিস্ট (মেডিসিন)। সম্প্রতি টুইটারে তিনি নিজের জীবনের মূল্যবোধ ও আদর্শের কথা তুলে ধরেছেন। তার পোস্ট অচিরে ভাইরাল হয়েছে। টুইটারে ডাক্তার কুমার লিখছেন, ‘২০০৪ সালে নিউরোলজিতে ডিএম করার পর আমার বেতন ছিল মাসে ৯ হাজার টাকা। সিএমসি ভেলোরে যখন আমি অধ্যাপকদের দেখতাম, তখন বুঝতে শিখেছিলাম চিকিৎসকদের জীবন হতে হবে মিতব্যায়ী। যতটুকু না থাকলেই
নয়, ততটুকু নিয়েই তাদের বাঁচতে হবে।” ঘটনা হল, ডাক্তার কুমার নিজে থেকে নিজের ঢাক পেটাতে চাননি। টুইটারে একজনের মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে নিজের কথা বলেছেন তিনি। পেশায় চিকিৎসক ওই ব্যক্তি লিখেছিলেন, একজন তরুণ চিকিৎসক যিনি সদ্য প্র্যাকটিস শুরু করেছেন, তার পক্ষে সংসার সামলে সমাজসেবা করা খুবই কঠিন। সেই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরেই নিজের সংগ্রামের কথা বলেন ডাক্তার কুমার। পরে অন্য একটি টুইটে তিনি লেখেন, “আমার কম বেতন নিয়ে মা মনকষ্টে ভুগতেন। কিন্তু ওই বেতনে আমি খুশি ছিলাম। আসলে মা ১২ বছর ধরে স্কুলে পড়ার সময় আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে দেখেছেন, তারপর আরও ১২ বছর এমবিবিএস, এমডি এবং ডিএম। আপনারা হয়তো একজন মায়ের ভালবাসা এবং যন্ত্রণা দুটোই বুঝতে পারছেন।’ ডাক্তার কুমার লিখেছেন, ‘১৭ বছর বয়সে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য একা একা ট্রেনে করে বিহার থেকে ভেলোরে গিয়েছিলাম। বাবা-মার সেই আর্থিক সংগতি ছিল না যে, ছেলের সঙ্গে যাবেন। ৫ বছরে বাড়ির কেউ আমাকে দেখতে আসেননি। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর পাঁচ বছর একা একাই সবকিছু সামলেছি।’ তিনি জানিয়েছেন, এমবিবিএস পড়ার সময় মাত্র দুই সেট জামা-কাপড় ছিল তার। সিনিয়রদের থেকে বইয়ের পুরোনো সংস্করণ ধার করে পড়াশোনা করতেন। কোনওদিন রেস্তোরাঁয় খাননি বা সিনেমা দেখতে যাননি। ধূমপান বা মদ্যপান ছিল তার কাছে বিলাসিতা।