নতুন অধ্যায়ের সূচনা!!

 নতুন অধ্যায়ের সূচনা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং দিনটি ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়ে গেল। সূচনা হলো এক নয়া অধ্যায়ের।মঙ্গলবার গণেশ চতুর্থীর দিন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকলো গোটা দেশ।তেমনি সাক্ষী থাকলো গোটা বিশ্ব। প্রায় দুশো বছরের ইংরেজশাসনে পরাধীনতার গ্লানি থেকে ১৯৪৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল ভারত।স্বাধীনতার পর থেকে সংসদ ভবন বহু রাজনৈতিক উত্থান-পতনের প্রত্যক্ষদর্শী।যে সংসদ ভবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের প্রতীক ও পীঠস্থান, সেই পীঠস্থান ছেড়ে নতুন ভবনে চৌকাঠ পেরোল ভারত।মঙ্গলবার নয়া ভারত প্রবেশ করলো গণতন্ত্রের নয়া পীঠস্থানে।যাওয়ার আগে পুরনো সংসদ ভবনের নতুন নামও প্রস্তাব করে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শেষবারের মতো পুরনো সংসদ ভবনের ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল হলে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি পুরনো সংসদ ভবনের নাম ‘সংবিধান সদন’ প্রস্তাব করেন।কেননা, বহু ইতিহাসের সাক্ষী পুরনো সংসদ ভবনের গড়িমা যাতে কোনও অবস্থাতেই ক্ষু না হয়। কেউ যাতে না বলে পুরনো সংসদ ভবন।তাই আজ থেকে এর নামকরণ হোক ‘সংবিধান সদন’।এমনই প্রস্তাব করেন তিনি।এদিন সেন্ট্রাল হলে দেশের সমস্ত সাংসদের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে আবেগপ্রবণ প্রধানমন্ত্রী মোদি আরও বলেছেন, আজ গোটা বিশ্ব ভারতের স্বনির্ভরতা নিয়ে আলোচনা করছে।ভারত আজ ‘বিশ্বমিত্র’ হিসাবে কাজ করছে।গোটা বিশ্ব আজ ভারতকে মিত্র হিসাবে দেখছে।এটাই নতুন ভারত। এই জায়গায় পৌঁছতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। গোটা বিশ্ব আজ ভারতের সবকা সাথ সবকা বিকাশের মন্ত্র নিয়ে চলতে চাইছে।প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ছোট ক্যানভাসে যেমন বড় ছবি আঁকা যায় না,তেমনি আমরা যদি আমাদের চিন্তার ক্যানভাসকে বড় করতে না পারি, তবে আমরা একটি মহান ভারতের ছবি আঁকতে পারবো না। ১৯৫২ সাল থেকে এই সেন্ট্রাল হলেই বিশ্বের ৪১ জন রাষ্ট্রপ্রধান সাংসদদের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন। ব্রিটিশ যুগের পুরনো সংসদ ভবন থেকে মঙ্গলবার নতুন বাড়িতে শুরু হতে যাচ্ছে নয়া পথচলা।নতুন ভবনে যাওয়া কেবলমাত্র একটা অনুষ্ঠান নয়। আজ থেকে এক নতুন ভবিষ্যতের সূচনা হতে যাচ্ছে।
ভাষণে মোদি বলেন, এই সংসদ ভবনেই প্রায় চার হাজার আইন পাস হয়েছে।

এখানেই রচিত হয়েছে ভারতের মহান সংবিধান।বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই ভবন। বহু মহাপুরুষ পণ্ডিত এই ভবনের গৌরব যেমন বাড়িয়েছেন, তেমনি সন্ত্রাসবাদের আক্রমণেরও শিকার হয়েছে এই ভবন। – এই ভবনেই মুসলিম মা-বোনেরা ন্যায় বিচার পেয়েছেন।বিলোপ হয়েছে ৩৭০ ধারা।এমন বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই ভবন।বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের পীঠস্থান এই ভবন। এর মর্যাদা যেন কখনই ক্ষুণ্ণ না হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ নতুন সংসদ ভবনে আমাদের নতুন ভবিষ্যতের সূচনা হতে চলেছে।উন্নত ভারত নির্মাণের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আজ আমরা নতুন ভবনে যাচ্ছি।একশ চল্লিশ কোটি ভারতবাসীর প্রত্যাশা পূরণে আমরা সকলে একসাথে কাজ করবো। অমৃতকালের ২৫ বছরে ভারতকে আরও বড় ক্যানভাসে কাজ করতে হবে। আমাদের ছোট ছোট সমস্যায় আটকে পড়ার সময় শেষ। আমাদের আত্মনির্ভর ভারত হওয়ায় লক্ষ্য পূরণ করতে হবে।এটা সময়ের প্রয়োজন। এটা প্রত্যেকের কর্তব্য।ভারত আজ নতুন চেতনায় জেগে উঠেছে। ভারত এক নতুন শক্তিতে ভরপুর- হয়ে উঠেছে। আর এই শক্তি হলো আত্মবিশ্বাস।এই চেতনা ও শক্তি কোটি কোটি মানুষের স্বপ্নকে সংকল্পে পরিণত করতে পারে এবং সেই সংকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে।আমরা শুধুমাত্র রাজনৈতিক সুবিধার কথা চিন্তা করে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখতে পারি না। জ্ঞান এবং উদ্ভাবনের দিকে আমাদের মনোনিবেশ করতে হবে।চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পর আমাদের তরুণ প্রজন্ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে দারুণ ভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছে।এই সুযোগ আমাদের হাতছাড়া করলে চলবে না।২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর নয়া সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। চলতি বছরের ২৮মে উদ্বোধন করা হয় নতুন সংসদ ভবনের। প্রায় সাড়ে ৬৪ হাজার স্কোয়ার মিটার জায়গার উপর আধুনিক প্রযুক্তি ও ভারতীয় ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতিক পরম্পরার সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের নয়া পীঠস্থান। আর এই পীঠস্থানেই মঙ্গলবার সূচনা হলো নয়া ভারতের পথচলা। সূচনা হল নতুন ভবিষ্যতের। সূচনা হলো ‘বিশ্বমিত্র’ ভারতের নয়া অধ্যায়ের।যে পথচলায় নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।নজর থাকবে একশ চল্লিশ কোটি ভারতবাসীর।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.