Categories: বিদেশ

নতুন দুই মথের নামকরণ করলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী দম্পতি!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলাদেশের চট্টগ্রামের প্রাণী বিজ্ঞানী দম্পতি মহম্মদ জাহির রায়দান ও সায়েমা জাহান গবেষণাগারে দীর্ঘদিন ধরে মথের উপর গবেষণা চালিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির নতুন দুটি মথের জন্ম দিয়েছেন। নতুন মথের তারা নামকরণ করেছেন প্যারাক্সিনোয়াক্রিয়া স্পিনোসা।এই নামকরণের সূত্রে বিশ্বের বিজ্ঞানীমহলে পরিচিত হবে নতুন দুই মথ।
প্যারাক্সিনো’একটি গ্রিক শব্দ,যার অর্থ অদ্ভুত বা অস্বাভাবিক,এবং ‘আক্রিয়া’ শব্দের অর্থ একটি মথের প্রজাতি।আক্রিয়া প্রজাতির মথগুলির সামনের ডানায় একটি বাঁক থাকে, যা ‘এক্সকাভেশন’ বলে পরিচিত। কিন্তু জাহির ও সায়েমার আবিষ্কৃত মথের ক্ষেত্রে এই এক্সকাভেশনটি মথের পিছনের ডানায় অবস্থিত। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে তারা এটিকে অদ্ভুত আক্রিয়া বা প্যারাক্সিনোয়াক্রিয়া নাম দিয়েছেন।আর প্রজাতির নাম ‘স্পিনোসা’ শব্দটি ‘স্পাইন'(তথা কাঁটা) থেকে এসেছে।এই মথের পুরুষের যৌনাঙ্গে ছয় থেকে সাতটি লম্বা কাঁটা রয়েছে,যা মথের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তরুণ প্রাণী বিজ্ঞানী জাহির বলেন, ‘প্রকৃতির প্রতিটি জীবের জন্য একটি বৈজ্ঞানিক নামের প্রয়োজন।সেটা গাছ হতে পারে কিংবা এককোষী জীবাণু অথবা প্রাণী। বিজ্ঞানীদের জন্য বৈজ্ঞানিক নাম একটি আন্তর্জাতিক
ভাষার মতো কাজ করে; পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে তারা এই ভাষা বুঝতে পারেন।’ তিনি বলেন,’যেমন মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হল হোমো সেপিয়েন্স।এখানে হোমো অর্থে গণ প্রজাতি, অর্থাৎ মানব এবং সেপিয়েন্স শব্দের অর্থ বুদ্ধিমান, যা আমাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে বর্ণনা করে।’ মথ ও প্রজাপতি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জীববৈচিত্র্য। এই কারণেই এই দম্পতি ২০১৮ সালে মথ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। মথের মধ্যে অনেক বৈপরীত্য
রয়েছে।কিছু মথ রেশম তৈরি করে, আবার কিছু কাপড় নষ্ট করে।কিছু মথ ক্ষতিকারক পোকা, যা ফসলের জন্য ক্ষতিকর।আবার অন্যদিকে আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে মথের প্রজাতি মানুষের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জাহির বলেন,’এখন পর্যন্ত বিশ্বে দেড় লাখের বেশি মথের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে,যা ১২৮টি পরিবারে শ্রেণিবদ্ধ।এর মধ্যে একটি পরিবার হলো প্যালিওপোডিডি, যার অন্তর্ভুক্ত ১০-১২টি মথ। প্যারাক্সিনোয়াক্রিয়া স্পিনোসা এই পরিবারেরই সদস্য।’গত এপ্রিলে এই দম্পতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মথের লার্ভা সংগ্রহ করেন।তারা তারপর লার্ভাগুলিকে নিজেদের ল্যাবে তারা পালন করতে শুরু করেন। জাহির ও সায়েমা দুজনেই ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিজ্ঞানে স্নাতক হন। পরে জাহির আমেরিকার ফ্লোরিডা মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টরিতে এক বছরের গবেষণা কর্মসূচিতে যোগ দেন।সেখানে তিনি মথের রেশমের বিবর্তন এবং ক্ষতিকারক মথের আণবিক গঠন নিয়ে কাজ করছেন। অন্য দিকে, সায়েমা – বর্তমানে সুন্দরবনের ক্রো প্রজাতির – প্রজাপতি নিয়ে একটি যৌথ গবেষণায় – কাজ করছেন।এই প্রজাপতি শুধু বাংলাদেশের সুন্দরবনেই পাওয়া -যায় এবং এটি বিলুপ্তির পথে।তিনি – এর আণবিক গঠন, পরিবেশবিজ্ঞান – এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করছেন।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

মৃত্যুদণ্ড হতে পারে হাসিনার,রবিতেই বাংলাদেশ ট্রাইব্যুনালে শুনানি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রবিবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগের…

20 hours ago

গুয়াহাটিতে ভূমি ধসে দুই শিশু সহ ৫ জনের মৃত্যু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- গুয়াহাটি মহানগরের বন্দার অঞ্চলে একটি বিধ্বংসী ভূমিধ্বসে দু’জন শিশু এবং একজন মহিলার…

20 hours ago

কেরলে ভারী বৃষ্টিতে মৃত ৩১!

অনলাইন প্রতিনিধি :- বর্ষার শুরুতেই কেরলে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ৷ এ বছর নির্ধারিত সময়ের প্রায়…

1 day ago

পেরুর মমিরা খুন হয়েছিল; গবেষণায় এল চাঞ্চল্যকর তথ্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ২০১৭ সালে আবিষ্কৃত পেরুর মমিগুলি নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। বারবার প্রশ্ন উঠেছে,…

2 days ago

বৃষ্টি কমলেও ফুঁসছে নদী ৪ শিবিরে ২০৭ শরণার্থী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- গত দু'দিনের টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। ছন্দপতন ঘটে…

2 days ago

জনজাতি কল্যাণে ঘুঘুর বাসা! পিএম আদি আদর্শ গ্রাম যোজনা শুরুই হয়নি, খরচ ৫.৬১ কোটি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে রাজ্যের উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের বিরুদ্ধে। এবার প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago