নজির গড়ল দেশ!

 নজির গড়ল দেশ!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ভারতের জন্য এবং অবশ্যই একশ ত্রিশ কোটি ভারতবাসীর জন্য দুই সেপ্টেম্বর একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে । এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের নৌ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রথম দেশীয় বিমানবাহী অত্যাধুনিক রণতরী ‘ আইএনএস বিক্রান্ত ‘ । প্রধানমন্ত্রী মোদি শুক্রবার এই ‘ মেক ইন – ইণ্ডিয়া ’ অত্যাধুনিক বিমানবাহী রণতরীর শুভ সূচনা করেন । তথ্য মোতাবেক এটি ভারতের ইতিহাসে নির্মিত সবচেয়ে বড় এবং আধুনিক যুদ্ধজাহাজ । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন কেরলের কোচি থেকে ভারতের তৈরি বৃহত্তম স্বদেশী বিমানবাহী যুদ্ধহাজাজ ‘ আইএনএস বিক্রান্ত ’ – কে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে ।

IMG-20220902-WA0021

উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে , ভারতের আগে মাত্র পাঁচটি দেশ ৪০ হাজার টনের বেশি ওজনের বিমানবাহী যুদ্ধহাজার তৈরি করেছে । ভারতের তৈরি যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্তের ওজন ৪৫ হাজার টন । অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজের সূচনা লগ্নে প্রধানমন্ত্রী মোদি এক টুইট বার্তায় বলেছেন , ‘ দেশের প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভরতার পথে আরও এক কদম । ২ সেপ্টেম্বর ভারতের জন্য ঐতিহাসিক দিন । প্রথম দেশীয় ডিজাইন ও প্রযুক্তিতে তৈরি বিমানবাহী রণতরী ‘ আইএনএস বিক্রান্ত -এর শুভ সূচনা হবে । ‘ কেরলের কোচিন শিপইয়ার্ডে নির্মিত এই অত্যাধুনিক ফাইটার জেট বহনকারী যুদ্ধজাহাজটি নির্মাণে খরচ হয়েছে কুড়ি হাজার কোটি টাকা ।

এই জাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে । সেই সাথে আরও শক্তিশালী হয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা ও পরাক্রম জানান প্রধানমন্ত্রী । তথ্য অনুযায়ী , এই যুদ্ধজাহাজ তৈরিতে দীর্ঘ তের বছর সময় লেগেছে । ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে আইএনএস বিক্রান্তের নির্মাণ কাজ শুরু হয় । ২০১৩ সালের আগষ্ট মাসে প্রথমবার বিক্রান্তকে জলে নামানো হয়েছিল । এই এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের বেসিন ট্রায়াল শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে । এরপর চলতি বছরের জুলাই মাসে এটির ট্রায়াল শেষ হয় । ট্রায়াল শেষ হওয়ার পরই নির্মাণ সংস্থা কোচিন শিপইয়ার্ড আইএনএস বিক্রান্তকে নৌবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করে । দুই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী মোদি এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন ।

জানা গেছে , এই অত্যাধুনিক এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের বিভিন্ন অংশ দেশের ১৮ টি রাজ্যে তৈরি করা হয়েছে । সব মিলিয়ে ৭৬ শতাংশ দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে । এটি তৈরিতে ২১ হাজার টনেরও বেশি বিশেষ গ্রেডের ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে । ২,৬০০ কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক তার এবং ১৫০ কিলোমিটারের বেশি পাইপলাইন ব্যবহার করা হয়েছে । এটির উচ্চতা ৬১.৬ মিটার অর্থাৎ ১৫ তলা ভবনের সমান । দৈর্ঘ্য ২৬২.৫ মিটার । এই জাহাজে রয়েছে ২,৩০০ টি বগি । এই জাহাজটি এক সাথে ৩০ টি যুদ্ধবিমান চালনা করতে সক্ষম । জাহাজে মিগ -২৯ কে ফাইটার জেট এবং কা -৩১ হেলিকপ্টারের একটি বহর মোতায়েন থাকবে । ভবিষ্যতে রাফাল ফাইটার জেটও মোতায়েন করা হবে । এর সর্বোচ্চ গতি ২৮ নট , অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ৫২ কিলোমিটার । স্বাভাবিকভাবেই ভারতের জন্য এদিনটি ঐতিহাসিক । কেননা , এদিনেই দেশের নৌবাহিনী ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার ছাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে । এখন থেকে ভারতের নৌবাহিনীর জাহাজে থাকবে নয়া পতাকা । প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে নৌবাহিনীর হাতে অত্যাধুনিক এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার ‘ আইএনএস বিক্রান্ত ’ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর , জলেও ভারতের সামরিক শক্তি দ্বিগুণ হয়েছে । শুধু তাই নয় , ভারত মহাসাগরে চিনের দাদাগিরি এখন অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অভিমত ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.