দ্রুত এগোচ্ছে জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ

 দ্রুত এগোচ্ছে জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বৃষ্টিতে দুটি জাতীয় সড়ক সাময়িকভাবে নষ্ট হয়ে পড়েছে। আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক এবং কৈলাসহার-আগরতলা ভায়া খোয়াই, এই দুটি সড়ক সংস্কারের কাজ চলার কারণেই মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভোগের স্থায়ী সমাধান হতে চলেছে। কেননা দুটি জাতীয় সড়ক বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংস্কারের কাজ চলছে। সংস্কারের কাজে নিয়োজিত বহিঃরাজ্যের ঠিকাদারি সংস্থা দাবি করেছে এই বছরের মধ্যেই দুটি জাতীয় সড়ক সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আগামী বছর এই সময়ের মধ্যে প্রতি ঘন্টায় একশ কিলোমিটারের বেশি বেগে গাড়ি চালানো সম্ভব হবে। বিশেষত রাজ্যে দ্বিতীয় বিকল্প জাতীয় সড়ক নির্মাণ উন্নয়নের ল্যান্ডমার্ক হতে চলেছে। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চললে তেইশের মধ্যেই কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা। এই পরিকল্পনা বাস্তব রূপদানের জন্য শুধু সময়ের অপেক্ষা করছে। রাজ্যবাসী যোগাযোগের সোনালী দিন হাতের কাছে পাওয়ার জন্য প্রহর গুনছে ।

নির্মাণকাজ যে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে তা দেখে মনে হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে চলেছে । ১৯৭৯ সালে আসামের কুকিকল থেকে আগরতলা পর্যন্ত রাজ্যের বিকল্প জাতীয় সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর বিকল্প জাতীয় সড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় । রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির সাথে যোগাযোগ করা হয়। আধুনিকরণের জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবি জানালে কেন্দ্রীয় সরকার তা মঞ্জুর করে । অর্থাৎ বর্তমান সরকার গঠনের পর বিকল্প জাতীয় সড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকীকরণের কাজ শুরু করা হয় । বিকল্প জাতীয় সড়ক তথা আসামের কুকিতল থেকে রাজধানী আগরতলা পর্যন্ত সড়কের প্রশস্ততা এবং আধুনিকীকরণের জন্য প্রথমে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয় । জমি অধিগ্রহণের পর সড়কের উন্নয়নের জন্য যাবতীয় কাজকর্ম দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হয় । সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে প্রথমে সমস্যা হয়েছিল । সেই সমস্যা অতি সহজেই মিটিয়ে নেওয়া হয় । একদিকে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয় , অন্যদিকে সড়ক নির্মাণের কাজও শুরু করে দেওয়া হয় । জলা জমি ও নীচু জমিগুলিতে মাটি ভরাটের সঙ্গে পাহাড় ও টিলাভূমি কেটে সড়ক নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করা হয় । বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সেই কাজ জারি রাখা হয়েছে । অর্থাৎ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে আসামের কুকিকল থেকে রাজধানী আগরতলা পর্যন্ত জাতীয় বিকল্প সড়কের কাজ ।

এই সড়কটি ত্রিপুরার প্রবেশদ্বার কাঠালতলী , প্রেমতলা , কদমতলা ধর্মনগর , কৈলাসহর , ফটিকরায় , কমলপুর , খোয়াই , মোহনপুর হয়ে রাজধানী আগরতলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত। বর্তমানে উঁচু জায়গা ও টিলাভূমির মাটি কাটার কাজ প্রায় সমাপ্ত । মাটি কাটার কাজেও আধুনিক মেশিন ও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে । কেননা বর্ষা মরশুমে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে টিলা ও পাহাড়ের মাটি ধসে কিংবা ভেঙে রাস্তায় পড়ে । আর মাটির ধসজনিত কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে । এ ধরনের অভিজ্ঞতা অতীতে অনেকবার দেখা গেছে । সেই অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে আগে থেকেই আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে । সড়কের প্রশস্তকরণ এবং আধুনিকীকরণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে । পাহাড় ও টিলাভূমি কাটতে গিয়ে এক ধরনের উন্নতমানের সিন্থেটিক পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে । বহি : রাজ্যের ঠিকাদারি রাস্তার এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানালেন সিন্থেটিক পলিথিনগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে । পাশাপাশি নিচু জায়গাগুলি ভারী যানবাহন চলাচল করার কারণে ভবিষ্যতে যাতে বসে না যায় তার জন্যও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে । কেননা অতীতে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক নির্মাণে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছিল । পাথারকান্দি থেকে ত্রিপুরা চুরাইবাড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে ব্যাম্বু টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছিল পাথারকান্দি চুরাইবাড়ি সড়ক নির্মাণের অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে বিকল্প জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ শুরুতেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে । নিচের জমিগুলিতে পলিথিন জাতীয় সিন্থেটিকের সঙ্গে আধুনিক প্রণালী ব্যবহার করা হচ্ছে । সড়কের হাল – হকিকত খোঁজখবর নিতে এই প্রতিবেদক কমলপুর থেকে আগরতলা সড়ক নির্মাণের কাজ পরিদর্শনকালে চরম ব্যস্ততা পরিলক্ষিত হয়েছে কমলপুর থেকে আগরতলা বিকল্প জাতীয় সড়ক নির্মাণে নানা ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ২০২৩ সালের মধ্যে সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.