ধান উৎপাদনে নয়া প্রযুক্তি শুরু হচ্ছে ফাইন রাইস চাষ

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ করে ধান উৎপাদনে এবার আরও একটি নতুন পদ্ধতি এবং নতুন উন্নতমানের বীজ ব্যবহার করতে যাচ্ছে কৃষি দপ্তর। যার নাম হচ্ছে ‘ফাইন রাইস’। রাজ্যের কৃষি গবেষণাগারেই এই উন্নতমানের ধান বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। এই বীজের সফল পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। ফলাফল এক কথায় অভূতপূর্ব। ফলে কৃষিবিজ্ঞানীদের পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্য কৃষি দপ্তর ও
বছর থেকে ‘ফাইন রাইস’ চাষ শুরু করতে যাচ্ছে। রাজ্য কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, বীজ উৎপাদনে রাজ্য এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আর কোনও বীজ বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় না।এই বিষয়ে রাজ্য কৃষি দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী রতনলাল নাথকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি আরও তথ্য দিয়ে বলেন, আমাদের রাজ্যে মোট কৃষিজমির পরিমাণ হচ্ছে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার হেক্টর। ইচ্ছে থাকলেও আর কৃষিজমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না। কেননা, এর বাইরে আর কোনও কৃষি উপযুক্ত জমি নেই। ফলে এই জমির উপর ভিত্তি করেই আমাদের ফসল উৎপাদন বাড়াতে হবে। কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়, তার জন্য নিরন্তর প্রয়াস ও গবেষণা চলছে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই দপ্তর এই বছর থেকে নতুন উৎপাদিত বীজ ‘ফাইন রাইস’ চাষ শুরু করতে যাচ্ছে।মন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের যে আয়তন তার মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ হচ্ছে কৃষিজমি। এই জমির উপরই নির্ভর করে ধান উৎপাদনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যার সাফল্যও পাওয়া যাচ্ছে।


বর্তমানে ত্রিপুরায় কৃষি জমির পরিমাণ কম হওয়া সত্ত্বেও প্রতি হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনে দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে আছে। রাজ্যে বর্তমানে প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০৪৪ কেজি যান উৎপাদন হয়। জাতীয় উৎপাদনের চাইতে অনেকটা এগিয়ে আছে ত্রিপুরা। জাতীয় গড় উৎপাদন প্রতি হেক্টরে ২৭১৩ কেজি। প্রতি হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনে দেশে প্রথম স্থানে রয়েছে পাঞ্জাব। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৪৩৬৬ কেজি। দ্বিতীয় তামিলনাড়ু, প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৩৫৭৪ কেজি। তৃতীয় অন্ধ্রপ্রদেশ, প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৩৩৯৫ কেজি। চতুর্থ স্থানে তেলেঙ্গানা, প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ৩৩২৭ কেজি। কৃষিজমির পরিমাণ বেশি থাকা সত্ত্বেও প্রতি হেক্টরে ধান উৎপাদনে ত্রিপুরা থেকে পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (২৯৮৪ কেজি), আসাম (২২২৪ কেজি), উত্তরপ্রদেশ (২৭৫৯ কেজি), ওড়িশা (২১৭৩ কেজি), ছত্তিশগড় (১৮৮৯ কেজি), বিহার (২২৭৬ কেজি)।মন্ত্রী জানান, শুধু নতুন পদ্ধতি গ্রহণই নয়, অর্গানিক ফার্মিংয়ের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। ২০১৫-১৬ সালে রাজ্যে মাত্র ২০০০ হেক্টর জমিতে অর্গানিক ফার্মিং করা হতো। গত পাঁচ বছরে বৃদ্ধি করে ২১ হাজার হেক্টর করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কৃষিতে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ফসল বিমা যোজনায়। যাতে কৃষকরা কোনও অবস্থাতেই ক্ষতিএত না হয়। পাঁচ বছর পূর্বে মাত্র ২৩ হাজার কৃষক ফসল বিমা যোজনায় অন্তর্ভুক্ত ছিলো। গত তিন বছরে সেটা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১০ লক্ষ ৮ হাজার ৬৮ জন। এর পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে, আগে কৃষকের প্রতি কানিতে বিমার প্রিমিয়াম দিতে হতো ২২০ টাকা। এখন দিতে হয় মাত্র ১০ টাকা। বাকি ২১০ টাকা রাজ্য সরকার বহন করে।এখন পর্যন্ত বিমা যোজনায় ৬ কোটি ৯ লক্ষ টাকা বেনিফিট দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, প্রাইমারি সেক্টরই হচ্ছে উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। তাই গ্রাম গরিব কৃষক – এই তিন সেক্টরে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।

Dainik Digital

Recent Posts

গয়নার ল্যাবে তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম রুবি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলায় চুনি, ইংরেজিতে রুবি।চুনির রং কতটা টকটকে লাল, তার উপর এই মানিকের দাম…

14 hours ago

মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে পুলিশ প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদারজুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো।…

14 hours ago

কাজের বাজারে মন্দা!!

কেন্দ্রে ১০০ দিন পূর্ণ করল তৃতীয় মোদি সরকার।যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে মোদি সরকার আখ্যা…

15 hours ago

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

2 days ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

2 days ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

3 days ago