ধান ক্রয় ও কৃষির মেশিন প্রদানে শীর্ষে দক্ষিণ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-দেশের কৃষকদের আয়কে দ্বিগুণ করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেওয়া উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করতে নানা কর্মসূচি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ত্রিপুরা সরকার। রাজ্যের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করে তুলার পাশাপাশি কৃষকদের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে কৃষি দপ্তর ও খাদ্য দপ্তর।কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে উৎপাদিত কৃষিপণ্যকে সুস্বাস্থ্যসম্পন্ন পুষ্টি গুণমানের করে তোলতে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় অর্গানিক চাষের জমির পরিমাণ বছর বছর বাড়িয়ে ২৫ হাজার ৬৬১ হেক্টর করা হয়েছে।কৃষকদের ঢালাও হারে বিনামূল্যে অর্গানিক সার,অর্গানিক কীটনাশক, অর্গানিক মাইক্রো নিউট্রন্স,ফার্মি কম্পোস্ট সার, নিম খৈল, প্রম(ফসফেট রিচ অর্গানিক মেনিওর),অর্গানিক মেনিওর,বায়ো পেস্টিসাইডস, বায়ো ইনসেক্টিসাইডস, বায়ো ফার্টিলাইজার প্রদান করছে কৃষি দপ্তর।পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ইউরিয়া,এসএসপি, এমওপি সহ কৃষি কীটনাশক ওষুধও।যেহেতু কৃষিকাজের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা কৃষি শ্রমিক।জমিতে কাজের জন্য প্রয়োজনমতো ও সময়মতো কৃষি শ্রমিক পাওয়া যায় না তাই কৃষি শ্রমিকের সমস্যা সমাধানে সরকার কৃষকদের ঢালাও হারে কৃষিকাজে ব্যবহৃত আধুনিক কৃষির মেশিন প্রদান করছে।কিছু কৃষির মেশিন দেওয়া হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।কিছু কৃষির মেশিন দেওয়া হচ্ছে ভর্তুকি মূল্যে। কৃষকদের ফুল ও সবজির চারা চাষের জন্য বিনামূল্যে কৃষি দপ্তর থেকে শেডঘর ও সেচের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হচ্ছে।পাশাপাশি কৃষকদের বিনামূল্যে বিভিন্ন শাকসবজির বীজ,ধানের
বীজ,ফুলের বীজ,ডালের বীজও প্রদান করছে কৃষি ও উদ্যান দপ্তর।পাশাপাশি ত্রিপুরা সরকারের খাদ্য দপ্তর কৃষকদের উৎপাদিত ধান সহায়ক মূল্যে(প্রতি কেজি ২১ টাকা ৮৩ পয়সা)ক্রয় করছে। এতে ধান চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। একদিকে কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ, ওষুধ প্রদান হচ্ছে,অপরদিকে উৎপাদিত ধান সরকারীভাবে ক্রয় করায় লাভবান হওয়ায় চাষবাসে ফের আগ্রহী হচ্ছেন রাজ্যের কৃষকরা।সরকারী খতিয়ানে দেখা গেছে, চলতি বছরের রবি মরশুমে খাদ্য দপ্তর কৃষকদের কাছ থেকে দক্ষিণ জেলায় সহায়কমূল্যে ধান ক্রয় করেছে আট জেলার জেলাভিত্তিক হিসাবে সর্বাধিক।দক্ষিণ জেলায় ৩০৪০ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ৭২৮০.৪৭৬ মেট্রিক টন। গোমতী জেলায় ১৫১৫ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ২৭৪৩.৭৭৮ মেট্রিক টন।সিপাহিজলা জেলায় ৮১৫ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয় ১৪৩৩.০৭৯ মেট্রিক টন। পশ্চিম জেলায় ৭৪২ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ১০৪৮.৯১৪ মেট্রিক টন।খোয়াই জেলায় ৫৯৯ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ৭৭৫.১৫৪ মেট্রিক টন।উত্তর জেলায় ৮৫৫ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ১৬৩১.৪৬৯ মেট্রিক টন।ঊনকোটি জেলায় ২৮৭ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ৫৪৬.৭৪ মেট্রিক টন ও ধলাই জেলায় ৪৪৩ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে ৭৭৪.৮৪৯ মেট্রিক টন। রবি মরশুমে ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে
দক্ষিণ জেলার পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ত্রিপুরা। আট জেলা মিলিয়ে ৮২৯৬ জন কৃষকের কাছ থেকে মোট ধান ক্রয় করা হয়েছে ১৬২৭০.৪৫৯ মেট্রিক টন। সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ে খাদ্য দপ্তরের মোট ব্যয় হয়েছে ৩৫.৫২ কোটি টাকা। অপরদিকে এসএমএএম স্কিমের অধীনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২২ জানুয়ারী পর্যন্ত রাজ্যের আট জেলায় মোট ৬৯৫৭টি কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কৃষির মেশিন কৃষকদের প্রদান করেছে কৃষি দপ্তর।কৃষি দপ্তরের হিসাব মতো এসএমএএম স্কিমে পাওয়ারটিলার,পাওয়ার উইডার, ব্রুশ কাটার, প্যাডি থ্রেসার, পাম্প সেট, পাওয়ার স্প্রেয়ার, হটিটুল, প্যাডি রিপার মিলিয়ে দক্ষিণ জেলায় প্রদান করা হয়েছে ১৯৪০টি, সিপাহিজলা জেলায় ১৪৭০টি, গোমতী জেলায় ৯৭৫টি, পশ্চিম জেলায় ৬৫১টি, খোয়াই জেলায় ৮২৭টি, ধলাই জেলায় ৩৩০টি, ঊনকোটি জেলায় ৫১৩টি ও উত্তর জেলায় ২৫১টি।তাছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন স্কিমেও কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের কৃষির মেশিন প্রদান করেছে কৃষি দপ্তর।এদিকে কৃষকদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, সরকার যেন তাদের আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করে।পাশাপাশি কৃষির মেশিন সারাইয়ের উপরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। এতে কৃষকরা সার্বিকভাবে উপকৃত হবেন।