ধনপুরে কৌশিক, বক্সনগরে মিজান,উপনির্বাচনে দুই আসনেই প্রার্থী ঘোষণা সিপিএমের।
অনলাইন প্রতিনিধি :- উপভোটে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলো সিপিএম।২৩ ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী হলেন কৌশিক চন্দ।২০ বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী হলেন মিজান হোসেন। ষোল আগষ্ট ধনপুর এবং বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে মনোনয়ন দাখিল করবেন সিপিএম প্রার্থীরা। কংগ্রেস ও তিপ্ৰা মথা দলের সম্মতিতে আসন্ন উপভোটের লক্ষ্যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। আজ মেলারমাঠ রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই বললেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী। তিনি জানান, রাজ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ভোট যাতে ভাগাভাগি না হয় এ লক্ষ্যে সিপিএম, তিপ্ৰা মথা, কংগ্রেস নেতৃত্বের সাথে বৈঠক হয়েছে। আর এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে শুধুমাত্র উপভোট নয় । বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে আসন্ন সব নির্বাচনে রাজ্যে বিরোধী দল সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রার্থী দেবে।যে বিধানসভা কেন্দ্রে তিপ্ৰা মথা শক্তিশালী ওই কেন্দ্রে তিপ্ৰা মথা প্রার্থী দেবে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে। আর রাজ্যের ষাট বিধানসভা কেন্দ্রে যে গুলিতে সিপিএম শক্তিশালী ওইসব কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে সিপিএম। তিন দলের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধনপুর এবং বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম শক্তিশালী। তাই এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দিলো সিপিএম।জিতেন চৌধুরী জানান, সিপিএম- কংগ্রেস-তিপ্ৰা মথা দলের রাজ্য নেতৃত্ব বুঝে গিয়েছেন বিরোধী দলের ভোট ভাগাভাগির ফলে বিজেপি পুনরায় ক্ষমতায় এসেছে। তাই এই উপভোটে বিরোধীদের ভোট ভাগাভাগি রোখাই প্রধান লক্ষ্য। জিতেনবাবুর দাবি, কংগ্রেস-তিপ্ৰা মথা এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দিচ্ছে না। কারণ এই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দিলে আবারও ভোট ভাগাভাগি হবে। আর এর ফলে লাভবান হবে শাসকদল। কারণ সারা দেশে গণতন্ত্র ও সংবিধানকেই রক্ষা করার জন্য দেশের সবগুলি রাজনৈতিক দলও এক সাথে এসে গিয়েছে। দেশের ও রাজ্যের মানুষ তাই চাইছেন। আর বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যেই দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল সব স্বার্থ ত্যাগ করে মানুষের জন্য একসাথে এসে গিয়েছে। তাই রাজ্যেও সিপিএম- কংগ্রেস-তিপ্ৰা মথা একসাথে এসেছে। তিন দলের মুল লক্ষ্য রাজ্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। রাজ্যে আইনের শাসন পুন: প্রতিষ্ঠা সহ দেশের সংবিধানকে রক্ষা করা। রাজ্যবাসীও তাই চাইছেন। বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে রাজ্যের প্রায় একষট্টি শতাংশ মানুষ সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধী দলের ভোট ভাগাভাগির জন্য রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও দল মাত্র ঊনচল্লিশ শতাংশ মানুষের সমর্থনে ক্ষমতা দখল করেছে। তাই এখন বিরোধী ভোট ভাগাভাগি রোখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিপ্ৰা মথা-কংগ্রেস- সিপিএম।জিতেন চৌধুরীর অভিযোগ, বিজেপি দলের রাজ্য নেতৃত্ব যতই বলুক না কেন, তাদের বত্রিশজন বিধায়ক নিয়ে ডবল ইঞ্জিনের সরকার রয়েছে।তবে রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতি হলো বিজেপির অস্তিত্ব সংক্ষিপ্ত। যে কোনও দিন রাজ্যে বিজেপির পতন হবে। তার সূচনা হয়ে গিয়েছে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া বিজেপি সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী, নেতা রাজ্যবাপী দুর্নীতি করে যাচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যবাসীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে বিজেপি। উপজাতি জনসমাজ এবং সংখ্যালঘু মানুষের সর্বক্ষেত্রে ক্ষতি করা হচ্ছে। বিজেপির শাসনে বেকার যুবক যুবতীর চাকরি বন্ধ। কৃষক, শ্রমিক, জুমিয়া, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-কর্মচারী সহ সাধারণ মানুষের ন্যূনতম আয় উপার্জন বন্ধ । সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত আক্রান্ত হচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা রাজ্যে নেই। গণতন্ত্র, আইনের শাসনের অস্তিত্ব নেই। রাজ্যে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সহ সকল স্তরের মা-বোনদের নিরাপত্তা নেই রাজ্যে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ পরিব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। পানীয় জল সঙ্কটে নাজেহাল রাজ্যবাসী। পুলিশ প্রশাসনের অস্তিত্ব আক্রান্ত। রাজ্যে উন্নয়ন বন্ধ। উল্টো দুর্নীতি চলছে। কাজ ও খাদ্য নেই। রেগা ও টুয়েপের কাজ বন্ধ। পাহাড়ে হাহাকার চলছে। তাই বিজেপিকে পরাস্ত করলেই দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে বাঁচানো যাবে। বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর প্রার্থী মিজান হোসেন এবং কৌশিক চন্দকে বিপুলভাবে জয়ী করার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আহ্বান জানান। এমনকী কংগ্রেস, তিপ্ৰা মথা নেতৃত্ব, কর্মী-সমর্থকদের সিপিএম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে শামিলের আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে রাজ্যের অন্যান্য বিরোধী দলগুলিকেও শামিলের আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রয়াত সিপিএম বিধায়ক সামসুল হকের পুত্র মিজান হোসেন।