ভৌগোলিক কারণেই দুই দেশের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া গড়ে উঠলেও, প্রয়োজন ও সম্পর্ক আমাদের আলাদা করতে পারেনি। তাই দেশভাগের এতগুলো বছর পরও আজ যখন কোনও চাহিদা, কোনও অতৃপ্তি দরজায় এসে কড়া নাড়ে, তখন দ্বিখণ্ডিত ইতিহাসের কোনও সীমানায় এই দুই পারের কোটি কোটি মানুষের যন্ত্রণাকে আটকে রাখতে পারেনি। হয়তো ভারত – বাংলাদেশের বিভাজন আমাদের বিভিন্ন সময়ে যন্ত্রণার চোরাস্রোতে বিদ্ধ করেছে। রক্তক্ষরণের দগদগে ক্ষত শুকিয়ে ওঠার আগেই তা থেকে আবারও লক্ষ হৃদয় জুড়ে ফিনকি হয়ে রক্ত ঝরেছে। কখনও যন্ত্রণার ফল্গুধারার মতোই এই বিভাজন আমাদের হৃদয়ের গভীরে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। কিন্তু আমরা ভারত কিংবা বাংলাদেশ কোনও এলাকার বাসিন্দারাই কখনওই দেশভাগের যন্ত্রণাকে এতগুলো বছর পরেও স্মৃতি থেকে মুছে যেতে দিই নি। উভয় দেশের মধ্যেকার প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত আন্তর্জাতিক সীমারেখার মধ্যেও প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটারের কিছু বেশি এলাকা এখন কাঁটাতারের বেড়ার দ্বারা বিভাজনরেখা তৈরি করেছে। এই যন্ত্রণার মধ্যেও স্বাধীন-সার্বভৌম দুই দেশ একে অপরের সুখে দুঃখে, বিলাসে – বৈভবে, টানাপোড়েনে – অতৃপ্তিতে কেউই মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। সেই ইতিহাস আর দীর্ঘ ঐতিহ্যের সাক্ষ্য রেখেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শনিবার উদ্বোধন হলো ডিজেল পাইপলাইনের। ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইনে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি ডিজেল তথা জ্বালানি সরবরাহের সুযোগ গড়ে উঠেছে এই প্রকল্পে। আসামের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ডিজেল পাইপলাইনের মাধ্যমে সোজা বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পাইপলাইনটিতে বছরে সর্বোচ্চ দশ লাখ টন জ্বালানি আমদানি করতে পারবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পাইপলাইনের উদ্বোধনের পর ২০২০ থেকে শুরু হয়েছিল কাজ। আনুষ্ঠানিকভাবে শনিবার এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং হাসিনা। এতদিন বাংলাদেশ ভারত থেকে রেল ওয়াগনের করে তেল সংগ্রহ করতো। এতে পরিবহণ খরচ যেত বেড়ে।এবার পাইপলাইনের স্মার্ট পদ্ধতিতে পরিবহণ খরচ, ঘাটতি, সবকিছুই কমবে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক আদর্শ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই ডিজেল পাইপলাইনের সূচনা বড়কিছু ঘটনা নয়। তবে তা নিঃসন্দেহে দিক নির্দেশকারী। মনে রাখতে হবে, এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় রাখার জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ গ্রিড, শক্তি- সঞ্চয় বেশকিছু ক্ষেত্রেই ভারত বাংলাদেশের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে কোভিড সংক্রমণের সময় রেলপথে অক্সিজেন সিলিণ্ডার এবং অন্যান্য জীবনদায়ী সামগ্রী ভারত থেকে সরবরাহ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, জ্বালানিক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। ভারত এই মুহূর্তে ১১০০ মেগাওয়াটের বেশি নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। নতুন ডিজেল পাইপলাইনের ফলে দুই দেশের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণও কমবে। জ্বালানির পরিবহণ খরচ এবং পরিবহণ সময় ও ঘাটতির বিষয়টি তো রয়েছেই। আছে নিরাপত্তার দিকটিও। মোদ্দা কথা, ভারত ও বাংলাদেশের মতো সুপ্রতিবেশী বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় বাস্তবিক অর্থেই দুর্লভ। কারণ শান্তি, সুস্থিতি আর সৌভ্রাতৃত্বের চেয়ে দামি কিছু আর হয় না। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কটা এই বিশ্বাস ও ভরসার উপরও দৃঢ় হয়ে আছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার প্রেক্ষিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলে আজ যে অগ্রগতি সম্ভবপর হয়েছে এর নিশ্চিত কৃতিত্ব বাংলাদেশের। আরেকটা কথা হল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘ ৫০ বছরের সোনালী সম্পর্কের অধ্যায়। কিন্তু এ কথাও সমানভাবে প্রযোজ্য যে, সম্পর্ক থাকলে টানাপোড়েনও থাকবে। আশার কথা হল দুই দেশের নেতৃত্ব এই টানাপোড়েনকে কখনওই লাগামছাড়া হতে দেয়নি। আরও গুরুত্বপূর্ণ কথা হল, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে কেউ এমন কিছু করেনি যা পারস্পরিক স্বার্থের প্রতিকূল এবং মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার মতো। সেটা হয়নি বলেই ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনও কাঁটাতারের বেড়ায় আবদ্ধ নেই। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক টিকে আছে আস্থা, বিশ্বাস, ঐতিহ্য আর ভালবাসায়। এটাই গোটা বিশ্বের সামনে বিরলতম ঘটনা।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…